• শনিবার ১১ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৮ ১৪৩১

  • || ০২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

টিএসসিতে অনুষ্ঠিত হলো দ্বাদশ সঞ্জীব উৎসব

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩  

সংগীত ও সাংবাদিকতায় অসামান্য মুগ্ধতা ছড়ানো প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী সঞ্জীব চৌধুরী তরুণদের মধ্যে চিরঞ্জীব হয়ে আছেন তার সৃষ্টি নাগরিক জীবনের টানাপড়েন, ভালোবাসা, প্রতিবাদ, সুখ-দুঃখের গানের মাধ্যমে। তরুণ প্রজন্মের কাছে চির প্রাসঙ্গিক এই সংগীতশিল্পীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে প্রতিবছর আয়োজিত হয় সঞ্জীব উৎসব। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) অনুষ্ঠিত হলো দ্বাদশ সঞ্জীব উৎসব। সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) টিএসসির সঞ্জীব চত্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ (ডিইউসিএস) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটির সহযোগিতায় ‘দ্বাদশ সঞ্জীব উৎসব’ আয়োজন করছে ‘আজব কারখানা’ ও ‘সঞ্জীব উৎসব আয়োজন পর্ষদ’। বিকাল সাড়ে ৪টা হতে শুরু হয়ে নাগরিক এই উৎসব চলে রাত পর্যন্ত। বরাবরের মতো সন্ধ্যায় আলোক প্রজ্বলন ছিল এবারের আয়োজনের অংশবিশেষ। সঞ্জীব প্রেমীদের এই মিলন মেলায় এবার গান শুনিয়েছেন লিমন, মুয়ীয মাহফুজ, জয় শাহরিয়ার, সন্ধি, আহমেদ হাসান সানি, সাহস মোস্তাফিজ, সুহৃদ স্বাগত, অর্ঘ্য, ঘুণপোকা, শতাব্দী ভব, রাজেশ মজুমদার, অং, রাশেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ। এক যুগ পেরোনো এই উৎসবের অন্যতম আয়োজক সংগীতশিল্পী জয় শাহরিয়ার বলেন, সঞ্জীবদার গান ও গানের দর্শন নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে আমরা একযুগের বেশি সময় ধরে এই আয়োজন করে আসছি। কথাপ্রধান গানের মাধ্যমে বার্তা পৌঁছে দেওয়া ছিল তার অন্যতম দর্শন। এছাড়াও তিনি বাংলা লোকগানকে নাগরিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ করতে ভূমিকা রেখেছেন তার গানের মধ্য দিয়ে। উৎসবের অন্যতম অংশীদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি জয়ন্ত ভৌমিক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের মূল লক্ষ্য শুদ্ধ বাংলা সংস্কৃতি চর্চা। আমাদের সংস্কৃতি যেমন লোকজ, তেমনি নাগরিক। সঞ্জীব চৌধুরী আমাদের মধ্যে বেঁচে আছেন তার সৃষ্টি- নাগরিক জীবনের অনুভূতির শিল্পকর্মে। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের যুগ পেরোনো এই আয়োজনের মাধ্যমে তাকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি তার দর্শনকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে। যা আমাদের মূল লক্ষ্যকেও বাস্তবায়ন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড সোসাইটির সভাপতি ইনজামাম কবীর সাকলাইন বলেন, সেই যে কথাটি মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্যে, বয়সের মধ্যে নয়, সঞ্জীব চৌধুরীর জন্য এই কথাটি অনেক বেশি মানানসই। বাংলাদেশের ব্যান্ড মিউজিক প্রেমী তরুণসমাজের কণ্ঠে, হৃদয়ে আজও বেঁচে আছেন তিনি, দলছুটের দলনেতা হয়ে আজও বেঁচে আছেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি বরাবরের মত এই আয়োজনে থাকতে পেরে আনন্দিত। প্রসঙ্গত, ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মাকালকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সঞ্জীব চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র সঞ্জীব চৌধুরী ছিলেন একাধারে সৃজনশীল লেখক, শিল্পী ও সাংবাদিক। দেশের প্রথমসারির গণমাধ্যমে কাজের পাশাপাশি চালিয়ে গেছেন সংগীত-সাহিত্য চর্চা। বাপ্পা মজুমদারকে নিয়ে তিনি গড়ে তুলেছিলেন দলছুট ব্যান্ড। সঞ্জীব চৌধুরীর গাওয়া গান এখনো সমানভাবে এ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয়। তার কণ্ঠে জনপ্রিয়তা পাওয়া গান ‘আমি তোমাকেই বলে দেব’, ‘তোমার ভাঁজ খোলো আনন্দ দেখাও’, ‘আমাকে অন্ধ করে দিয়েছিল চাঁদ’, ‘স্বপ্নবাজি’, ‘গাড়ি চলে না’, ‘এই কান্নাভেজা আকাশ আমার ভালো লাগে না’, ‘বায়োস্কোপ’ গানগুলো। ২০০৭ সালের ১৯ নভেম্বর এই গুণীশিল্পী পরলোক গমন করেন।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর