• বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১

  • || ০৭ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর
সর্বশেষ:

মরণ সাগরে লেখা বাকৃবির ১৯ শহিদের নাম

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩  

১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহিদের তালিকায় নাম রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সূর্য সন্তানদের। প্রজন্মের পর প্রজন্ম দল-মত নির্বিশেষে সবার জন্য তাদের স্মৃতি রক্ষার্থেই ক্যাম্পাসে নির্মিত হয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ’ বা ‘মরণ সাগর’। স্মৃতিস্তম্ভটিতে একটি সম্পূর্ণ পরিস্ফুটিত শাপলা ফুলের মধ্য থেকে বেরিয়ে আছে দুটি হাত, হাতের মধ্যে একটি রাইফেল উঁচু করে ধরা। রাইফেলের অগ্রভাগে বাংলাদেশের পতাকা বাধা। যা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশেকে অর্জনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। স্মৃতিস্তম্ভটির দেয়ালে খোদাই করে লেখা রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হওয়া বাকৃবির ১৯ শহিদের নাম। মরণ সাগরের লাল রঙের সিঁড়ি ও মেঝে দিয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে বোঝানো হয়েছে। বাকৃবি হতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী শহিদদের মধ্যে শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী রয়েছেন। শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন সহকারী অধ্যাপক এ.বি.এম আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া। কর্মচারীদের (ছয়জন) মধ্যে মো. আক্কাছ আলী, মধুসূদন বর্মণ, মো. নুরুল হক, মো. গাজী ওয়াহিদুজ্জামান, মো. হাসান আলী ও গিয়াস উদ্দিন। ১২ জন ছাত্র- মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের মো. জামাল হোসেন, আব্দুল মতিন খন্দকার (টিপু) ও মনিরুল ইসলাম আকন্দ; কৃষি প্রকৌশল অনুষদের নাজির আখতার কাশেম ও আ.ন.ম নাজমুল আহসান; কৃষি অনুষদের হাবিবুর রহমান ও খুরশীদ আলম (শিবলী); ভেটেরিনারি অনুষদের আবুল কাশেম, কাজী মো. মঞ্জুর হোসেন ও ইব্রাহীম মোস্তফা কামাল; কৃষি অর্থনীতি অনুষদের মো. শামসুল হক তালুকদার ও মো. তহসীন আলী। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়েরিতে উল্লেখ রয়েছে- তৎকালীন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর শামসুল ইসলাম, সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রফিকুল হক, প্রফেসর আতিয়ার রহমান মোল্লা, প্রফেসর ড. সাখাওয়াত হোসেন, প্রফেসর ড. শেখ জিনাত আলী, প্রফেসর ড. নূর মো. তালুকদার, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাবেক রেজিস্ট্রার মো. নজিবুর রহমানসহ ৮৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম। শহিদ শিক্ষার্থীদের স্মরণে বাকৃবিতে ছাত্রদের জন্য নির্মিত তিনটি আবাসিক হলের নামকরণ করা হয়েছে। মো. জামাল হোসেনের স্মরণে ১৯৮৮ সালের ১৩ অক্টোবর নির্মিত হয় শহিদ জামাল হোসেন হল। আ.ন.ম নাজমুল আহসানের স্মরণে ১৯৭৩ সালের ২৪ নভেম্বর নির্মিত হয় শহিদ নাজমুল আহসান হল। মো. শামসুল হক তালুকদারের স্মরণে ১৯৭২ সালের ১৯ জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভায় পূর্বের কায়েদে আযম হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় শহিদ শামসুল হক হল। বাকৃবির সব বীর শহিদদের স্মরণ করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী বর্বরোচিত গণহত্যা চালায়। তাদের এই হত্যাকাণ্ডে রক্ষা পায়নি বাকৃবির শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারীরা। বাকৃবির শহিদদের অবদান ও তাদের নাম চির স্মরণীয় করে রাখতেই 'মরণ সাগর' নামের স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর