• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

কালীগঞ্জে লটকনের বাম্পার ফলন

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০২৩  

গাজীপুরের কালীগঞ্জে লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে পাল্টে গেছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকের অর্থনৈতিক চিত্র। দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের বাজার দখল করতে পারায় এই ফলের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বেড়েই চলছে। কৃষি অফিস বলছে, কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় প্রতি বছর এ ফল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। 

সরেজমিনে উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের বরাইয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ওই গ্রামের লটকন চাষি মো. আতিকুল্লাহ ভূঁইয়ার বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে টক-মিষ্টি স্বাদের লটকন। টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে হলুদ রঙে পরিপক্ব হয়েছে সুস্বাদু এ ফল।


ভিটামিন-সি, প্রোটিন ও ক্যালরি যুক্ত মুখরোচক এ ফল পেতে পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক আতিকুল্লাহ। বাজারজাতকরণের আগ মুহূর্তে নানা পদ্ধতিতে পোকামাকড় দূর করছেন তিনি। একই চিত্র দেখা যায়, উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের বড়গাঁও, জামালপুর ইউনিয়নের গোল্লারটেক, নাগরী ইউনিয়নের নগরভেলা ও সেনপাড়া গ্রামে। 


উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, কালীগঞ্জের নাগরী, জাঙ্গালীয়া, জামালপুর ও মোক্তারপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে লটকন। তবে কম খরচে ভালো ফলন ও অধিক লাভ হওয়ায় প্রতি বছর বাড়ছে এ ফল চাষির সংখ্যা। গেল বছর উপজেলার ১৯ হেক্টর জমিতে ১১৪ টন লটকন উৎপাদন হয়েছে। তবে চলতি বছর এর ফলন বাড়ার পাশাপাশি কমপেক্ষ ১ হেক্টর জমি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাছাড়া এলাকার লটকন রফতানি হচ্ছে  বিদেশেও।


উপজেলার বড়গাঁও ভিটিপাড়া গ্রামের লটকন চাষি মোবারক হোসেন বলেন, আমার বাগানে ১২০টির মতো লটকন গাছ রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ফলনও খুব ভালো হয়েছে। লটকন ছায়ার মধ্যে হয়। 

চাষি হাবিবুল্লাহ বলেন, আমিও লটকন বাগান করেছি। তাছাড়া আশপাশের অনেকেই এই ফলটির চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের পরামর্শে লটকন চাষ করে আমি বেশ লাভবান। 

যুবক বিজয় দত্ত বলেন, এ ফলটি চাষে সহজেই বেকারত্ব দূর করা সম্ভব। আমি নিজেও এক সময় বেকার ছিলাম। এখন লটকন চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছি।  

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আজিজুর রহমান রুবেল বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা লটকন চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সঠিক পরিচর্যা ও সুষম সার ব্যবহারের মাধ্যমে এবার লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। 

উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, মাঠ পর্যায়ে চাষিদের চারা বিতরণ, রোপণ, পরিচর্যা ও রোগবালাই নিরসনে নানা পরামর্শসহ কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা অব্যাহত আছে। 

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিম বলেন, একটা সময় বসতবাড়িতে লটকন চাষ হত। তবে এর চাহিদা থাকায় এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এ ফল। তবে এ ফলটির বহুমুখী ব্যবহার করা যেতে পারলে লটকন থেকে আরো অর্থ আয় করা সম্ভব। 

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর