• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

‘জানি না আর কত দিন এভাবে কাঁদতে হবে’

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৫ আগস্ট ২০২৩  

‘খাওয়ার সময় মেয়ে রুপার কথা মনে পড়ে। ভালোভাবে ঘুমাতে পারিনি কয়েক বছর। সারারাত মেয়েটা যেন আমাকে ডাকে। নামাজ পড়ে ওর রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া করি। আরও দোয়া করি মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করা অপরাধীদের দ্রুত ফাঁসির জন্য। কিন্তু ছয় বছরেও বিচার সম্পন্ন হয়নি। জানি না আর কত দিন এভাবে আমাকে কাঁদতে হবে।’ বৃহস্পতিবার কথাগুলো বলছিলেন বৃদ্ধ হাসনাহেনা খাতুন (৬৫)।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা শেষে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহে যাচ্ছিলেন তাড়াশ পৌর এলাকার তরুণী জাকিয়া সুলতানা রুপা। চলন্ত বাসে পরিবহন শ্রমিকরা তাঁকে ধর্ষণ ও হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে ফেলে যায়। এ ঘটনায় বিচারের আশায় রয়েছেন রুপার মা হাসনাহেনা। তাড়াশ পৌর এলাকার আসানবাড়ীর মৃত জেলহক প্রামাণিক রুপার বাবা।

ঘটনার পর রুপার পরিচয় না পাওয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করে। পরে ২৮ আগস্ট এতে জড়িত থাকার অভিযোগে ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর, সুপারভাইজার সফর আলী, সহকারী শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রত্যেকেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া চার আসামির ফাঁসি, একজনের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং আর্থিক জরিমানা করেন। আসামি শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর ও হাবিবুরকে ফাঁসি এবং সফর আলীকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছোঁয়া পরিবহনের বাসটি রুপার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে বলা হয়।

রায়ের পর ১৮ ফেব্রুয়ারি সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করে। টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি নাসিমুল আক্তার নাসিম জানান, মামলাটি হাইকোর্টের আপিল বিভাগে রয়েছে। কার্যতালিকায় এলে শুনানি হবে। এ জন্য আদালতে বাদীকে খোঁজ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

পরে মামলার বাদী রুপার বড় ভাই হাফিজুর রহমান প্রামাণিক বলেন, দেশে অনেক চাঞ্চল্যকর মামলার কম সময়ে বিচারকাজ শেষ হয়েছে। অপরাধীরা শাস্তিও পেয়েছে। কিন্তু রুপার মামলাটি স্থবির অবস্থায় রয়েছে বলে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর