• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

শ্রীপুরে হঠাৎ অর্ধশতাধিক পাখির মৃত্যু

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

গাজীপুরের শ্রীপুরে হঠাৎ অর্ধশতাধিক পাখির মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া পাখির মধ্যে বেশির ভাগই ঘুঘু পাখি। এছাড়া শালিক ও খেচখেঁচিয়াসহ (স্থানীয় নাম) বিভিন্ন জাতের পাখি রয়েছে। এভাবে পাখিগুলো মরে যাওয়া দেখে স্থানীয়দের মনে আঘাত লাগছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সিটপাড়া গ্রামে পাখি মারা যাওয়ার এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুন-অর রশিদ খন্দকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়রা জানান, এতগুলো পাখি একসঙ্গে মারা যাওয়ার ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (ফেসবুকে) ভাইরাল হওয়ার পর সকাল থেকে সিটপাড়াসহ আশপাশের এলাকা থেকে নারী-পুরুষ ও শিশুরাসহ বিভিন্ন বয়সের লোকজন পাখি দেখতে ঐ গ্রামে ভিড় জমিয়েছে। গত কয়েকদিন এলাকায় কোনো প্রকার কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়নি। তাহলে পাখিগুলো কেনো এবং কী কারণে মারা গেছে এ প্রশ্ন তাদের। এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কেউ কোনো কিছু বলতে পারেনি। বরমী ইউনিয়নের সিটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আসাদ মিয়া বলেন, আমি সকালে কর্মস্থলে (কারখানায়) চলে যাই। দুই ঘণ্টা পর চা বিরতির সময় কারখানা থেকে বাইরে বের হলে দেখতে পাই কয়েকজন নারী ও শিশু মারা যাওয়া পাখিগুলো এনে এক জায়গায় স্তুপ করে রাখছেন। পরে আমি মারা যাওয়া পাখিগুলোর ছবি ভিডিও করে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে (ফেসবুকে) পোস্ট করেছি। সিটপাড়া গ্রামের শিশু তাওহীদ বলে, আমি সকাল ৯টার দিকে এখান দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি ওপর থেকে একটা পাখি আমার সামনে পড়লো। সঙ্গে সঙ্গে গজারি গাছ থেকে আরো কয়েকটা পাখি নিচে পড়েছে। পাখিগুলো কুড়িয়ে এনে একটা জায়গায় রাখছি। কয়েকটা পাখির মুখ দিয়ে পানি ঝড়তে দেখেছি। পথচারী সামাদ মিয়া বলেন, ‘পাখিগুলো কিটনাশক খেয়ে মরেছে কি-না তা জানতে হবে। হঠাৎ করে পাখিগুলো মইরা যাওয়ার কথা নয়। পাখিগুলো মরে যাওয়া দেখে কষ্ট লাগছে।’ গাজীপুর পরিবেশ আন্দোলন সভাপতি ফেডরিক মুকুল বিশ্বাস বলেন, পাখি মারা যাওয়া বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবো। এটা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে জানাতে হবে। নদী পরিব্রাজক দল শ্রীপুর উপজেলা শাখার সভাপতি সাঈদ চৌধুরী জানান, এরকম সিমটম সাধারণত বিষক্রিয়ায় হয়ে থাকে। যেমন কোনো জমিতে ঘাস মাড়ার জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার করলে অথবা আশপাশের কোনো জমানো পানিতে কীটনাশক ব্যবহার করে থাকলে সেসব খেয়ে পাখিগুলো মারা যেতে পারে। তাছাড়া আশপাশে কেনো স্থানে যদি কোনো কারখানা থেকে থাকে ঐ কারখানা তাদের নির্গত পানির সঙ্গে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যামিকেল ব্যবহার করে থাকলে ঐ পানি পান করে পাখিগুলো মারা যেতে পারে। বরমী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য স্থানীয় বাসিন্দা হারুন-অর রশিদ খন্দকার জানান, সিটপাড়া গ্রামে গার্ডেনিয়া ওয়্যারস লিমিটেড (পোশাক তৈরি কারখানা) রয়েছে। ঐ কারখানার পাশেই পাখিগুলো মারা গেছে। কেনো এতগুলো পাখি মারা গেছে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি। ঢাকা বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, কারখানার কোনো প্রাভাবে পাখি মরছে কি-না তা দেখতে হবে। আমি খোঁজ নিচ্ছি।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর