মুক্তিযুদ্ধে কুমিল্লা: স্মৃতিময় আনন্দ-বেদনার সেই দিনগুলো
দৈনিক জামালপুর
প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩
১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা কুমিল্লায় যে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায় এবং পাশবিক নির্যাতনের যে ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে, তার তুলনা পাওয়া সত্যিই কঠিন। মুক্তিযুদ্ধে হাজারো নিরীহ মানুষ ছাড়াও শহীদ হয়েছেন জেলার ৪১৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। পাকিস্তানি বাহিনী হাতে নৃশংসভাবে নিহত হন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক একেএম শামসুল হক খান ও পুলিশ সুপার কবির উদ্দিন আহমদ। হানাদারদের নৃশংসতা : পাকিস্তানি বাহিনী কুমিল্লায় এসেই তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদরদের নিয়ে গোটা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। হায়েনার দল বিভিন্ন স্থানে হানা দিয়ে নির্বিচারে হত্যা করে নিরীহ মানুষকে। ধরে নিয়ে যায় যুবতী নারীদের। লাকসামের একটি সিগারেট ফ্যাক্টরিতে হানা দিয়ে সেখানে নির্মম হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় তারা। লাকসাম রেলওয়ে জংশনে অপেক্ষমাণ ট্রেন থেকে যাত্রীদের ধরে নিয়ে নির্দয়ভাবে হত্যা করে। প্রতিরাতেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় চোখ বেঁধে নিয়ে ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হতো নিরীহ লোকদের। তারপর লাশ পুঁতে রাখতো মাটির নিচে। সেসব স্থানে মাটি খুঁড়লে আজও বেরিয়ে আসে মানুষের হাড়গোড়, খুলি। কুমিল্লায় বিভিন্ন স্থানে অনেক বধ্যভূমি ও গণকবর আবিষ্কৃত হয়েছে। ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টের গণকবরে বহু কঙ্কাল পাওয়া গেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কুল্লাপাথরে ১৪ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাকে গণকবর দেয়া হয়। বধ্যভূমির মধ্যে রয়েছে বেলতলী, ধনাঞ্জয়, দিশাবন্দ, ঘিলাতলা, রসুলপুর, হোমনার বধ্যভূমি ইত্যাদি। বিবির বাজার যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সাফল্য: কুমিল্লার বিবির বাজার সীমান্তে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তিশালী ঘাঁটিতে হামলা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী। এতে মুক্তিবাহিনী সাময়িকভাবে পরাস্ত হলেও পরে শক্তি বৃদ্ধি করে তারা হানাদার বাহিনীর ৩৯তম বালুচ রেজিমেন্টে একদিন অতর্কিত আক্রমণ চালায়। দুই পক্ষের মধ্যে বেধে যায় প্রচন্ড যুদ্ধ। চার-পাঁচ ঘণ্টা স্থায়ী এই যুদ্ধে কমপক্ষে ১৫০ জন পাকিস্তানি বাহিনী নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের একজন বীর সেনা শহীদ হন ও ৮-১০ জন আহত হন। যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস: কুমিল্লার দক্ষিণে অবস্থানরত ‘কে’ ফোর্সের সেনাদল নিয়ে নির্ভয়পুরে একটি সাব-সেক্টর স্থাপন করা হয়। এই সাব-সেক্টরে ছিলেন কর্নেল (অব.) আকবর, লে. মাহবুব ও লে. কবির। এই সাব-সেক্টর থেকে একটি কোম্পানি সুবেদার আলী আকবর পাটোয়ারীর অধীনে লাকসামের পশ্চিম এলাকায় গোপন ঘাঁটি স্থাপন করে। এই ঘাঁটি থেকে নোয়াখালী, লাকসাম, কুমিল্লা, চাঁদপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর উপর অতর্কিত হামলা চালাতে থাকে মুক্তিবাহিনী। জুলাই মাসে সুবেদার আলী আকবর পাটোয়ারীর নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের এই গেরিলা দলটি পাকিস্তানি বাহিনীর চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করতে চাঁদপুর থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত অনেক সড়ক ও রেলসেতু বোমা বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেয়। এছাড়া তারা লাকসাম-চট্টগ্রাম রেলপথে অবস্থিত রেলসেতু ও সড়ক সেতু ধ্বংস করে দেয়। ফলে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। বেতিয়ারায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধি: ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বেতিয়ারা গ্রামে ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। এতে ১১ জন গেরিলা নিহত হন। কোনরকম পূর্ব প্রস্তুতি না থাকায় গেরিলা দলটি পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করতে পারেনি। পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় পরাস্ত মুক্তিযোদ্ধারা বেতিয়ারার মাঠে তাদের অস্ত্র এবং শহীদ ১১ জন সহযোদ্ধার লাশ ফেলে পিছু হটে আসে। লাকসাম উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুল বারী মজুমদার বাসসকে জানান, ১৩ নভেম্বর স্থানীয় চেয়ারম্যান আগা আজিজুল হক চৌধুরী লাশগুলো একটি গর্তে মাটিচাপা দেন। দেশ স্বাধীন হবার পর লাশগুলোর হাড়গোড় গর্ত থেকে তুলে বেতিয়ারার বর্তমান শহীদ মিনারের পাশে কবরস্থ করা হয়। সেদিনের ১১ জন শহীদের মধ্যে ৯ জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন-নিজাম উদ্দিন আজাদ (দলনেতা), সিরাজুল মনির, জহিরুল হক, সফিউল্লাহ, আওলাদ হোসেন, কাইয়ুম, বশিরুল ইসলাম, মো. শহিদুল্লাহ ও কাদের মিয়া। এ বেদনাবিধুর স্মৃতিকে ঘিরে প্রতি বছর ১১ নভেম্বর বেতিয়ারায় পালিত হয় ‘বেতিয়ারা দিবস’। মুক্ত হলো কুমিল্লা : কুমিল্লা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ’র সাবেক কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল বাসসকে বলেন, নভেম্বরের শেষদিকে পাকিস্তানি বাহিনী মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে টিকতে না পেরে পালিয়ে যায়। ২৮ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথ দিঘি এলাকা দখল করে নেয়। এই এলাকাটিই কুমিল্লার প্রথম মুক্তাঞ্চল। ৩ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনীর যোদ্ধারা কুমিল্লার ময়নামতি আক্রমণ করে। যৌথ বাহিনীর ৩০১ মাউন্টেন ব্রিগেড এবং মুক্তিবাহিনীর ইস্টার্ন সেক্টর লালমাই পাহাড় ও লাকসামে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রতিরক্ষাব্যুহ ভেঙ্গে ফেলে এবং লাকসাম-কুমিল্লা সড়ক পথের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। লাকসামের মুদাফ্ফরগঞ্জে হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে হানাদার বাহিনী পরাজিত হয় এবং ৬ ডিসেম্বর মুদাফফরগঞ্জ মুক্ত হয়। পরদিন মুক্তিবাহিনী ঢাকার সাথে ময়নামতির সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এদিকে লাকসামের ঘাঁটি রক্ষায় পাকিস্তানি বাহিনী মরিয়া হয়ে ওঠে। পাকিস্তানি বাহিনীর ২২ বেলুচ রেজিমেন্ট কুমিল্লা বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। ৭ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর ২৬/২৭ জন যোদ্ধা শহীদ হন। তবে পরাস্ত হয় পাকিস্তানি বাহিনীর । তারা পিছু হটে সেনানিবাসে অবস্থান নেয়। মুক্তিবাহিনী মুক্ত কুমিল্লায় প্রবেশ করতে থাকে এবং ৮ ডিসেম্বর, যদিও তখনও পাকিস্তানি বাহিনী সেনানিবাসে অবস্থান করছিল। আনুষ্ঠানিকভাবে কুমিল্লায় প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় ৮ ডিসেম্বর। ওইদিন কুমিল্লা মুক্ত হানাদার হলেও ১৬ ডিসেম্বর তারা সদলবলে আত্মসমর্পণ করে।
- অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন আজ
- সারাদেশে ১৫৬ উপজেলায় ভোটযুদ্ধ আজ
- ক্রেতারা প্লট বা ফ্ল্যাট কিনে যেন হয়রানির শিকার না হয়: রাষ্ট্রপতি
- অটোরিকশা চালকদের নিয়মের মধ্যে আনতে যে নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর
- যশোরে হত্যা মামলায় ৫ আসামির মৃত্যুদন্ড
- নারীর জীবনমান উন্নয়নে পাশে থাকার অঙ্গীকার
- ঢাকা-তাসখন্দ সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ রাষ্ট্রদূতের
- রেলওয়ের জন্য ২০০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী বগি সংগ্রহে চুক্তি স্বাক্ষর
- নকল ডায়াবেটিস টেস্টিং স্ট্রিপস ধ্বংসে হাইকোর্ট নির্দেশ
- মন্ত্রিসভায় এপোস্টল কনভেনশন স্বাক্ষরের অনুমোদন
- বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের শ্রদ্ধা
- বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার দাবি করেছে ইআরএফ
- বৃক্ষ সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ বিষয়ক গবেষণা বাড়ানো হবে
- স্নাতক স্তরে বাধ্যতামূলক ইন্টার্নশিপ চালুর পরামর্শ ইউজিসি’র
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক নীতিমালা, খসড়া অনুমোদন
- ধানমন্ডিতে ছিনতাইয়ের অভিযোগে ৪ জন গ্রেফতার
- নোয়াখালীর হাতিয়ায় ৩০ কেজি হরিণের মাংস জব্দ
- দ্বাদশ জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন ৫ জুন
- বিএসটিআইকে আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করা হচ্ছে
- গোপালগঞ্জে দারিদ্র বিমোচন প্রকল্পের প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের মধ্যে সনদ
- ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের শোক
- অবিলম্বে ১০ম ওয়েজবোর্ড গঠনের দাবি বিএফইউজে’র
- ভোলার ৩ টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন আগামীকাল
- রাঙ্গামাটিতে জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
- সারাদেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে মাউশি’র ৯ নির্দেশনা
- গোপালগঞ্জে শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ শেখ মোশাররফ হোসেন স্কুল-এ্যান্ড-কলেজ
- শেরপুরে ইজি বাইকের ধাক্কায় বৃদ্ধা নিহত
- যশোরের তিন উপজেলায় ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে
- গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে উপজেলা নির্বাচন আগামীকাল
- চাঁদপুরে প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন
- আন্তর্জাতিক নার্স দিবস আজ
- ডা. জাকির হোসেন: উচ্চ রক্তচাপ রোগের একজন নিরলস চিকিৎসা কর্মবীর
- অতিরিক্ত সচিব পদে ১২৭ জনকে পদোন্নতি
- ন্যাশনাল রোমিং এর সুবিধায় রবি নেটওয়ার্কেও চলবে টেলিটক সিম
- যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব বাঁচত
- চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সরকার বদ্ধপরিকর
- পিরোজপুরে নির্মিত হতে যাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন জেলা সার্কিট হাউজ
- ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম : শেখ হাসিনা
- জামালপুরে পিকআপের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
- ফলোআপ: মেলান্দহ দুরমুঠ মেলায় অভিযান
- বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে চায় কিরগিজস্তান: সালমান এফ রহমান
- সড়কে দুর্ঘটনা রোধে প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ
- সেই ভয়ঙ্কর মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন
- বোরো মৌসুমের ধান-চালের মূল্য নির্ধারণ করল সরকার
- এসডিজি অর্জনে সরকারের সঙ্গে কাজ করবে রোটারি
- জামালপুরে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙন: গ্রেপ্তার-২
- অপবিত্র জায়গায় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা, শরিয়ত কী বলে?
- মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের শোষণের অভিযোগ জাতিসংঘের
- সাড়ে ১৭ লাখ টন চাল, ধান ও গম কিনবে সরকার