• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ডে

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৮ নভেম্বর ২০২৩  

ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের দিন পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডে ‘নেতৃত্ব দেওয়া’ ছাত্রদল নেতা আমান উল্লাহ আমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সোমবার বিকেলে রাজধানীর মহাখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। তাদের দাবি, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ ঘিরে বিএনপি ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা ছিল। 

এদিকে, পুলিশ হত্যা মামলায় ছাত্রদলের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার শুনানি শেষে রিমান্ডের এ আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।

সিটিটিসির দাবি, বিএনপি ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ ছিল– নৃশংস হামলার মাধ্যমে পুলিশের মনোবল ভেঙে দিতে হবে। প্রয়োজনে এক বা একাধিক পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেন একটি নতুন ইস্যুর সৃষ্টি হয়। এর ভিত্তিতে সেদিন নয়াপল্টনে সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার পর পুলিশ হত্যাকাণ্ডের ছবি মোবাইল ফোনের অ্যাপের মাধ্যমে দলের হাইকমান্ডের কাছে পাঠান আমান। তিনি ফেসবুকেও ছবি পোস্ট করেন। সেখানে তাঁর অনুসারীরা লিখেছেন– ‘এই দলের কামান, আমান উল্লাহ আমান।’

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, সমাবেশের দিন বিএনপি ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে আমান তাঁর অনুসারীদের নিয়ে নয়াপল্টনে মঞ্চের পাশে অবস্থান নেন। এর মধ্যে কাকরাইলে বিএনপি কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালালে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এর সুযোগ নিয়ে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের পাশে ভিক্টরি হোটেলের গলি দিয়ে তিনি ছাত্রদলের একটি বড় অংশ নিয়ে এগিয়ে যান। সমাবেশে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের অবস্থান আগে থেকেই তাঁর জানা ছিল। তাই পল্টন টাওয়ারের সামনে গিয়ে তাঁর দলের একটি অংশ বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম প্রান্তে বিজয় নগর পানির ট্যাঙ্কের দিকে যায়। অপর অংশটি তাঁর নেতৃত্বে বক্স কালভার্ট রোডের পূর্ব প্রান্তের দিকে এগোতে থাকে। পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছানোর পরে ছাত্রদলের কর্মীরা সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তখন বক্স কালভার্টের পশ্চিম পাশে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সাহায্য করতে অপর প্রান্তের পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে যান। পুলিশের এই দলটির ওপর আমানের নির্দেশে ও নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। 

সিটিটিসিপ্রধান জানান, পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়ে ছাত্রদলের আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা চালায়। তবে পুলিশ প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার থেকে বিরত থাকে এবং সর্বোচ্চ সহনশীলতার পরিচয় দেয়। এ পর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের একটি বড় অংশ বক্স কালভার্ট রোডের পূর্ব দিকের ডিআর টাওয়ার ও আশপাশের স্থাপনায় অবস্থান নেয়। আমানের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সেখানেও পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। তখন ইটের আঘাতে আহত হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজ। এর পরও নৃশংসভাবে লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি পেটানোয় তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। বিক্ষোভকারীরা তাঁর রক্তাক্ত নিথর দেহের ওপর বর্বরভাবে আঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার আমানকে রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাঁর সঙ্গে আরও যারা ছিল, তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর