• মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩১ ১৪৩১

  • || ০৫ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

‘সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন’

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমি জানি দেশি-বিদেশি অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। আরও অনেক ষড়যন্ত্র হবে। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন হবে। 

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে নির্বাচন সামনে রেখে দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনের মাধ্যমে সংগঠন শক্তিশালী করার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার গণভবনে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা, সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, দপ্তর, উপ-দপ্তর, প্রচার এবং উপ-প্রচার সম্পাদকদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার এক বৈঠকে তিনি এসব নির্দেশনা দেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা এ তথ্য জানিয়েছেন। বেলা সাড়ে ১১টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা গণভবনে প্রবেশ করেন। তারা দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন চাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শিলা, কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দ, সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি, যুব মহিলা লীগ সভাপতি আলেয়া ডেইজি সারোয়ার, সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।

বৈঠক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচন যথাসময়ে সংবিধান অনুযায়ী হবে। এই নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না। 

তিনি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, এখন থেকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আমরা জানি, বিএনপি-জামায়াত দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। তারা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আগামী নির্বাচন বানচাল করতে চায়। আমরা এতে কোনো ধরনের ভয় পাই না। চারদিকে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সবাইকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। আমাদের নেতাকর্মীরা যদি সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকে, এই নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। নির্বাচনের আর মাত্র সাড়ে তিন মাসের মতো বাকি আছে। এই সময়ে কেউ যেন ঘরে বসে না থাকে, সেটি মাথায় রাখতে হবে। বিএনপি-জামায়াত নানা ধরনের প্রপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে বিদেশে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে গুজব এবং কলকাঠি নেড়ে করা হচ্ছে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র। ব্যবহার করা হচ্ছে ফেসবুক, ইউটিউব ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। বেশিরভাগ গুজবই তৈরি হচ্ছে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে এবং উসকানিমূলক। উদ্দেশ্য সরকারকে বিব্রত করা, দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করা এবং প্রশাসনের মনোবল ভেঙে দেওয়া। এর বিরুদ্ধে সত্যকে তুলে ধরতে হবে। এই অপপ্রচার রোধে সবাইকে মাঠে থাকতে হবে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত এই ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে হবে। গত সাড়ে ১৪ বছরের সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরতে হবে। এর বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে। মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্য দিয়ে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের লড়াই করতে হবে। তাহলে দেশের মানুষ বিভ্রান্ত হবে না। জনগণের সাড়া পাবে না। সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ের প্রচার ও সরকারবিরোধী গুজবের বিরুদ্ধে সত্য তুলে ধরতে হবে। আমরা এত উন্নয়ন করছি, সেগুলো প্রচারে অনেকটা পিছিয়ে। বিএনপি-জামায়াতের কাজ নেই। তারা এখন সাইবারযুদ্ধ করছে আমাদের বিরুদ্ধে। সাইবারযুদ্ধের বিরুদ্ধে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আমার কাছে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। কেউ কেউ দলে একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছে। আমি এটি আর শুনতে চাই না। ভবিষ্যতে কোনো নেতার বিরুদ্ধে যদি এমন অভিযোগ পাই, তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী নির্বাচন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। এই নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি-জামায়াত এমন কোনো ষড়যন্ত্র নেই, যা করছে না।

এ সময় সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, কেন্দ্র থেকে আমাদের তৃণমূল পর্যন্ত যেখানে যেখানে কমিটি হয়নি- সেখানে সেখানে দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিটিগুলো করতে হবে। যারা এই কমিটি করতে ব্যর্থ হবে তাদের জন্য শাস্তি অপেক্ষা করছে। তৃণমূল পর্যন্ত কমিটি গঠন করে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন প্রতিহত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রেখে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যদি সজাগ দৃষ্টি রাখেন বিএনপি-জামায়াতের যেসব অপপ্রচার এবং দেশি-বিদেশি যেসব ষড়যন্ত্র আছে, সেগুলো মোকাবিলা করতে কোনো সমস্যা হবে না। সবাইকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের মিথ্যা প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে জবাব দিতে হবে। তবে কমিটি করার ক্ষেত্রে যারা বিভিন্ন দল থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে, তাদের দলে রাখা যাবে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবি দেওয়া যাবে না। আমরা জানি তারা বসন্তের কোকিল। আওয়ামী লীগের যদি কখনো খারাপ সময় আসে, তারা আবার উড়ে যাবে। তাই এই বিষয়টির দিকে সবাইকে নজর রাখতে হবে।

বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর