• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

ঘোড়ায় এসে পালকিতে বউ নিয়ে ফিরলেন বর

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

সোনালী সেরোয়ানি পরে ঘোড়ায় চড়ে বর এলেন বিয়ে করতে। সব আয়োজন শেষে নববধূ বহনকারী পালকি ছুটল গ্রামের পথে। ঘোড়ায় চড়ে বর, আর বেয়ারার কাঁধের পালকিতে বউ। লাল ঘোমটার লাজুক বধূর রাঙা মুখটা দেখতে গ্রামীণ সড়কে মানুষের ভিড় ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের সদর উপজেলার হালসা এলাকায়। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এই বিয়ের আয়োজন হয় নাটোর সদর উপজেলার হালসা এলাকায়। যেখানে একই এলাকার ফরহাদ আলীর ছেলে মো. সালমান সাফি সৌরভের সঙ্গে দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে মারিয়া খাতুনের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। জানা গেছে, বর সালমান সাফি সৌরভ রাজশাহী সিটি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র। আর কনে মারিয়া খাতুন নাটোর নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। পূর্ব পরিচয় থাকলেও দুই পরিবারের সম্মতিতে তারা বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। উভয়ের পরিবারের বাবা-মায়ের শখ তাদের ছেলে-মেয়ের বিয়ের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখবেন। আর তাই বিয়েটিকে স্মরণীয় করে রাখতে দুই পরিবারের সম্মতিতে এমন আয়োজন করা হয়। যেখানে বর ঘোড়ায় চড়ে আর কনে পালকিতে চড়ে যায়। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে গ্রাম বাংলার হাড়িয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকেও নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য ছিল দুই পরিবারের। বুধবার বিয়ের দিন দুপুরে ঘোড়ায় চড়ে নিজ বাড়ি থেকে একই এলাকায় কনের বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করেন বরসহ শতাধিক বরযাত্রী। গ্রামের পথ মাড়িয়ে কনের বাড়িতে পৌঁছান বর। নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে চলে বরযাত্রীদের মধ্যাহ্ন ভোজ। সব শেষে নববধূকে পালকিতে চাপিয়ে বাড়ি ফেরেন বর সালমান সাফি সৌরভ। ঘোড়ায় চড়া বর আর সুসজ্জিত পালকিতে বউ দেখতে গ্রামের নানা বয়সী মানুষ ভিড় জমায় রাস্তার দুই পাশে। বরের বন্ধু কাউসার হাবিব বলেন, দাদা-দাদিদের মুখ থেকে পালকিতে বিয়ের গল্প শুনেছি। আজ নিজ চোখে পালকিতে কনে আর ঘোড়ার চড়ে বর বিয়ে করতে যাচ্ছে এমন দৃশ্য দেখতে পেয়ে ভালো লাগছে। কনে মারিয়া খাতুন বলেন, এমন আয়োজনে আমি অনেক খুশি। আমার বাবার ইচ্ছে পূরণ হয়েছে। তাছাড়া গ্রামীণ ঐতিহ্য পালকিতে বিয়ের এই আনুষ্ঠানিকতা আমার জীবনের সেরা স্মৃতি হয়ে থাকবে। বর সালমান সাফি সৌরভ বলেন, উভয়ের পরিবারের ইচ্ছেতেই হয়েছে এমন আয়োজন। বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বিয়ের এমন আয়োজনে দুই পরিবারসহ পুরো গ্রামবাসী আনন্দ পেয়েছেন। তাই আমিও খুশি। কনের বাবা দোলোয়ার হোসেন বলেন, বিয়েতে আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। নানা আয়োজন ও আনন্দ উল্লাসে সুন্দরভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। সবাই আমার মেয়ে ও জামাইয়ের জন্য দোয়া করবেন। হালসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, কালের বিবর্তনে সময়ের প্রয়োজনে হারাতে বসেছে গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্য। তেমনি বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায় পালকির বিয়ে। তবে এই বিয়ের ব্যতিক্রমী আয়োজন এলাকাবাসীসহ সবার নজর কেড়েছে। সবাই দারুণ উপভোগ করেছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর