• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

বালু ব্যবসায়ীর দখলে পাঁচ একর জমি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৫ আগস্ট ২০২৩  

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের এক বালু ব্যবসায়ী ও তাঁর সহযোগীরা এক পরিবারের বিপুল জমি দখলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের ভয়ে ওই পরিবার এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছেন।

মঙ্গলবার হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী খুরশিদ মিয়া। তিনি আহম্মাদাবাদ ইউনিয়নের আশ্রাবপুর গ্রামের মাকসুদ মিয়ার ছেলে।

খুরশিদ মিয়া জানান, সাটিয়াজুরী গ্রামের মো. সেলিম মিয়া সন্ত্রাসীদের সাহায্যে বালুমহাল সংলগ্ন তাদের পারিবারিক পাঁচ একর ভূমি দখলে নিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে খুরশিদ মিয়া বলেন, তাঁর বাবা একজন সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর পৈতৃক সম্পত্তির আয়ের ওপর নির্ভর করে তারা দুই ভাই ও এক বোন কষ্টে জীবনযাপন করছেন। ২০২১ সালে সরকারি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে আশ্রাবপুর মৌজা বালুমহালের লিজভুক্ত হয়। বালু ব্যবসায়ী মো. সেলিম মিয়া বালুমহাল লিজ নেন। এক পর্যায়ে সেলিম মিয়া তাদের গ্রামের মৃত আ. ওয়াহেদ আনসারীর ছেলে আবদাল আনসারীর লাঠিয়াল বাহিনীর সাহায্যে বালুমহাল সংলগ্ন তাদের পৈতৃক পাঁচ একর জমি দখলে নেন।

খুরশিদ মিয়ার অভিযোগ, পৈতৃক সম্পত্তি রক্ষার জন্য তিনি বারবার প্রশাসনিক সাহায্য পেতে চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে প্রশাসনের আশ্বাসে তিনি সেলিম মিয়ার সঙ্গে আপসে যান। তিনি বালুমহালের ইজারদার সেলিম মিয়াকে ছয় মাসের জন্য তাদের জমি ব্যবহারের অনুমতি দেন। ২০২১ সালে ওই ছয় মাস অতিবাহিত হয়। পরে সেলিম মিয়া অন্যায় না করার আশ্বাসে আরও দুই-তিন মাস তাদের ভূমি ব্যবহারের জন্য তাঁর কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নেন। তিনি ঝামেলা এড়াতে এই অনুমতি দেন। ২০২১ সালের পর ২০২২ ও ২০২৩ সালে একইভাবে সেলিম মিয়া আবার ওই বালুমহাল লিজ নেন। এর পর তাঁর অনুমতি না নিয়েই জমি দখলে রাখেন।

খুরশিদ জানান, তিনি এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক, চুনারুঘাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। তাঁর অভিযোগ জেলা প্রশাসক তদন্তের নির্দেশ দেন। তবে সরেজমিন তদন্তের পর প্রতিবেদন পেতে তাঁকে ছয়-সাত মাস অপেক্ষা করতে হয়। এ সময়ে তিনি নানাভাবে অত্যাচারের শিকার হন। এ ব্যাপারে চুনারুঘাট থানায় অভিযোগ জানিয়ে তিনি প্রতিকার পাননি। থানা থেকে সহযোগিতা না পেয়ে তিনি হবিগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের আদেশে এ ব্যাপারে পিবিআই তদন্ত করছে।

সংবাদ সম্মেলেনে খুরশিদ আরও বলেন, গত ১৬ আগস্ট অবৈধ দখলদাররা এক্সক্যাভেটর দিয়ে তাদের জমি থেকে কয়েকশ ট্রাক মাটি কেটে বালুর সঙ্গে বিক্রি করে। তিনি পরদিন জাতীয় সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই সময় এক্সক্যাভেটর ও ট্রাক ফেলে বালু ব্যবসায়ী ও আবদাল বাহিনীর লোকজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বালু ব্যবসায়ীদের ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন।

খুরশিদ জানান, পৈতৃক জমি হারিয়ে পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে জীবনযাপন করছেন। অবৈধ দখলদারদের ভয়ে পরিবার নিয়ে নিজ গ্রাম ছেড়ে বর্তমানে হবিগঞ্জ শহরে বাস করছেন। প্রাণ ভয়ে এলাকায় যেতে পারছেন না।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেলিম মিয়া জানান, তিনি বৈধভাবে বালুমহাল ইজারা নিয়ে বালু ব্যবসা করে আসছেন। কারও জায়গা দখল করেননি তিনি। তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা।

তিনি বলেন, মূলত মো. খুরশিদ মিয়ার সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের জায়গা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমাও রয়েছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর