• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

২০০ বই নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গেলেন নববধূ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

স্বপ্ন দেখছেন শ্বশুরবাড়ির একটি কক্ষে ‘বউ-শাশুড়ির বই ঘর’নামে একটি লাইব্রেরি গড়বেন। ওই লাইব্রেরিতে এলাকার বউ-শাশুড়িসহ স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা এসে বই পড়বেন। তাই সেই স্বপ্ন পূরণে প্রায় দুইশ বই নিয়ে শশুর বাড়িতে গেলেন মেহেরুন নেছা মুমু নামের এক নববধূ। ভিন্ন এক আয়োজনে ঘটনাটি ঘটে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর ফলকন এলাকায়। শ্বশুরবাড়ি থেকে গহনা আসবাবপত্রসহ নামিদামি অনেক উপহার আসার কথা। যেমনটি সামাজিকতায় দেখা যায়। কিন্তু মুমুর বেলায় ঘটেছে ভিন্ন ঘটনা। সোমবার বিকেলে নববধূ মেহেরুন নেছা মুমু বাবার বাড়ি থেকে এসব বই নিয়ে চর ফলকন গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে আসেন। মুমু চর ফলকন গ্রামের ডা. অবাদুল হক চেয়ারম্যান বাড়ির মহিউদ্দিনের মেয়ে। একই গ্রামের রমজান আলী মৌলভীবাড়ির মাকছুদুর রহমানের ছেলে তরুণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এমরান হোসেন নিখিলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। নববধূ মুমু ঢাকার ইডেন কলেজের ইংরেজি তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। বই হাতে মুমু ও তার স্বামী মাকসুদের ছবি যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। তাদের দেখতে আসেন স্থানীয় উৎসুক জনতা। বইয়ের সঙ্গে বাহারি আইটেমের দেশীয় পিঠাও নিয়ে আসেন। ওইসব পিঠা প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়েছেন মুমুর শাশুড়ি কামরুন নাহার। এর আগে গত শনিবার মুমুর বউভাতের আয়োজন হয়। বউভাত অনুষ্ঠানের একদিন পরেই শ্বশুরবাড়িতে বই নিয়ে আসেন এই নববধূ। মুমুর পরিবার ও স্বজনরা জানান, বই পড়তে তার ভালো লাগে। বই সংগ্রহ ও পড়া তার প্রিয় শখ। শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে আসা সব বই তার পড়া হয়েছে। এসব বইয়ের বেশির ভাগই তার বিভিন্ন সময়ের জমানো টাকায় কেনা। অল্প কিছু বই জন্মদিনসহ বিভিন্ন দিবসের উপহার, ৮-১০টি বই তার স্কুল-কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পুরস্কার হিসেবে পাওয়া। মুমুর প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের প্রায় শতাধিক বই পড়েছেন তিনি। মুমুর স্বামী অ্যাডভোকেট এমরান হোসেন নিখিল স্ত্রীর সঙ্গে করে আনা বইয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। তাতে বাহ্ বাহ্ দিয়ে কমেন্ট করেছেন অনেকেই। মুমুর মা ছালেহা বেগম জানান, তার মেয়ের প্রিয় শখ বই পড়া। শাড়ি-চুড়ি, কসমেটিকসে আগ্রহ নেই। ছোটবেলা থেকেই টাকা জমিয়ে বই কেনা ছিল তার অভ্যাস। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার সময় মেয়ের সংগ্রহে থাকা সব বই নিয়ে গেছে। নববধূর শাশুড়ি কামরুন নাহার বলেন, আমার মেয়ে নেই, দুই ছেলে। ছেলের সুবাদে একটা মেয়ে পেয়েছি। এই লক্ষ্মী মেয়ে আসার সময় অনেক বই নিয়ে আসে। এতে আমি খুবই খুশি হয়েছি। এখন থেকে আমিও টাকা জমিয়ে বউকে বই কিনে দেব। নববধূ মেহেরুন নেছা মুমু বলেন, বই কেনা, বই পড়া আমার শখ। বই উপহার পেতে আমার খুব ভালো লাগে। অনেক দিন থেকে জমানো বইগুলো বাবার বাড়িতে রেখে আসতে মন চাইছিল না; সঙ্গে করে নিয়ে আসলাম। স্বপ্ন দেখছি শ্বশুরবাড়িতে ‘বউ-শাশুড়ির বই ঘর’নামে একটি লাইব্রেরি গড়ব। এলাকার সব বউ-শাশুড়ি বই পড়বে। এতে বউ ও শাশুড়িদের মধ্যে হৃদ্যতাও বাড়বে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর