• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

বিট কর্মকর্তায় অতিষ্ঠ নিরীহ চরবাসী

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৫ আগস্ট ২০২৩  

ভোলার চর কচুয়াখালীর বিট কর্মকর্তা ওমর ফারুকের অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠ চরের বাসিন্দারা। ঘুষ নিয়ে বনের পাহারাদার নিয়োগ এবং তাদের ভাতার টাকা আত্মসাৎ, বিট অফিসে নিয়ে নিরীহ মানুষকে নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে গত ৭ আগস্ট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

লালমোহন উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর মধ্যবর্তী চর কচুয়াখালীর আবাসন প্রকল্পে নদীভাঙনে নিঃস্ব ৭০০ দরিদ্র পরিবারের বসবাস। এখানকার ৪০০ একর সংরক্ষিত ম্যানগ্রোভ বাগান রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন বিভাগের একটি বিট অফিস রয়েছে।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, ক্ষয়ক্ষতি থেকে এসব বন রক্ষা, চরবাসীর বিকল্প জীবিকা ও আয়বর্ধক কাজ সৃষ্টির জন্য টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। এর আওতায় স্থানীয়ভাবে ৩৬ জন পাহারাদার (বন টহল কমিটির সদস্য) নিয়োগ করা হয়। প্রতি মাসে তাদের দেড় হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা। তবে ১৭ মাসে একবার মাত্র ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

কয়েকজন পাহারাদারের ভাষ্যমতে, তাদের ভাতার ৯ লাখ ১৮ হাজার টাকার মধ্যে মাত্র ১৮ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। ৯ লাখ টাকাই বিট কর্মকর্তা ওমর ফারুক চৌধুরী আত্মসাৎ করেছেন। পাহারাদার পদে নিয়োগ পেতেও বিট কর্মকর্তাকে জনপ্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার ঘুষ দিতে হয়েছে।

বন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. আবু ছালেক জানান, অফিস থেকে ভাতার টাকা তুলে ওমর ফরুক আত্মসাৎ করেছেন।

এদিকে সুফল প্রকল্পের ১৩৪ জন সুবিধাভোগী মনোনয়ন করতে প্রায় ৩ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন ওই বিট কর্মকর্তা। সুবিধাভোগী বিধান তেলি, সঞ্জিব মজুমদার, মো. জামাল, বিবি কুলসুম, জেসমিন, লিপি, মুন্নি, মাসুদ, বাবুল, ইয়ানুর বেগমসহ কয়েকজন জানান, তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন ওমর ফারুক। বিনা পয়সায় তালিকাভুক্তির নিয়মের বিষয়টি তাদের জানা ছিল না।

বিধান তেলি জানান, নতুন রোপণ করা বাগানে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাঁর ও আবু ছালেকের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নেন। ওমর ফারুকের কথামতো কাজ না করায় তাদের চাকরি দেওয়া হয়নি।

মো. ইকবাল নামের এক যুবক অভিযোগ করেন, বন ব্যবস্থাপনা কমিটির ক্যাশিয়ার করার জন্য তাঁর কাছ থেকে ২৮ হাজার টাকা ঘুষ নেন বিট কর্মকর্তা।

শুধু সুফলভোগী নন, মসজিদে গভীর নভীর নলকূপ বসাতেও ১২ হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন ওই বিট কর্মকর্তা। একই প্রকল্পের আওতায় দুটি মসজিদে ও ছয়টি লোকালয়ে বসানো হয়েছে।

চরের মসজিদের ইমাম মাওলানা শাহিন দাবি করেন, তাঁর কাছ থেকে ঘুষ নেন ওমর ফারুক। চর কচুয়াখালীর বিট অফিসকে টর্চার শেলে পরিণত করেছেন তিনি।

ঘুষ নেওয়া ও পাহারাদারদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি দাবি করেন, দীর্ঘদিন একই স্থানে চাকরির কারণে মানুষ অপপ্রচার করছে। চরবাসীকে গাছ কাটতে বাধা দেওয়ায় তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।

ভোলার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়ছার বলেন, তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণ হলে ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন তিনি।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর