• মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

  • || ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যেভাবে যুক্ত হওয়া যাবে

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৬ আগস্ট ২০২৩  

দেশের মানুষের জন্য ৪ ধরনের পেনশন স্কিমের বিধান রেখে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা জারি করেছে সরকার।
সোমবার জারি করা বিধিমালা অনুযায়ী, ১৮ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী সব বাংলাদেশি নাগরিক এ স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। এমনকি ক্ষেত্রে বিশেষে ৫০ বছরের বেশি বয়সীরাও এ স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। সেইসঙ্গে প্রবাসে থাকা যেসব বাংলাদেশি নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তারাও এ স্কিমে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন।

চার স্কিমের মধ্যে রয়েছে- প্রবাস স্কিম (প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য), প্রগতি স্কিম (বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য), সুরক্ষা স্কিম (স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য) এবং সমতা স্কিম (স্বকর্মে নিয়োজিত স্বল্প আয়ের নাগরিকদের জন্য)।

এসব স্কিমে যুক্ত হয়ে আজীবন পেনশন সুবিধা পেতে ন্যূনতম ১০ বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে নির্দিষ্ট হারে চাঁদা দিতে হবে। তবে পরপর তিন মাস চাঁদা দিতে ব্যর্থ হলে পেনশন হিসাব স্থগিত হয়ে যাবে। এরপর জরিমানাসহ সমুদয় বকেয়া কিস্তি পরিশোধ না করা পর্যন্ত হিসাবটি সচল করা হবে না।

বেসরকারি কর্মচারীরা মাসে ২ হাজার, ৩ হাজার ও ৫ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে প্রগতি স্কিমে যুক্ত হতে পারবেন। প্রবাস স্কিমে মাসিক চাঁদা ধরা হয়েছে ৫ হাজার, সাড়ে ৭ হাজার এবং ১০ হাজার টাকা।

সুরক্ষা স্কিমে কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিকসহ সব ধরনের অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ১ হাজার, ২ হাজার, ৩ হাজার ও ৫ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। সমতা স্কিমে চাঁদা মাসে ১ হাজার টাকা। এর মধ্যে গ্রাহক প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে দেবেন। বাকি ৫০০ টাকা সরকার পরিশোধ করবে।

পেনশন স্কিমে যুক্ত হওয়ার যোগ্যতা ও নিবন্ধন

১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়স থেকে ৫০ বছর বয়সী জাতীয় পরিচয়পত্রধারী সব বাংলাদেশি নাগরিক তাদের জন্য প্রযোজ্য কোনো স্কিমে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। তবে শর্ত রয়েছে, বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সের নাগরিকরা স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ থেকে নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হবেন সেই বয়স থেকে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হবেন।

প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা তাদের জন্য প্রযোজ্য স্কিমে পাসপোর্টের ভিত্তিতে নিবন্ধন করতে পারবেন। তবে শর্ত রয়েছে, সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করে তার অনুলিপি কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিতে হবে।

শর্তের মধ্যে আরো রয়েছে, নিয়মিতভাবে পাসপোর্ট নবায়ন বা পুনঃইস্যুর ক্ষেত্রে নবায়নকৃত বা পুনঃইস্যুকৃত পাসপোর্টের অনুলিপি কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিতে হবে।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় থাকা ব্যক্তিরাও তাদের জন্য প্রযোজ্য স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তাদের ক্ষেত্রে শর্তের মধ্যে রয়েছে- স্কিমে অংশগ্রহণ করার পূর্বে সংশ্লিষ্ট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা সমর্পণ করতে হবে।

কোনো স্কিমে নিবন্ধনের জন্য দেশে এবং প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক নির্ধারিত ফরম অনলাইনে পূরণ করে আবেদন করতে হবে। যার বিপরীতে আবেদনকারীর অনুকূলে একটি ইউনিক আইডি নম্বর প্রদান করা হবে।

আর সব ক্যাটাগরির আবেদনে আবেদনকারীর মোবাইল নম্বরে এবং অনিবাসী আবেদনকারীর ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় ই-মেইলের মাধ্যমে ইউনিক আইডি নম্বর, চাঁদার হার এবং মাসিক চাঁদা প্রদানের তারিখ অবহিত করা হবে।

যেখানে টাকা জমা দিতে হবে

বিধিমালায় বলা হয়েছে, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে পেনশনের চাঁদা জমা দিতে হবে। আর জমা দেওয়া যাবে অনলাইন ব্যাংক, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান এবং তফসিলি ব্যাংকের যেকোনো শাখার মাধ্যমে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাঁদা দিতে না পারলে পরের এক মাসের মধ্যে জরিমানা ছাড়া চাঁদা দেওয়া যাবে। এক মাস পার হলে পরের প্রতিদিনের জন্য ১ শতাংশ হারে জরিমানা দিয়ে হিসাব সচল করা যাবে। মাসের নাম উল্লেখ করে অগ্রিম চাঁদা দেওয়ারও সুযোগ রাখা হয়েছে। চাঁদা মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে দেওয়ারও সুযোগ থাকবে।

চাঁদাদাতা নিজের ও পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, গৃহনির্মাণ, গৃহ মেরামত এবং সন্তানের বিয়ের ব্যয় মেটাতে তাঁর জমা করা অর্থের ৫০ শতাংশ ঋণ নিতে পারবেন, যা শোধ করতে হবে ২৪ কিস্তিতে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর