• বুধবার ১৫ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১

  • || ০৬ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

নামছে সেনাবাহিনী

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩  

পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় সাড়ে সাত লাখ সদস্য এবার নিয়োজিত থাকছে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নিরাপত্তায়। পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও মাঠে নামানোর অনুমতি চেয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে আবেদন জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত রবিবার যার নৈতিক সম্মতি মেলে। এর একদিন পরই সোমবার এক চিঠিতে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ও বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েনে সশস্ত্র বাহিনীকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চিঠিতে আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত (যাতায়াত সময়সহ) সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করার কথা বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এর অন্তত দুই থেকে তিনদিন আগে একটি অগ্রবর্তী টিম পাঠানোরও আহ্বান জানানো হয়। তবে সেনাবাহিনী নির্বাচনী মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করলেও তাদের কোনো ‘ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার’ থাকছে না। অস্ত্র ব্যবহার সংক্রান্ত যে কোনো সিদ্ধান্তের জন্য তাদের নির্ভর করতে হবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওপর। কি রয়েছে চিঠিতে: সেনাবাহিনী মোতায়েন সম্পর্কিত চিঠিতে ইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে করার জন্য নির্বাচন কমিশন সম্ভব সব আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার জন্য সার্বিক প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। তাই ভোটগ্রহণের আগে, ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরে শান্তিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য ‘ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’র আওতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত (যাতাযাত সময়সহ) সশস্ত্র বাহিনী নিয়োজিত থাকবে মর্মে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২৬-২৭ তারিখে মাঠে নামবে অগ্রবর্তী টিম: ইসির চিঠিতে আরও বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের কয়েকদিন আগে থেকে নির্বাচনী এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভৌত অবকাঠামো এবং নির্বাচনী পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে প্রতি জেলায় সশস্ত্র বাহিনীর ছোট আকারের একটি করে অগ্রবর্তী টিম পাঠানো যেতে পারে। যার ফলে ইসি সূত্র বলছে, ২৯ তারিখে দুই বা তিনদিন আগে অর্থাৎ ২৬ বা ২৭ তারিখে মাঠে নামতে পারে বাহিনীর অগ্রবর্তী একটি টিম। যারা যাতায়াত ব্যবস্থাসহ সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। চিঠিতে আরও বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি ও অন্যান্য আইনের বিধান অনুসারে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা ইনস্ট্রাকশন রিগার্ডিং এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার-এর ৭ম ও ১০ম অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত হবে। মোতায়েন করা সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচন কাজে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের পরামর্শে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বেসামরিক প্রশাসনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করবে। যেভাবে কাজ করবে সেনাবাহিনী: ইসির চিঠিতে বলা হয়, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা/ উপজেলা/মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট এবং সুবিধাজনক স্থানে নিয়োজিত থাকবে। রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয় করে উপজেলা/থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। সশস্ত্র বাহিনীর টিমের সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে। চিঠিতে আরও বলা হয়, সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে এলাকাভিত্তিক ডেপ্লোয়মেন্ট প্ল্যান চূড়ান্ত করা হবে। ভোটগ্রহণের দিন, তার আগে ও পরে কার্যক্রম গ্রহণ এবং মোতায়েনের সময়কালসহ বিস্তারিত পরিকল্পনা ইসিকে অবহিত করতে হবে। এ ছাড়া বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধক্রমে চাহিদামতো আইনানুগ কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত নির্দেশনা জারি করা হবে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সেনা মোতায়েনের বিষয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত নির্দেশনা জারি করা হবে। থাকছে না ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার: তবে সেনা মোতায়েন হলেও তাদের কোনো ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার থাকছে না। অস্ত্র থাকলেও তারা তা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করতে পারবে না। সোমবার এক অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর জানান, সেনাবাহিনী হলো দেশরক্ষার কাজে নিয়োজিত বাহিনী। আমাদের সিভিল প্রশাসনের কোনো কাজে যখন প্রয়োজন হয় তখন তাদের আমরা আহ্বান করি। তারা আমাদের সাহায্য করে। যার হাতে অস্ত্র থাকে তাকে ম্যাজিস্ট্রেসি দেওয়ার সুযোগ নেই। বিচার এবং অস্ত্র একসঙ্গে থাকতে পারে না।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর