• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

ঋণের চাপে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত, এখন সফল উদ্যোক্তা

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

ঋণের বোঝায় জর্জরিত এক যুবক। হতাশায় সিদ্ধান্ত নেন আত্মহত্যার। পরবর্তীতে এলাকার যুব উন্নয়ন অফিস থেকে পান সঠিক পরামর্শ। প্রশিক্ষণ আর সঠিক পরামর্শে শুরু করেন রঙিন ফুলকপি চাষ। এরপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। জীবনযুদ্ধে হয়ে উঠেন এক সফল উদ্যোক্তা। এটা সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার মিঠুন দে’র গল্প। তরুণ এই উদ্যোক্তা রঙিন ফুলকপি চাষে সফলতা পেয়েছেন। প্রায় দুই একর জমিতে দুই লাখ বিনিয়োগ করে বেগুনি, হলুদ, সাদা, সবুজসহ নানা রঙের ফুলকপি চাষ করেছেন তিনি। চাষকরা এসব রঙিন ফুলকপি বিক্রি করে বিনিয়োগের শতভাগ টাকা আয় করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ৬ নম্বর ফতেহপুর ইউনিয়নের বড়নগর গ্রামের বাসিন্দা মিঠুন দে। অর্থনৈতিক অসচ্ছলতায় এইচএসসি পাশ করার পর লেখাপড়া আর চালিয়ে যেতে পারেননি। মিঠুন জানান, সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে গেল বছর প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে অল্প জায়গায় রঙিন ফুলকপি চাষ করেন। সেখানে সফলতা পেয়ে চলতি বছর বাণিজ্যিকভাবে দুই একর জমিতে রঙিন ফুলকপি ও পাতা কপি চাষ করেছেন। আর সেই রঙিন ফুলকপি ও পাতা কপির বাম্পার ফলনে হাসি ফুটিয়েছে এক সময়ের ঋণে হতাশাগ্রস্ত এই তরুণ উদ্যোক্তার মুখে। তিনি আরো জানান, বিগত ২০১৩, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে বিভিন্ন ব্যবসায় বারবার বড় ধরনের লোকসান হয় তার। পরে ঋণের বোঝা ও মানুষের কটুকথা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করার মতো সিদ্ধান্ত নিতে গিয়েছিলেন তিনি। ঠিক তখনই তার পাশে দাঁড়ায় উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিস। প্রাথমিকভাবে আর্থিক সহযোগিতা না করলেও জীবন যুদ্ধে কীভাবে জয়ী হতে হয় সে পরামর্শ দেন তারা। উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসে যাওয়ার মতো গাড়ি ভাড়াটা পর্যন্ত ছিল না তার পকেটে। পরে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাই তাকে প্রশিক্ষণের সুযোগ ও স্বল্প-ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। যার কারণে তার আজকের এ সাফল্য। বর্তমানে মিঠুন তার চাষকৃত রঙিন ফুলকপি বিক্রি করে বিনিয়োগ করা ২ লাখ টাকা তুলে আরো প্রায় ২ লাখ টাকা এরইমধ্যে আয় করেছেন। বিনিয়োগের চাইতে পাঁচগুণ লাভের আশাও রয়েছে তার। এদিকে, গোয়াইনঘাটে রঙিন ফুলকপি চাষ নতুন হওয়ায় আশপাশের মানুষজন প্রতিনিয়ত তার ক্ষেত দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। মিঠুন বলেন, অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর সঠিক শ্রম থাকলে সফল উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত দুই বছর যাবৎ উপজেলায় রঙিন ফুলকপি চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। রঙিন ফুলকপি চাষ লাভজনক পণ্য। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তাকে সার বীজ ও সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে। রঙিন ফুলকপি স্বাদ এবং পুষ্টি গুণে অতুলনীয়। যা বাণিজ্যিক কৃষিতে একটি নতুন সংযোজন ও সম্ভাবনা।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর