কাসাভা চাষে উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য
দৈনিক জামালপুর
প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০২৪
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার পিঠাছড়া এলাকার পাহাড়ি বনভূমি। প্রায় তিন যুগ ধরে সেখানকার ১০ একর জমিতে অর্ধশতের বেশি প্রজাতির গাছসহ ছিল বিভিন্ন প্রাণির আবাসস্থল। মাঝেমধ্যে সেখানে ফল ও কাঠ সংগ্রহে যেতেন মালিক আবু তাহের। কিন্তু গত ডিসেম্বরে সেখানে গিয়ে আবু তাহের দেখেন- সব গাছপালা কেটে উজাড় করে ফেলা হয়েছে তার ১০ একরের বনভূমি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদসহ প্রভাবশালীরা গাছগুলো কেটে ফেলেন বলে জানান আবু তাহের। তিনি জানান, কাসাভা চাষের জন্য জায়গা তৈরি করতেই কাটা হয় সব গাছ ও ঝোপঝাড়। কাসাভা দক্ষিণ আমেরিকার একটি বিশেষ জাতের শস্য। যা স্থানীয়ভাবে শিমুল আলু নামে পরিচিত। গত কয়েক বছর ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে চাষ হচ্ছে এটি। শুধু আবু তাহেরের নয়, কাসাভা চাষের জন্য শতশত একর বনভূমি উজাড় করা হয়েছে বলে জানান খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা ও মানিকছড়ি উপজেলার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাসাভার মতো কন্দ শস্য চাষের জন্য বন কেটে ফেলা বৈজ্ঞানিকভাবে সঠিক নয়। বিশেষত পার্বত্য অঞ্চলে এ ধরনের কৃষি পদ্ধতি মাটি ক্ষয়ের দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং বাড়িয়ে তুলতে পারে ভূমিধসের ঝুঁকি। তারা বলছেন, ভূমিধস ও মাটির ওপরের স্তরের ক্ষয়রোধে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই) এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কর্তৃক নির্ধারিত সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক চাষাবাদ পদ্ধতি অনুসরণ করেন না কৃষকরা। এসআরডিআই অনুসারে, কৃষকদের পাহাড়ের ঢাল কাটার অনুমতি নেই। যদি তারা তা করে, তবে বৃষ্টির পানি উপরিভাগের মাটি ধুয়ে ফেলবে এবং ভূমিধস হবে। কাসাভা পাহাড়ে বা পাহাড়ের ঢালুতে চাষাবাদ না করে সমতল ভূমিতে চাষাবাদের পক্ষে মতামত দেন তারা। আবু তাহের বলেন, বিভিন্ন বন্যপ্রাণী যেমন- বানর, লজ্জাবতী বানর, গন্ধগোকুল, বিভিন্ন পাখি ও সাপের আবাসস্থল ছিল এ বনভূমি। গাছ ও ঝোপঝাড় কেটে ফেলার পরে এসব প্রাণীদের এখন আর এখানে দেখা যায় না। কাসাভা চাষের জন্য জমির মালিকদের অনেকে নিজেদের জমি ইজারা দিচ্ছেন। আমি সেটি করিনি, তাই জোর করে আমার বন ধ্বংস করা হয়েছে। তাহেরের জমিসহ প্রায় ২০০ একর জমিতে কাসাভা চাষ করছেন মাটিরাঙ্গার বাসিন্দা জামাল উদ্দিন। কাসাভা চাষের জন্য বন পরিষ্কার করার কথা স্বীকার করেছেন জামাল। কিন্তু জোর করে কিংবা মালিকদের সম্মতি ছাড়াই জমি নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। তিনি বলেন, আমি এসব জমি ইজারা নিয়েছি। জবরদস্তি কিংবা দখলের অভিযোগ সত্য নয়। অনেক সময় মালিকের অনুপস্থিতিতে এসব জমির তত্ত্বাবধায়করা ইজারার টাকা লেনদেন করেন। একইভাবে জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাসাভা চাষের সঙ্গে জড়িত আহসান উল্লাহ নামে আরেকজন। বেলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক এ সদস্য বলেন, জমির মালিকরা স্বেচ্ছায় তাদের জমি আমাদের কাছে ইজারা দিয়েছেন। আমরা প্রতি বছর একর প্রতি ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করি, সাধারণত জুন থেকে জুন পর্যন্ত হিসাব হয়। এ বছর ৭০ একর জমিতে কাসাভা চাষ করেছি। প্রাণ এগ্রো বিজনেস লিমিটেড ও রহমান কেমিক্যাল লিমিটেডের তথ্য বলছে, খাগড়াছড়িতে সর্বমোট ছয় হাজার ৬০০ একর কাসাভা বাগান রয়েছে তাদের। দুই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ২০২৬ অর্থবছরের মধ্যে কাসাভা চাষ ১৫ হাজার একর পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা। এরমধ্যে প্রাণ এগ্রোর লক্ষ্য রাঙ্গামাটিতে কাসাভা চাষ ৩৭৮ একর থেকে এক হাজার একরে উন্নীত করা। ২০২৪ অর্থবছরে ১৫০ একর বনভূমি দিয়ে বান্দরবানে কাসাভা চাষ শুরু করে প্রাণ এগ্রো। ২০২৬ অর্থবছরে তা এক হাজার একরে পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে তাদের। পিঠাছড়া বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতা মাহফুজ আহমেদ রাসেল বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কাসাভা চাষের দ্রুত বিস্তার উদ্বেগজনক। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বনাঞ্চল পুরোপুরি বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ চাষাবাদ আমাদের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও বন্য প্রাণীদের জন্য ক্ষতিকারক এবং জলবায়ু সংকটকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। প্রায় ১৯ বছর পার্বত্য জেলাগুলোতে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (শস্য) মো. ওমর ফারুকের। অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এ ব্যক্তি বলেন, পাহাড়ে বর্তমানে কাসাভা, কচু, আনারস, আদা ও হলুদ চাষাবাদে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে না। তদুপরি কাসাভার শিকড় খুব গভীরে যায়। ফসল তোলার সময় পাহাড় এবং ঢালে ব্যাপক মাটি খননের প্রয়োজন হয়। এতে বর্ষা মৌসুমে ভূমিক্ষয় হয়, যা পাহাড়ে ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়ায়। বন ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার করার সময় কৃষকরা কখনো কখনো আগাছানাশক ওষুধ ব্যবহার করে ঝোপঝাড় উজার করে, যা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্যও হুমকিস্বরূপ। যদিও কাসাভা চাষের কোনো তথ্য নেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কাছে। জানতে চাইলে অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (রাঙ্গামাটি অঞ্চল) তপন কুমার পাল বলেন, যেহেতু পুষ্টিগুণ সম্বলিত অর্থকরী ফসল হিসেবে কাসাভার প্রাধান্য পাচ্ছে এবং এর বাণিজ্যিক আবাদ বিস্তৃত হচ্ছে, সেহেতু এর উৎপাদন যেন পরিবেশগতভাবে টেকসই পদ্ধতিতে করা হয় তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে মাটির ক্ষয়রোধে মাটি খনন কমিয়ে আনা জরুরি। কেন চাষ করা হয় কাসাভা? পুষ্টি উপাদানের জন্য অনেক দেশে জনপ্রিয় খাবারের একটি কাসাভা। বাংলাদেশে কাসাভার স্টার্চ পাউডার টেক্সটাইল ও ফার্মাসিউটিক্যালসের মতো শিল্পে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এর বেশিরভাগই আমদানি করতে হয়। চাহিদা মেটাতে কাসাভা চাষ করছে স্থানীয় কোম্পানিগুলো। বর্তমানে দেশে বছরে ৫০ হাজার টনেরও বেশি কাসাভা উৎপাদন হয়, যা চাহিদার মাত্র দুই শতাংশ। কাসাভা ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে আহরণ করা হয়, রোপণের পর সময় লাগে প্রায় সাত থেকে আট মাস। পার্বত্য চট্টগ্রামে চুক্তি-ভিত্তিক চাষাবাদের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে কাসাভা চাষ করছে রহমান কেমিক্যাল লিমিটেড ও প্রাণ এগ্রো বিজনেস লিমিটেড। চুক্তি-ভিত্তিক চাষাবাদের মাধ্যমে দেশে ২০১৪ সালে কাসাভা প্রকল্প শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ১২ দশমিক পাঁচ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে ২০১৩ সালে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হবিগঞ্জে একটি স্টার্চ এবং তরল গ্লুকোজ প্ল্যান্ট স্থাপন করে তারা। বেলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আহসান উল্লাহ বলেন, কাসাভা চাষের জন্য প্রায় ৮০ শতাংশ টাকা অগ্রিম দেয় প্রাণ। প্রতি একর জমির জন্য আমাদের প্রায় ২০ হাজার টাকা দিয়েছে তারা। ৩০ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে আমাদের। প্রতি একর জমিতে আমরা প্রায় ছয় দশমিক পাঁচ টন কাসাভা উৎপাদন করতে পারি এবং প্রাণ আমাদের কাছ থেকে তা কিনে নেয়। বর্তমানে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর ও কুমিল্লাসহ বেশ কয়েকটি জেলায় কাসাভা চাষ হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় খাগড়াছড়িতে। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলায় ১৩০০ একরজুড়ে রহমান কেমিক্যালের কাসাভা প্রকল্প রয়েছে বলে জানান তাদের প্রকল্প পরিচালক রেজাউল করিম। অনিয়ন্ত্রিত চাষ, ধ্বংস হচ্ছে বনাঞ্চল পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট বনভূমির প্রায় ৩১ শতাংশ পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থিত। যার ৮৪ শতাংশ প্রাকৃতিক এবং ১৬ শতাংশ আবাদি। বান্দরবানের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুর রহমান জানান, আম, আনারসসহ বিভিন্ন ফলের বাগানের পাশাপাশি বিভিন্ন কন্দ শস্য যেমন- আদা, কচু পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক পাহাড়ি বনাঞ্চল ধ্বংস করছে। বর্তমানে কাসাভা পার্বত্য চট্টগ্রামে আরেকটি হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে- যে গত তিন দশকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বনাঞ্চল দ্রুত হ্রাস পেয়েছে, মূলত বিভিন্ন মনুষ্যসৃষ্ট বাগান এবং কন্দ শস্য চাষের কারণে। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ২০২৪ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়িতে বন উজাড়ের কার্বন পরিণতি: একটি জিআইএস এবং রিমোট সেন্সিং পদ্ধতি’ শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৯০ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে ৪০ দশমিক ৫০ শতাংশ বনভূমি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বাণিজ্যিক কৃষির পরিবর্তনের কারণে পাহাড়ে বন উজাড় এবং ভূমি অবক্ষয়ের মতো ঘটনাগুলো ঘটছে বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আরইডিডি স্ট্র্যাটেজি (বিএনআরএস)। বিএনআরএস অনুসারে, বন উজাড়ের পরে প্রায় ৯৬ দশমিক ৫১ শতাংশ জমিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছোট গাছ, বাগান এবং অন্যান্য বৃক্ষরোপণের (গুল্ম) জন্য ব্যবহৃত হয়। এভাবে করা হয় মূলত স্থানান্তরিত চাষের জন্য, যেখানে ছোট অঞ্চলগুলো চাষের জন্য পরিষ্কার করা হয় এবং কয়েক বছর পরে পরিত্যক্ত হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য বলছে, পার্বত্য অঞ্চলে প্রায় ৩৯ ধরনের ফল ও তিন ধরনের কন্দ জাতীয় শস্য চাষ হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় দুই লাখ ৪৩ হাজার ৯৮১ একর জমিতে ফলের চাষ হয়েছে এবং তা প্রতিবছরই বাড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে জমির পরিমাণ ছিল দুই লাখ ৬২ হাজার ৪৫৩ একর। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (শস্য) মো. ওমর ফারুক বলেন, আদা, হলুদ, কচু ও কাসাভার মতো কন্দ ফসল চাষের ফলে প্রতি হেক্টরে (দুই দশমিক ৪৭ একর) ৫৮ টন থেকে ৮০ টন পর্যন্ত মাটির ওপরের স্তর ক্ষয় হয়। মাটিরাঙ্গা উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমজাদ হোসেন ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, সমতল ভূমিতে কাসাভা চাষাবাদ করলে তেমন ক্ষতি নেই। কিন্তু পাহাড়ি টিলায় চাষাবাদ করলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এ ব্যাপারে চাষিদের সচেতন করতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কোথায় যাচ্ছে পানির স্তর? সম্প্রতি পিঠাছড়া পাহাড়ি ঝরনা ঘুরে দেখা যায়, প্রায় শুকিয়ে গেছে গোমতী নদীতে মিশে যাওয়া এ ঝরনা। প্রায় বিলীন হয়ে গেছে সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এ ছড়ার এক কিলোমিটার এলাকার, বাকি অংশও হারিয়ে যাওয়ার পথে। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বন উজাড় আদিবাসীদের জন্য সৃষ্টি করছে সংকট। জলপ্রপাত, খাঁড়ি ও ছড়ার মতো প্রাকৃতিক জলের উৎসের ওপর নির্ভরশীল মানুষরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেশি। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ অবস্থার আরো অবনতি ঘটছে। বন উজাড় পানি সংকটের প্রধান কারণ। ক্রমবর্ধমান বন উজাড়ের ফলে পানির স্তর শুকিয়ে যাচ্ছে- বলছেন স্থানীয়রা। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ধ্বংসের জন্য কর্পোরেট কোম্পানিগুলোকে দায়ী করেন বন গবেষক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন। তার মতে, বনগুলো প্রাকৃতিক স্পঞ্জ হিসেবে কাজ করে, যা বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে এবং ধীরে ধীরে এটি পাহাড়ি স্রোতের মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। যার ওপর বন্যপ্রাণী এবং আদিবাসীরা নির্ভর করে। এ বন গবেষক বলেন, ফল ও কন্দ জাতীয় শস্য চাষের জন্য গাছ কাটা এবং পাহাড়ের ঢাল ভেঙে ফেলার ফলে পাহাড়ের পানির প্রবাহ হ্রাস পায়। যা মারাত্মক পানি সংকট সৃষ্টি করে। এটি পাহাড়ে বসবাসকারী এবং বন্যপ্রাণী উভয়কেই বিপন্ন করে, তাদের পাহাড়ে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে বাধ্য করে এবং মানুষ ও বন্যপ্রাণীর মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করে। বাস্তুতন্ত্রের ভবিষ্যত কি? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক তত্ত্বাবধানের অভাবে আশঙ্কাজনক হারে বিলীন হচ্ছে বনাঞ্চল। ভেঙে পড়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের পুরো বাস্তুতন্ত্র। তাদের মতে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস করে এক জাতীয় ফসল চাষ খুবই বিপজ্জনক কাজ। বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে কাসাভা চাষ, যা খুবই উদ্বেগজনক। বাস্তুশাস্ত্র ও জীববৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ পাভেল পার্থ বলেন, সেগুন, রাবার, তামাক, ইউক্যালিপটাস এবং বাবলা চাষের মনোকালচারের কারণে এ অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র এরমধ্যে বিপন্ন হয়ে পড়েছে। তাই কাসাভা পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে। বাণিজ্যিক কাসাভা চাষ শুধু বন্যপ্রাণী ও স্থানীয় আদিবাসীদের খাদ্য সংকটই সৃষ্টি করছে না, তাদের চলাচলের পথ ও বাসস্থান দখল করে নিচ্ছে- উল্লেখ করেন তিনি। দায় তাহলে কার? পাহাড়ি বনাঞ্চলে কাসাভা চাষের কথা স্বীকার করে রহমান কেমিক্যালের কাসাভা প্রকল্প পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, আমরা পরিবেশের ক্ষতি করছি না। আমরা তুলনামূলক সমতল জমিতে চাষাবাদ করি। একই প্রসঙ্গে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, আমরা এমনভাবে চাষাবাদ করি না, যেন জীববৈচিত্র্য, বন্যপ্রাণী ও বনের ক্ষতি হয়। আমরা পাহাড় কাটি না। যেসব এলাকায় জীববৈচিত্র্য বা বন্যপ্রাণীর সঙ্গে কোনো সংঘর্ষ নেই সেসব এলাকায় আমরা চাষাবাদ করি। যেখানে গাছ ও পাহাড় কাটার প্রয়োজন নেই, সেখানে অব্যবহৃত বা অনাবাদি জমিতে চাষাবাদ করতে কৃষকদের উৎসাহিত করছি। মাটিরাঙ্গা উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কাসাভা চাষের কারণে পাহাড়ের ক্ষতি হতে পারে। তবে এটি একটি লাভজনক ফসল, নিয়ম মেনে চাষ করলে কৃষক লাভবান হবেন। নির্বিচারে ফল ও কন্দ জাতীয় শস্য চাষ নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে অদূর ভবিষ্যতে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম হুমকির মুখে পড়বে বলে সতর্ক করেন বন গবেষক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন। কাসাভা চাষিদের মাটির ক্ষয়রোধে আধুনিক চাষ পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন রাঙ্গামাটির মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম। তার মতে, কাসাভা চাষিদের মাটির ক্ষয়রোধে আধুনিক চাষ পদ্ধতি যেমন- কনট্যুর লাইন, বেঞ্চ টেরেস, হিল স্লোপ অ্যাক্রস দ্য হিল স্লোপ, স্ল্যাশ ও মালচ উইথ অ্যাগ্রোফরেস্ট্রি পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সবুজ আলী ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, পাহাড়ে সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিকভাবে কাসাভার চাষ করার ফলে মাটির টপ সয়েলের কিছুটা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু কাসাভা রুট ক্রপ সেহেতু সাবধানতার সঙ্গে কাসাভা উত্তোলন করতে হবে। তাছাড়া কাসাভা একটি ব্যাপক সম্ভাবনার ফসল। ফসল ভালো হলে প্রতি হেক্টরে ৪০ থেকে ৫০ টন উৎপাদন হতে পারে। কাসাভায় যথেষ্ট পরিমাণে কার্বোহাইড্রেড রয়েছে। তাছাড়া এটি ভাতের বিকল্প খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
- গ্রীণ টিভিতে চলমান অস্থিরতায় বিএফইউজের উদ্বেগ
- বুদ্ধ পূর্ণিমায় কোন ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই : ডিএমপি কমিশনার
- উন্নত বিশ্বকে কার্বন নি:সরণ কমানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কমবে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ
- ভোলার বোরহানউদ্দিনে ৪৮ জেলের মধ্যে বকনা বাছুর বিতরণ
- সিলেটে `এলজিসিআরআরপি`র বিভাগীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত
- জাতীয় হেল্পলাইন কল সেন্টারের কর্মপরিধি ও সময়সীমা বাড়াচ্ছে
- গাজীপুরে কলোনিতে অগ্নিকান্ড : বসতঘর ও দোকান ভস্মীভূত
- শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন : ওবায়দুল কাদের
- বাড়তে পারে দিন ও রাতের তাপমাত্রা
- সেলিম প্রধানের প্রার্থিতা বাতিলের আদেশ বহাল
- পঞ্চগড়ে সুপারির খোল দিয়ে তৈরি হচ্ছে আকর্ষণীয় প্লেট, বাটি, চামচ
- নাটোরে উন্নয়ন সম্পৃক্ততার লক্ষ্যে নারী সমাবেশ
- লক্ষ্মীপুরে ৩ হাজার কৃষকের মধ্যে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ
- সাতক্ষীরায় কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সিপিডি’র সংলাপ অনুষ্ঠিত
- শেখ হাসিনা’র স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে আ’লীগের কর্মসূচি
- স্লোভাক প্রধানমন্ত্রী ফিকো’র জীবন ঝুঁকিমুক্ত: উপ-প্রধানমন্ত্রী
- দিনাজপুরে কৃষকদের মাঝে ২০টি হারভেস্টার ধান কাটা মেশিন বিতরণ
- চুয়াডাঙ্গায় আম সংগ্রহ উদ্বোধন
- বেইজিংয়ে পুতিনের রাষ্ট্রীয় সফর শুরু
- যশোরের ৬ উপজেলায় ৬৬৩ কেন্দ্রের ৫১৮৫ কক্ষে ভোটগ্রহণ হবে
- কার্যকর জনসংখ্যা ব্যবস্থাপনার ওপর জোর প্রধানমন্ত্রীর
- নারীবান্ধব শিক্ষানীতির কারণে মেয়েরা এগিয়ে: প্রধানমন্ত্রী
- সেমিকন্ডাক্টর খাতে ১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের সম্ভাবনা
- রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে না
- বিপিসির এলপি গ্যাস বটলিং প্ল্যান্ট আধুনিকায়ন, জুনে চালু
- প্রত্যাশা নতুন অধ্যায়ের
- রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ১১০ বিলিয়ন ডলার
- একক গ্রাহকের ঋণসীমা অতিক্রম না করতে নির্দেশ ব্যাংকগুলোকে
- দেশি শিং মাছের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচনে সফলতা
- চাঁদপুরে প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন
- আন্তর্জাতিক নার্স দিবস আজ
- ডা. জাকির হোসেন: উচ্চ রক্তচাপ রোগের একজন নিরলস চিকিৎসা কর্মবীর
- অতিরিক্ত সচিব পদে ১২৭ জনকে পদোন্নতি
- কাঁচা আম ১৬ ধরনের রোগ থেকে বাঁচায়
- ন্যাশনাল রোমিং এর সুবিধায় রবি নেটওয়ার্কেও চলবে টেলিটক সিম
- যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব বাঁচত
- চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সরকার বদ্ধপরিকর
- নন্দীগ্রামে অধ্যক্ষের পর গভর্নিং বডির পদ হারালেন সবুজ
- অপরিচিতদের সঙ্গেও চ্যাটিংয়ে সুযোগ দেবে হোয়াটসঅ্যাপ
- ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম : শেখ হাসিনা
- কবে আসছেন ডি মারিয়া, যা জানা গেল
- পিরোজপুরে নির্মিত হতে যাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন জেলা সার্কিট হাউজ
- স্মার্টফোন বাজারে অ্যাপলকে ছাড়িয়ে শীর্ষে স্যামসাং
- জামালপুরে স্কুল ছাত্রী অপহরণ-ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামী গ্রেপ্তার
- জামালপুরে পিকআপের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
- ভারত সিরিজের জন্য শক্তিশালী বাংলাদেশ দল ঘোষণা
- ফলোআপ: মেলান্দহ দুরমুঠ মেলায় অভিযান
- মেলান্দহে সম্পত্তির বিরোধে বৃদ্ধ খুন : আটক-৩
- আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড