• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

সড়ক চওড়া করতে কাটা হবে সাড়ে ৮শ’ গাছ, সাধারণ মানুষের ক্ষোভ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০২৪  

বর্তমানে দেশজুড়ে বইছে তীব্র দাবদাহ। এতে হাঁসফাঁস জনজীবন। ঠিক তখনই ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় সড়কের ৮৫৬টি গাছ কাটার সব বন্দোবস্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী এসব গাছ কাটার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন স্থানীয়রা। জানা যায়, তজুমদ্দিন উপজেলার মুচি বাড়িরকোনা বাজার থেকে দক্ষিণ খাসেরহাট বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫.৪৩ কিলোমিটার সড়ক চওড়া করার উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। যার বরাদ্দ নির্ধারণ হয়েছে প্রায় ১১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। রাস্তাটি টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে মেসার্স ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আগে ওই রাস্তাটি ১২ ফুট চওড়া ছিল। এখন তা বাড়িয়ে করা হবে প্রায় ১৮ ফুট। রাস্তা চওড়া করার জন্য দুই পাশের প্রায় ৮৫৬টি গাছ কেটে ফেলার জন্য এরমধ্যেই সব প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। এরইমধ্যে ভোলা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে নিলাম বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গাছগুলো ক্রয় করেছে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। খুব শিগগিরই গাছ কাটার কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে। মোস্তাফিজ, আবু তাহের, আফসার এবং মনিরসহ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, সড়কের পাশে থাকা গাছগুলোর ছায়ায় কৃষক ও শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষ কিছুটা বিশ্রাম নিচ্ছেন। এই তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে এখন সড়কের দু’পাশের বিশাল বড় বড় গাছগুলো কাটা হলে মরুভূমিতে পরিণত হবে এ এলাকা। তাই আমাদের দাবি, গাছগুলো রক্ষা করেই যেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবির জানান, সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ না করে উন্নয়নের নামে নির্বিচারে সারাদেশে গাছ নিধনের মহাযজ্ঞ চলছে। উন্নয়ন পরিকল্পনার উদ্যোগ নেয়ার আগে পরিবেশবিদ, উদ্ভিদ বিজ্ঞানি ও পরিকল্পনাবিদদের পরামর্শ না নেয়ার কারণে উন্নয়নের নামে গাছ কেটে পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে। সড়ক সম্প্রসারণের নামে তজুমদ্দিন উপজেলার ৮৫৬টি গাছ কাটার খবর শুনে আমি খুবই মর্মাহত হয়েছি। গাছগুলো কাটা হলে মানুষ, পশু-পাখিসহ বিভিন্ন প্রাণিকূলের বড় ধরনের ক্ষতি হবে। গাছগুলো রক্ষা করতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হবে। প্রয়োজনে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে গাছ রক্ষার জন্য জোড়দার কর্মসূচি পালন করা হবে। ভোলা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাহাবুব আলম বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরকে আমরা গাছের পরিমাণ ও দাম নির্ধারণ করতে সহযোগিতা করেছি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় চলমান এই তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে গাছগুলো না কাটাই উত্তম হবে। আমরা গাছগুলো রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো। এ বিষয়ে ভোলা জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলীল জানান, ওই সড়কটি সম্প্রসারণের জন্য আপাতত দুই পাশের গাছগুলো কাটা হবে। তবে সড়কের কাজ শেষ হলেই দুই পাশে নতুন করে পুনরায় গাছের চারা রোপণ করা হবে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর