শ্রীপুরে পাখির মৃত্যু: তদন্ত কমিটির ঘটনাস্থল পরিদর্শন

গাজীপরে শ্রীপুরে আকস্মিক পাখি মৃত্যুর ঘটনায় বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তারা সেখান থেকে কয়েকটি মারা যাওয়া পাখির নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করে ময়নাতদন্তের জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠায়। ময়নাতদন্তের পর পাখি মারা যাওয়ার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। বুধবার দুপুরের পর শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সিটাপাড়া গ্রামের পাখি মৃত্যুর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা ওইদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তথ্য সংগ্রহ করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে বায়োডাইভার্সিটি কর্মকর্তা রুবিয়া ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বায়োডাইভার্সিটি কর্মকর্তা রুবিয়া ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সিটপাড়া গ্রামে অর্ধশতাধিক পাখি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। পখি মারা যাওয়ার ঘটনাস্থল সিট পাড়া গ্রামের গার্ডেনিয়া ওয়্যার লিমিটেড (পোশাক কারখানা) সামনে কযয়েকটি গাছ এবং স্থানীয় কৃষকদের শস্যক্ষেত রয়েছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, সরেজমিন ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকজনদের সঙ্গে পাখি মারা যাওয়ার বিষয়ে কথা বলি ও মৃত পাখি সংগ্রহ করি। এ সময় জানতে পারি ওইদিন স্থানীয় স্থানীয় গার্ডেনিয়া ওয়্যার লিমিটেড কারখানা শ্রমিক চা বিরতির সময় কারখানা থেকে বাইরে বের হলে দেখতে পান কয়েকজন নারী ও শিশু মারা যাওয়া পাখিগুলো ওই কারখানার সামনে এনে এক জায়গায় জড়ো করে রাখছে। পরে মারা যাওয়া পাখিগুলোর ছবি ভিডিও করে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে পোস্ট করে। ফেসবুকে পোস্টে তথ্য প্রচার দেন কৃষকের ক্ষেতের ফসল প্রায় নষ্ট করে ফেলায় ক্ষেতে দেয়া বিষ বা বিষ মিশ্রিত পানি খেয়ে অর্ধশতাধিক পাখি মারা গেছে। বাস্তবে মৃত পাখির সংখ্যা আরো কম। বুধবার ঘটনাস্থল থেকে ১২টি মৃত পাখির তথ্য জানতে পেরেছি। এদের মধ্যে ২টি ছিল তিলা ঘুঘু এবং বাকি ১০টি ছিল বনছাতারে পাখি। এগুলোর মধ্যে ১০টি মৃত পাখি ঢাকায় আইআরডিসিআর ল্যাবে ময়নাতদন্তের জন্য নমুনা হিসেবে আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর আকস্মিক পাখি মারা যাওয়ার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তিনি বলেন, আশেপাশে সবজি ক্ষেত রয়েছে। আগের দিন হয়তো কেউ সেখানে কীটনাশক স্প্রে/প্রয়োগ করেছে। ওই বিষ কিংবা কীটনাশক খাওয়া কোনো পোকামাকড় খেয়ে বিষক্রিয়া হওয়ার কারনেই এরকম ঘটনা ঘটে থাকতে পরে বলে মনে করেন তদন্ত দলের সদস্যরা। সকালে খালি পেটে পাখির ফিডিং টাইমে ওই পোকামাকড় খাওয়ার পরে হয়তো পাখি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বিষ প্রয়োগ করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বা ইচ্ছাকৃতভাবে পাখি মারার জন্য কেউ বিষ প্রয়োগ করার কোনো তথ্য আমরা পাইনি। এটা ছিল বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা। তবে ঢাকার রোগ অনুসন্ধান ও গবেষণাগারে স্যাম্পল ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরই পাখি মারা যাওয়ার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের চিকিৎসক ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমানও জানালেন একই তথ্য। বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বায়োডাইভার্সিটি অফিসার রুবিয়া ইসলাম ছাড়াও তার সঙ্গে ছিলেন ঢাকার খামারবাড়িতে কর্মরত প্রাণি সম্পদ অধিদফতরে কর্মরত ভেটেরিনারি সার্জন ফয়সাল আতিক, গাজীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের চিকিৎসক ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান, বন বিভাগের ভাওয়াল রেঞ্জ অফিসার কাজী নাজমুল হোসেন, চারজন ভেটেরিনারি সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।