• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

কেউ যেন দেশকে পেছনে ঠেলে দিতে না পারে, সতর্ক থাকুন

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আমরা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এটা অব্যাহত রাখতে হবে। কেউ যেন দেশকে পিছিয়ে ঠেলে রাজাকারদের দেশে পরিণত করতে না পারে সে জন্য সতর্ক থাকুন।

শুক্রবার জার্মানির মিউনিখে হোটেল বার্গারহাউস গার্চিংয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

গতকাল স্থানীয় সময় দিনে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। একই স্থানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জার্মান অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রী সভেঞ্জা শুলজে। নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে (এমএসসি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, প্রতিটি ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। মুক্তিযুদ্ধের ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আমরা জাতির পিতার বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট সোনার বাংলাদেশে রূপান্তরিত করব। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ফল সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয় বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আমি কখনই ভাবি না আমার কী দরকার, বরং আমি ভাবি যে আমি দেশ এবং এর জনগণের উন্নতির জন্য কী করতে পারি। তিনি বলেন, তার সন্তানরাও জনগণের কল্যাণে তাদের উৎসর্গ করেছে। আাওয়ামী লীগকে গণমুখী দল হিসেবে আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশের মানুষ মাতৃভাষা বাংলা ও দেশের স্বাধীনতাসহ সবকিছু পেয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। আমাদের দল ক্ষমতায় থাকায় আমরা কভিড-১৯ মহামারির মতো বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলা করতে পেরেছি। জনগণের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যখনই সুযোগ পাই জনগণের কল্যাণে কাজ করি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। কারণ তারা প্রয়োজনে দলকে সব সময় পাশে পায়। আমাদের উন্নয়ন লক্ষ্য শুধু মেগাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা নয়, তৃণমূলেও অগ্রগতি করা। বিএনপিকে লুটেরাদের দল আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দল জনগণের কল্যাণে কিছুই করে না। বরং নিজেদের ভাগ্য গড়ে তোলে। তারা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও মানুষ পুড়িয়ে মারার কারণে পরাজয়ের ভয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তিনি বলেন, তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি কারণ তারা জানে যে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। একজন সামরিক স্বৈরশাসকের দ্বারা গঠিত দলটি সব সময় এজেন্সিতে বিশ্বাস করে এবং তাদের সাহায্য ছাড়া তারা কিছুই করতে পারে না। শেখ হাসিনা বিএনপিকে হ্যাঁ/না ভোট এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনপ্রক্রিয়া ধ্বংস করার জন্য দায়ী করে বলেন, বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচন প্রহসনে পরিণত করেছে। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য। গত সংসদ নির্বাচনে দেশের মানুষ বিশেষ করে নারীরা অবাধে ভোট দিয়েছে। তিনি বলেন, এবার আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় না বসালে ২০০৯ সাল থেকে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ শাসনামলে যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, তা নষ্ট হয়ে যেত। লুটেরা (বিএনপি) সব লুট করে নিত। শেখ হাসিনা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের নিজেদের যোগ্য হিসেবে প্রস্তুত করতে বলেন, যাতে তারা নিজেদের, দেশ ও মানুষের সেবা করতে পারে। তিনি বলেন, তাঁর সরকার বিদেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি এবং যার জন্য আমরা দক্ষ জনশক্তি তৈরি করছি। সরকার বাংলাদেশকে ডিজিটাল করেছে এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং মিউনিখের স্থানীয় মেয়র অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক : মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গতকাল স্থানীয় সময় সকালে হোটেল বেইরিশার হফের সম্মেলনস্থলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে দুই নেতা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এর আগে শনিবার একই স্থানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জার্মান অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রী সভেঞ্জা শুলজে।

নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে (এমএসসি) নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। গতকাল সকালে কনফারেন্স ভেন্যু হোটেল বেইরিশার হফে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উভয় নেতা বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁরা পারস্পরিক ও বৈশ্বিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সাক্ষাৎ : ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে (এমএসসি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। গতকাল সকালে কনফারেন্স ভেন্যু হোটেল বেইরিশার হফে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তাঁরা পারস্পরিক ও বৈশ্বিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। পরে একই স্থানে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন বিষয়ক সেক্রেটারি লর্ড ক্যামেরন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

এ সময় অন্যান্যের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন। মিউনিখের নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র্র্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন বিষয়ক সেক্রেটারি ডেভিড ক্যামেরন। গতকাল মিউনিখের বেইরিশার হফ হোটেলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তাঁরা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানা গেছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর