• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

কমবে নদীভাঙন, রক্ষা পাবে ২৭৭২ কোটি টাকার সম্পত্তি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

ফরিদপুরের মধুমতি নদীর তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিং প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় মধুখালী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার সাড়ে সাত কিলোমিটার এলাকায় নদীটির সংরক্ষণ ও ড্রেজিং করা হবে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮১ কোটি ১০ লাখ টাকা। এতে কমবে নদীভাঙন এবং বন্যা কবল থেকে রক্ষা পাবে প্রায় ২ হাজার ৭৭২ কোটি ২৫ লাখ টাকার সম্পত্তি। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলাধীন মধুখালী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার খরস্রোতা মধুমতি নদীর তীর সংরক্ষণমূলক কাজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নদীভাঙন রোধ এবং বন্যার কবল থেকে স্থানীয় জনগণকে রক্ষা করাই এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য। ড্রেজিং করে নদীর প্রবাহ ও নাব্যতা স্বাভাবিক রাখা হবে। আর নদীর তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে এ দুটি উপজেলার অন্তর্গত আটটি প্রবল নদীভাঙন কবলিতস্থানে বিদ্যমান সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, শহিদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি জাদুঘর, সংযোগ সড়ক, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরবাড়ি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাট-বাজার, কমিউনিটি ক্লিনিক, ধর্মীয় উপসনালয়, ফসলি জমি ও বাসযোগ্য জমি, বসবাসের বাড়িঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা ইত্যাদি নদীভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। এতে প্রায় ২ হাজার ৭৭২ কোটি ২৫ লাখ টাকার সম্পত্তি রক্ষা করা সম্ভব হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি জাদুঘরের সংযোগ সড়কসহ তৎসংলগ্ন এলাকা নদীভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। চলতি অর্থবছর থেকে শুরু হওয়া এ প্রকল্প সম্পন্নের শেষ সময় ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত। সূত্র জানায়, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের বসতভিটায় যাতায়াতের রাস্তাসহ নওয়াপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ নওয়াগাড়া এলাকাসহ ৩ হাজার ১৫০ মিটার এলাকা মধুমতি নদীর প্রবল ভাঙনকবলিত হয়েছে। এছাড়া আলফাডাঙ্গা উপজেলার বাঁশতলা, পশ্চিম চর নারায়ণদিয়া, দক্ষিণ চর নারায়ণদিয়া, দিগনগর, পবনবেগ বাজার এবং গোপালপুর ও টগরবন্দ ইউনিয়নের মিলনস্থলে বাজড়া ও চরআজমপুর এলাকাসহ ৪ হাজার ৩৫০ মিটার নদীর তীর এলাকাও মধুমতি নদীর প্রবল ভাঙন কবলিত। ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানান, এ প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার নদী তীর এলাকা সংরক্ষণ ও ৩ হাজার একশো মিটার এলাকা ড্রেজিং করা হবে। এর ফলে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি পেয়ে নদীভাঙন রোধ হবে, নৌ চলাচলে সহায়ক হবে ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। নদীর তীরবর্তী জনগুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোসমূহ রক্ষা পাবে। পার্থ প্রতিম সাহা আরো বলেন, প্রকল্প এলাকাটি ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান-২১০০’ এ উল্লিখিত ৬টি হটস্পটের মধ্যে ‘নদী অঞ্চল এবং মোহনা’ এলাকায় অবস্থিত। প্রসঙ্গত, ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান-২১০০’ এর অভিস্ট-১ হলো বন্যা ও জলবাযু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিপর্যয় থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অভিস্ট-৩ হলো- সমন্বিত ও টেকসই নদী অঞ্চল এবং মোহনা ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা। অভিস্ট-৪ হলো- জলাভূমি এবং বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ এবং তাদের যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা। অভিস্ট-৬ হলো- ভূমি ও পানি সম্পদের সর্বোত্তম সমন্বিত ব্যবহার নিশ্চিত করা। গত মঙ্গলবার বিকেলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান এমপি মধুখালীর রউফনগরে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এ সময় ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা ও মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামনূন আহমেদ অনিকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর