• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

সন্তানের বটবৃক্ষ ছায়া ‘বাবা’

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২৩  

সন্তানের মাথার ওপর বটবৃক্ষের মতো ছায়ার নাম ‘বাবা’। বাবা চির চিরন্তন এক সম্পর্কের নাম। বাবা তার সন্তানের ভরণ-পোষণ, ইচ্ছা, আশা-আকাঙ্খা, ভালো-খারাপ সব দিক দেখভাল করার নিঃস্বার্থ দায়িত্ব পালন করেন। এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের সবকিছু হাসি মুখে বিসর্জন দিতে সামান্যতমও কুণ্ঠাবোধ করেন না। বাবা তার প্রতিটি সন্তানের চোখে আদর্শের নাম।

আসলে ‘বাবা’- দুটি অক্ষরে গঠিত শব্দটির মর্যাদা এত বিশাল যে, তা কোনো সংজ্ঞায় বা ভাষায় আবদ্ধ করা যায় না। বাবা তো সেজন- যার হাত ধরে শেখা যায় জীবনে হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়েও কীভাবে উঠে দাঁড়াতে হয়। কীভাবে স্বপ্ন পূরণের দূর্গম পথে পাড়ি দিতে হয়। যার ব্যক্তিত্ব সরলতা আকৃষ্ট করে প্রতিটি সন্তানকে। বাবাকে অনুসরণ করে সামনের দিনগুলোতে চলার প্রয়াস। আসলে বাবার তুলনা শুধু বাবাই।


মহান সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীতে তার সৃষ্টিকে পাঠিয়ে দেন বাবা নামক মানুষটির কাছে। সন্তানকে জিতিয়ে দেওয়ার জন্য তিনি হারতেও রাজি থাকেন। সন্তানের সুখই যেন বাবার সুখ। সারাদিন কর্মব্যস্ততা শেষে বাড়ি এসে সন্তানের মুখে হাসি দেখলে নিমেষেই তার সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।


মানবিক মানুষ, আনন্দময় পরিবার ও সমাজ গঠনে বাবাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সন্তানদের সুনাগরিক ও আদর্শবান মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বাবার ভূমিকার যেন তুলনা হয় না। একজন সন্তান তার বাবাকে অনুকরণ করেই বেড়ে ওঠে। ফলে সন্তানের সামনে নিজেকে অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা প্রতিটি বাবার জন্যই অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।


উপজেলা সচেতন নাগরিক উন্নয়ন কমিটির সহ-সভাপতি আলহাজ মুসলেহ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, বাবা শুধু সন্তানদেরকে দিয়েই যান, কখনো কোনো কিছু পাওয়ার আশা করেন না। বাবা সন্তানকে ভালো রাখার জন্য প্রতিনিয়ত সীমাহীন কষ্ট করছেন। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দিন-রাত খেয়ে না খেয়ে সন্তানের সুখের জন্য শুধু পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কখনো ভালো কিছু খেতে গেলে সন্তানের চেহারা তার চোখেমুখে ভেসে ওঠে। নিজে আর খান না, সন্তানের জন্য রেখে দেন। সন্তান খেলে তাতেই তার মন ভরে, পেট ভরে।

তিনি আরো বলেন, বাবা যখন বৃদ্ধ হবে তখন প্রতিটি সন্তানের কর্তব্য তার বাবার সেবা যত্ন করা। ঠিক যেমনটা সন্তানের জন্য বাবা করেছিল। সন্তানের কটু কথায় বাবার মনে কষ্ট জমলে সেই সন্তান কখনো বড় কিছুতে সফল হতে পারে না। আবার সন্তানের কাজে খুশি হয়ে বাবা দোয়া করেন, সন্তান সফল হলে বাবার মুখেও হাসি ফোটে। বাবার মন কী চায় তা জেনে, বাবার মন ভালো রাখার দায়িত্ব নেয়া।

ব্যাংকার মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, তখন আমি খুবই ছোট বয়স ৮-৯ হবে। আমার সামান্য অসুখ হয়েছিল। তখন আমার বাবা টেনশনে পড়ে যায়। ওষুধ খাওয়ানো সেবা-যত্ন সবই বাবা নিজে করেছেন। যখন যা চাইতাম তখন সেটাই দেওয়ার চেষ্টা করতেন। এখন আমি বাবা হয়েছি। বাবা হিসেবে তা উপলব্ধি করছি। যখন সন্তানের শরীর খারাপের খবর শুনি, তখন নিজের ভেতরে একটা তীব্র কষ্ট অনুভূত হয়।

তিনি আরো বলেন, আমার বাবাও এর চেয়ে বেশি কষ্ট পেতেন। নিজের অজান্তে চোখ ভিজে যায় আর চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করে ‘বাবা তোমার ছেলে তোমার জন্য কিছুই করতে পারছে না, তুমি আমাকে ক্ষমা করো। তুমি তো চলে গেলে না ফেরার দেশে। বাবা তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি’।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর