• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

সূর্যমুখীর হাসিতে স্বপ্ন

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২৩  

হলুদ রঙের নান্দনিক একটি ফুল সূর্যমুখী। দেখতে সূর্যের মত এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। তাই এই ফুলকে সূর্যমুখী বলে। সূর্যমুখী থেকে তৈরি তেলও পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ। বিশ্বেজুড়েই সূর্যমুখী তেলের চাহিদা এখন ব্যাপক। রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে সূর্যমুখীর ফুলের। সূর্যমুখীর হাসিতে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার স্বপ্নে বিভোর চাষি। প্রথম বছরেই ফুলের চাষ করে সফলতার সম্ভাবনা দেখছেন চাষিরা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি তিন পার্বত্য জেলায় বাণিজ্যিকভাবে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে পার্বত্য
এলাকার দারিদ্রতা হ্রাসকরণ কর্মসূচি হিসেবে সূর্যমুখী চাষের জন্য ২৫ লাখ টাকার একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে প্রায় ১৮ হেক্টর জমিতে। 

তিন পার্বত্য জেলায় ২০ জন করে মোট ৬০ জন চাষি সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। এর মধ্যে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে, রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলায়, বান্দরবান সদর উপজেলায় এবং খাগড়াছড়ির সদর উপজেলায়।

নানিয়ারচর উপজেলার ৪ নম্বর ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের পুকুরছড়ি এলাকা চাষি লিপন চাকমা জানান, চলতি মৌসুমে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে তিনি এক একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। সফলতার মুখও দেখছেন। আগামীতে এই চাষ আরো বাড়াবেন বলে তিনি জানান।

ভূঁইয়া আদাম ইউনিয়নের চাষি ত্রিজীবন চাকমা জানান, আগে তার জমিতে ধানের চাষ করা হতো। এই প্রথম অনেকটাই শখের বশে তেলের জন্য তিনি সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। বাম্পার ফলনের আশাও করছেন তিনি। 

ভূঁইয়া আদাম ইউনিয়নের সাবেক সদস্য প্রীতি চাকমা জানান, এবার প্রথম তার ইউনিয়নে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। তিনি আশা করছেন, ধানের চেয়ে সূর্যমুখী ফুল চাষে বেশি লাভবান হবেন চাষিরা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প পরিচালক জসীম উদ্দিন জানান, দেশীয় ঘানি ব্যবহার করে পরিপক্ক সূর্যমুখী ফুলের বীজ থকে তেল ভাঙানো যায়। স্বাস্থ্যঝুঁকিও কম এই তেলে। পার্বত্য অঞ্চলে প্রথমবারের মতো এই তিন পার্বত্য জেলায় তেলজাতীয় ফসল সূর্যমূখী হাইসেন-৩৬ জাতের চাষ করেছেন চাষিরা। এতে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। বাস্পার ফলনের ফুল ফোঁটায় সফলতার আলো দেখছেন তারা। 

তিনি আরো জানান, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাষিদের বীজ, সারসহ প্রযুক্তিগত সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এবার প্রতি হেক্টর জমিতে দুই থেকে আড়াই মণ বীজ উৎপাদন হবে বলে ধারণা করছেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, দেশে ভোজ্য তেলের একটি ঘাটতি। তাই বাইরে থেকে আমাদের আমদানি করতে হয়। সেজন্যই সূর্যমুখী ফুল চাষের মাধ্যমে একটু হলেও ভোজ্য তেলের চাহিদা মিটাতে পারব।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর