শিশু পর্নোগ্রাফির মূলহোতাসহ দু’জন গ্রেফতার

আন্তর্জাতিক শিশু পর্নোগ্রাফির মূলহোতাসহ দু’জনকে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকা থেকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি’র স্পেশাল এ্যাকশন গ্রুপ বিভাগের এন্টি-ইলিগ্যাল আর্মস রিকোভারি টিম। এসময় এক শিশু ভিকটিম উদ্ধার, শিশু পর্নোগ্রাফির কনটেন্ট ও পর্নোগ্রাফি তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- টি আই এম ফখরুজ্জামান ওরফে টিপু কিবরিয়া ও মো. কামরুল ইসলাম ওরফে সাগর। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেসন্স বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত টি আই এম ফকরুজ্জামান এক সময়কার খুব জনপ্রিয় শিশু সাহিত্যিক। সে টিপু কিবরিয়া নামে পরিচিত। ২০০৫ সাল থেকে শিশু পর্নোগ্রাফি তৈরি ও বিতরণের সাথে জড়ায় টিপু কিবরিয়া। দীর্ঘদিন এই অপরাধের সাথে জড়িত থাকার পর ২০১৪ সালে সিআইডির কাছে গ্রেফতার হন এবং তার নামে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়। ২০২১ সালে জেলখানা থেকে ছাড়া পেয়ে পুনরায় সাহিত্য নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে টিপু কিবরিয়া। ‘একশো এক’ নামে একটি কবিতার বই প্রকাশ করে। একই সাথে, সাহিত্য চর্চার আড়ালে পুনরায় শিশু পর্নোগ্রাফির সেই পুরনো পথেই হাঁটতে শুরু করে টিপু কিবরিয়া। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে ছিন্নমূল ছেলে পথশিশুদের ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফি কন্টেন্ট বানায়। সে নিজে গুলিস্তান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ছিন্নমূল ছেলে পথশিশুদের সামান্য কিছু অর্থের লোভ দেখিয়ে নিজের বাসায় ডেকে এনে ক্যামেরার সাহায্যে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির নগ্ন ছবি তোলে এবং ভিডিও করে। নিজের বাসা ছাড়াও বিভিন্ন পার্কের নির্জন ঝোপঝাড়ে এই ছিন্নমূল ছেলে শিশুদের অশ্লীলছবি ও ভিডিও ধারণ করে। এই ছিন্নমূল ছেলে শিশুদের সংগ্রহ করার জন্য তার কয়েকজন সহযোগীও রয়েছে। যাদের মধ্যে একজন সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে তার ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো হতে প্রায় ২০ জন পথশিশুর ছবি সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। এই অশ্লীল ছবিগুলো বিভিন্ন নিষিদ্ধ ও পর্নোগ্রাফির ওয়েবসাইটে আপলোড করে। অভিযানের সময় তার ব্যবহৃত ক্যামেরা, পিসি ও ক্লাউড স্টোরেজ থেকে প্রাথমিকভাবে প্রায় ২৫০০ শিশু পর্নোগ্রাফির উদ্দেশ্যে তোলা স্থিরচিত্র ও প্রায় ১০০০ ভিডিও কনটেন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া তার ডেস্কটপে অসংখ্য ছিন্নমূল ছেলে পথশিশুদের প্রচুর অশ্লীল ছবি ও ভিডিও পাওয়া গিয়েছে। সিটিটিসি জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত টিপু কিবরিয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে বাংলায় ¯œাতক এবং ১৯৮৮ সালে ¯œাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯১ সালে সেবা প্রকাশনীতে সহকারী সম্পাদক পদে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। তিনি ফ্রিল্যান্স আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি শিশুসাহিত্য রচনা করতেন।