• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

বাংলাদেশে প্রথমবারের মত চালু ‘স্মার্ট অন স্ট্রিট পার্কিং’

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৮ নভেম্বর ২০২৩  

রাজধানীতে যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয় নগরবাসীকে। অনেক সময় যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে সড়কে যানযটের সৃষ্টি হয়। গাড়ি পার্কিংয়ের এসব ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে এবং সড়কে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে গাড়ি পার্কিং সুবিধায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে দেশে প্রথমবারের মতো ‘স্মার্ট অন স্ট্রিট পার্কিং’ চালু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

বুধবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে ডিএনসিসির নগরভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অবৈধ পার্কিং বন্ধ করতে এবং নিরাপদ পার্কিং নিশ্চিত করতে পরীক্ষামূলকভাবে এই স্মার্ট অন স্ট্রিট পার্কিং মোবাইল অ্যাপ উদ্বোধন করা হয়। গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপ স্টোর থেকে ডিএনসিসি স্মার্ট পার্কিং নামে এই পার্কিং অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে। পরীক্ষামূলকভাবে গুলশান এলাকার আটটি বিভিন্ন সড়কে ২০২টি স্পটে স্মার্ট পার্কিং চালু করা হয়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো: আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে নগরভবনে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, দুর্বার গতিতে আমরা যে এগিয়ে যাচ্ছি তার একটা কারণ হল ডিজিটালাইড হচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলেছেন। তিনি স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন আর দুর্বার গতিতে আমরা এগিয়ে যাই। আজ ডিএনসিসিতে স্মার্ট অন স্ট্রিট পার্কিং চালু হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য স্মার্ট সোসাইটি দরকার, স্মার্ট এডুকেশন দরকার, স্মার্ট গভার্ন্যান্স দরকার। সেটিও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে হবে।

ডিএনসিসি মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় স্মার্ট অন স্ট্রিট পার্কিং চালু হচ্ছে। এই ধরনের উদ্যোগ বাংলাদেশে প্রথম। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান সিএলডিপি (কমার্শিয়াল ল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম) এর আওতায় মিয়ামি সিটি থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে এই উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। সকলের সহযোগিতায় এটি সফল হবে। পর্যায়ক্রমে উত্তর সিটির প্রতিটি এলাকায় এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'ডিএনসিসির এই মডেলটি সফল হলে পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এটি ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ঢাকা সিটিতে প্রচুর যানবাহন। এই শহরের ট্রাফিকের চিত্র পৃথিবীর অন্য কোন শহরের সাথে মিলে না। ঢাকায় এতো পরিমাণ গাড়ি যেটি ম্যানেজ করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। গাড়ির তুলনায় রাস্তা কম। এমন শহরে স্মার্ট ট্রাফিক ব্যবস্থা না থাকলে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। স্মার্ট সলিউশন খুবই প্রয়োজন। স্মার্ট ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আইন ভঙ্গ করলে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। সেটিও দ্রুতই শুরু হবে।'

বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য ডিএনসিসির স্মার্ট অন স্ট্রিট পার্কিং উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তারা নিজেরা নিজেদের অর্থায়ন ও উদ্যোগে যে উদ্যোগ নিয়েছেন সেটির সঙ্গে আমরা আছি। দেখা যায় নো পার্কিং বললেও আমরা কোথায় পার্কিং করতে হবে তা বলি না। এই উদ্যোগের মাধ্যমে কোথায় পার্কিং করা যাবে সেটি বলার সূযোগ হবে।স্মার্ট পার্কিংয়ের মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধানের জন্য সামান্য খরচ ধরা হয়েছে। আসলে উন্নত দেশের মতো উন্নত ও মান সম্পন্ন সেবা পেতে এই সামান্য খরচ করতে হবে। এর মাধ্যমে আমরা ধীরে ধীরে উন্নত বাংলাদেশের দিকে এগোচ্ছে। আমাদের তরফ থেকে সবধরনের সহযোগিতা থাকবে।

স্মার্ট পার্কিংয়ের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, স্মার্ট পার্কিং ব্যবস্থা রাজধানীর যেখানে যেখানে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেখানে এ কার্যক্রম চালু করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এমন সব কাজে ডিএমপি সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে। এই শহরে আমরা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও মেট্রোরেল পেয়েছি। সে কারণে যানজট অনেকটা কমে এসেছে। একইভাবে ধীরগতির যানজটের এ শহরকে গতিশীল করতে সবাই মিলে একসঙ্গে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। স্মার্ট পার্কিং ব্যবস্থার মাধ্যমেও ঢাকা শহর গতি ফিরে পাবে। এ ব্যবস্থা ঢাকা শহরের যানজট কমাতে সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে ঢাকা শহরে বিপুলসংখ্যক মানুষের চলাচলে গতি আসবে, যা জিডিপিতেও ভূমিকা রাখবে।

বক্তৃতা শেষে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিদের নিয়ে ডিএনসিসি মেয়র গুলশান-২ গোলচত্বরে ডিএনসিসি স্মার্ট পার্কিং অ্যাপ ব্যবহার করে স্মার্ট পার্কিং এর উদ্বোধন করেন।

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত, ডিএনসিসির তথ্য কর্মকর্তা মো: পিয়াল হাছান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম শফিকুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফুল ইসলাম, ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, কাউন্সিলরসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর