• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

দুর্যোগ মুহুর্তেও জামালপুরের উন্নয়নের কথা ভুলেননি মির্জা আজম এমপি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২০  

বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের এই মহাদুর্যোগে জামালপুরের মানুষের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি। করোনা ভাইরাস আতঙ্কে যে সময় অনেক জনপ্রতিনিধিই নিজ এলাকা থেকে দূরে রয়েছেন, সেই সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় দুইমাস ধরে নিজ এলাকায় অবস্থান করে নেতাকর্মীদের মানবসেবায় এগিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত করছেন তিনি। সেইসাথে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে পৌঁছে দিচ্ছেন সেবা। 

 

নিজের শারীরিক অবস্থার দিকে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করে প্রতিদিন সকাল থেকেই কোন না কোন এলাকায় ছুটছেন নিজেই।

 

ইতিমধ্যে শহরের ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেষে “বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ নূরুল আমিন প্রশস্ত সড়ক উদ্বোধন করা হয়েছে। শেরপুর সেতু থেকে শহরের ফৌজদারি মোড় পর্যন্ত সড়কটি হওয়ার ফলে শহরে যানজট থাকবে না। শুধু সড়কই নয়, মানুষের চিত্তবিনোদনের জন্য ‘হাতিরঝিল’ এর মতো প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

 

সেই কাজ দেখতে সশরীলে হাজির আজ জামালপুর পৌর কার্যালয়ে পৌরসভার চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের অগ্রগতি ব্যাপারে খোঁজ খবর নেন।

 

দেশের এই ক্রান্তিকালে সারা পৃথিবী যখন এক ভয়াল ভাইরাসে আক্রান্ত, মানুষ যখন ভীতসন্ত্রস্ত,কিন্তুু জামালপুর বাসীকে নিরাপদে রাখতে নিরলস মাঠে ময়দানে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী যুবকন্ঠ মির্জা আজম এমপি।

 

এসময় উপস্থিত ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি, প্যানেল মেয়র ফজলুল হক আকন্দসহ পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

 

করোনা দুর্যোগে কর্মহীন মানুষদের সরকারিভাবে প্রাপ্ত অনুদানের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ভাবেও অর্থ, খাদ্য, কৃষি যন্ত্রপাতি সহায়তা করে যাচ্ছেন। জামালপুরের মানুষের দ্রুত সময়ের মধ্যে করোনা শনাক্ত নিশ্চিত করতে আরটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করেছেন তিনি। 

 

দুই মাসেরও বেশি সময়ধরে চলা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে বিপর্যস্থ বাংলাদেশের মানুষ। করোনা সংক্রমণ থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার স্বার্থে সরকার সারাদেশে জরুরি সেবা ব্যতিত সবকিছু বন্ধ রেখেছে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষসহ প্রায় সবশ্রেণীর মানুষই করোনা দুর্যোগের ক্ষতির শিকার হয়েছেন। তাই করোনার এই মহাদুর্যোগে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব জনপ্রতিনিধিদের দুর্যোগের এই সময়ে নিজ এলাকায় গিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অনেক জনপ্রতিনিধই করোনা আতঙ্কে নিজ নির্বাচনী এলাকা থেকে দূরে রয়েছেন। কিন্তু জামালপুরের মানুষের আশা আকাঙ্খার প্রতিক মির্জা আজম বরাবরই সবার চেয়ে ব্যতিক্রম। করোনার এই মহাদুর্যোগেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন, সেবা দিচ্ছেন। 

 

জাতীয় সংসদের একজন সদস্য হিসেবে জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসন থেকে ৩০ বছর ধরে প্রতিনিধিত্ব করছেন মির্জা আজম। সংসদ সদস্য হিসেবে তার এই দীর্ঘ সময়ে জামালপুরের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড হলেও টানা দু’ মাস নিজ এলাকায় অবস্থান করার সুযোগ হয়নি কখনো। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের এই মহাদুর্যোগে নিজ এলাকার মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে গত ৪ এপ্রিল থেকে জামালপুরে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। 

এই সময়ে নিজের নির্বাচনী এলাকা মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত কর্মহীন ৫০ হাজার পরিবারের মাঝে সরকারি ১ হাজার টন চালের সাথে ব্যক্তিগত ভাবে  ৪০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে ডাল, তেল, আলু, পিয়াজ, সাবান বিতরণ করেছেন। নিজের মায়ের নামে গঠিত নুরুন্নাহার মির্জা কাশেম মেমোরিয়াল ট্রাস্ট্রের মাধ্যমে ইতিমধ্যে মাদারগঞ্জ উপজেলার ৫শ দুস্থ পরিবারের মাঝে নগদ ৫ লক্ষা টাকা বিতরণ করেছেন এবং আরও দুস্থ পরিবারকে সহায়তা করার জন্য অর্থ সংগ্রহ করছেন। 

 

করোনা ভাইরাসের কারনে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার স্বার্থে রমজানে মসজিদে সীমিত সংখ্যক মুসল্লি হওয়ার কারনে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও আলেমরা অর্থ সংকটে পড়ায় ব্যক্তিগত অর্থায়নে মাদারগঞ্জ উপজেলার ৬০৮ এবং মেলান্দহ উপজেলার ৬০৫টি মসজিদের ৩ হাজার ইমাম, মুয়াজ্জিন ও আলেমদের মাঝে ঈদ উপহার হিসেবে চাল, ডাল, চিনি, লবন, সেমাই, সাবানসহ খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন। এছাড়াও একইদিন ঈদ উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঠানো ৫ হাজার টাকা করে চেক প্রতিটি মসজিদে বিতরন করেছেন। 

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা পরবর্তী সময়ে যাতে দেশে কোন খাদ্য সংকট তৈরী না হয় সেই লক্ষ্যে কৃষকদের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি নিজের নির্বাচনী এলাকা মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলায় সরকারের অর্ধেক ভর্তুকিমূল্যে ৭টি বড় এবং ১২টি ছোট কমবাইন্ড হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করেছেন। এ সময় মির্জা আজম খাদ্য খাটতি রোধে এক ইঞ্চি কৃষি জমিও অনাবাদি না রাখার আহ্বান জানান কৃষকদের প্রতি। মির্জা আজম শুধু নিজের নির্বাচনী এলাকার মধ্যেই তার দায়িত্ব সীমাবন্ধ না রেখে আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করে জেলার প্রতিটি উপজেলায় দলীয়ভাবে দুস্থ মানুষদের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করেছেন। 

 

এ ব্যাপারে মির্জা আজম এমপি বলেন, আমার জনপ্রতিনিধি হওয়া জীবনে আমি কখনো টানা দু’মাস জামালপুরে অবস্থান করার সুযোগ পাইনি, তবে এবার পেয়েছি। তাই মানুষকে ঘরে ঘরে গিয়ে সেবা দেয়ার যে আনন্দ সেটা আমি উপভোগ করছি। বিশেষ করে আমার দলীয় নেতাকর্মীরা যে যেভাবে পারছে সাধ্যমত দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। দেশের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করার তো এটাই উপযুক্ত সময়। তবে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে করোনা আক্রান্ত আইসোলেশনে থাকা রোগীদের আমি যখনই ফোনে খোঁজ খবর নিয়েছি, তারা আমাকে বলেছে ভাই আপনি যখন খোঁজ রাখছেন করোনা আমাদের কিছুই করতে পারবে না। তাদের সেই আবেগ সত্যিই আমার চোখে পানি এনে দিয়েছে। 

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর