• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

আবহমান বাংলার সংস্কৃতি ও লোকজ মেলা

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

আবহমান গ্রাম বাংলার লোকজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নানা ক্ষেত্র তুলে ধরতে জামালপুরের মেলান্দহের ঝাউগড়া ইউপির কাপাসহাটিয়া গ্রামের মুক্তিসংগ্রাম যাদুঘর প্রাঙ্গণে তিন দিনব্যাপী সংস্কৃতি উৎসব এবং লোকজ মেলা শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, গ্রাম থেকে হারিয়ে যাওয়া কৃষ্টিকালচার নূতন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সাংস্কৃতিক উৎসব ও লোকজ মেলার আয়োজন করে মুক্তিসংগ্রাম যাদুঘর ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃপক্ষ। 

২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে লোক সংস্কৃতি উৎসব ও লোকজ মেলার উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি। মেলা ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর এই তিনদিন।


এদিকে উপলক্ষে গ্রামীণ আবহে সেজেছে মুক্তির সংগ্রাম প্রাঙ্গণে চারপাশ। মেলায় প্রসরা সাজিয়ে বসেছে বাংলার পোড়া মাটি, বাংলার লোক ঐতিহ্য, নকশিকাঁথা, কাপড়ের পুতুল, লোকজ খেলনা ও বাদ্যযন্ত্র, তামা, কাঁসা, পিতলের কারুশিল্প, বাঁশের কারুশিল্প, বেতের কারুশিল্প, জেলেদের জাল বোনা, নকশিকাঁথা সেলাইসহ বিভিন্ন কারুশিল্পীর প্রায় ৫০টি স্টল রয়েছে

জামালপুর পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, গ্রাম বাংলার লোকজ উৎসবে বাউল গান, পালাগান, যাত্রাপালা, লালনগীতি, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, জারি, সারি, হাছন রাজার গান, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, ঘাটু গান, পিঠা উৎসব আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। নূতন প্রজন্মের কাছে এসব স্বপনের মতো। তাই আগামী প্রজন্মকে জানাতে ও জানতে হলে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা খুবই জরুরি। 


মুক্তিসংগ্রাম যাদুঘর ট্রাস্টির সাধারণ সম্পাদক মো. হিল্লোল সরকার জানান, আগে গ্রামের প্রতিটি পাড়া মহল্লায় গ্রাম বাংলার কৃষ্টি কালচার নিয়ে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। কিন্তু কালের পরিক্রমায় আজ সবই হারিয়ে যাচ্ছে। এতে আস্তে আস্তে দেশের যুবসমাজ মাদকের কবলে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। তাই তরুণ প্রজন্মকে মাদকের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা ও সচেতন করতে আবারো গ্রামের পাড়া মহল্লায় এসব অনুষ্ঠান। সে চিন্তা থেকেই প্রথম বারের মতো এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, গ্রাম বাংলার জারি, সারি, বাউল গান আসর খুবই জমজমাট ছিল। শহরেও হয়তো এক সময়। এখন আর শহর তো দূরের কথা গ্রামেও হয় না। এখন হলো সব ফেসবুক আর ইউটিউবের বদৌলতে সব হারিয়েছে।


মুক্তিসংগ্রাম যাদুঘর ট্রাস্টির সভাপতি উৎপল কান্তিদর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান ছানা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মুক্তার হোসেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুনমুন জাহান লিজা, মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম মিঞা, সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ মো. হারুন অর রশীদ, মেলান্দহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মুক্তিসংগ্রাম যাদুঘর ট্রাস্টির সাধারণ সম্পাদক মো. হিল্লোল সরকারসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ মেলায় বিনোদনের জন্য রয়েছে লাঠি খেলা, সারি গান, মালশী গান, ক্বাসিদা, পালা গান, জারিগান, পুঁথিপাঠ, বাউল গান, ঘাটু গান, ধুয়া গান, মানিক পীরের কিচ্ছা, যাত্রাপালা, লোকগীতি বারোমাইস্যা ও নাটক। 


এছাড়াও লোকজ মেলায় থাকছে কাঁসা, পিতল ও মাটির তৈজসপত্রের প্রদর্শনী, গ্রামীণ কৃষি সরঞ্জাম ও লৌকিক বাদ্যযন্ত্রের প্রদর্শনী, মৃৎশিল্প তৈরির প্রদর্শনী, পিঠাপুলির প্রদর্শনী, জিলাপি, খাজা, গজা, মুড়িমুড়কির প্রদর্শনী, সাপখেলা, পুতুলনাচ, জেলেদের জাল বোনা, নকশিকাঁথা সেলাই প্রভৃতি । 

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর