• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

রোজায় ক্লাস চলবে

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

হঠাৎ করেই দেশের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের স্কুলের ছুটির তালিকা সংশোধন করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী রোজার ভেতর মাধ্যমিক পর্যায়ে ১৫ দিন ও প্রাথমিকে ১০ দিন ক্লাস চলবে। শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বছরে ৭৬ দিন ছুটির যে তালিকা রয়েছে তা মানা হচ্ছে না। পাঠদান আনন্দের বিষয় হলেও মন্ত্রণালয়ের চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তে শিক্ষকদের ভেতর ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে আনন্দের সঙ্গে পাঠদান। তবে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি কমাতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভিভাবকরাও রোজায় ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। দেশের সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছুটি কমিয়ে তালিকা সংশোধন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পবিত্র রমজানের প্রথম ১৫ দিন ১১ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তরে ক্লাস চালাবে। এর আগে বছরের শুরুতে প্রকাশিত বার্ষিক ছুটির তালিকায় ১১ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি রাখা হয়েছিল। তবে তা থেকে সরে এসে নতুন সিদ্ধান্ত জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১১ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত ১৫ দিন দেশের সব সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম, অর্থাৎ ক্লাস চালু থাকবে। এদিকে চলতি বছর ১১ অথবা ১২ মার্চ রোজা শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে। সে হিসাবে রমজানে সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চালু থাকবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারি মাধ্যমিকের একাধিক শিক্ষক বলেন, ২০২২ সালেও রমজান মাসে ক্লাস চালু রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ায় সাতদিন চলেছিল ক্লাস। এবার কী পরিস্থিতি দাঁড়ায় তা দেখতে হবে। এক্ষেত্রে মহানগর ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ছুটির ভিন্নতা রাখার দাবি জানান তারা। রাজধানীর অধিকাংশ স্কুলে দুই পালায় (শিফট) চলে শিক্ষা কার্যক্রম। প্রথম শিফট শুরু হয় সকাল সাতটায়। চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত। অভিভাবকরা বলছেন, ভাল শিখন কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের প্রতি সপ্তাহে ৩২ ঘণ্টা ক্লাস হওয়ার কথা। কিন্তু এখন সপ্তাহে ৫ দিন ক্লাস চলে। এতে শিক্ষার্থীরা ২০ ঘণ্টার বেশি ক্লাস করতে পারে না। যার ফলে তাদের মধ্যে শিখন ঘাটতি বাড়ছে। এ বিষয়ে অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল কবির দুলু জনকণ্ঠকে বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু দেখা যায়, সরকারের সিদ্ধান্তের পরও অনেকে স্কুল খুলে রাখলেও সেখানে ক্লাস কার্যক্রম সেভাবে চলে না। সে কারণে এ বিষয়ে গভীর পর্যবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণে বার্ষিক ছুটির তালিকা সংশোধন করে রমজানের প্রথম ১০ দিন প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি আংশিক সংশোধন করে আসন্ন পবিত্র রমজানের প্রথম ১০ দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে প্রাথমিকের শিক্ষক নেতা মাহবুবর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, মাধ্যমিকের বার্ষিক ছুটি ৭৬ দিন দেওয়া হলেও আমাদের দেওয়া হয়েছিল মাত্র ৬০ দিন। পরে শিক্ষকদের দাবির মুখে ছুটি সমন্বয় করা হয়। কিন্তু নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরও ৭-৮ দিন ক্লাস চলবে। এর ফলে ছুটির পঞ্জি বাস্তবায়ন হবে না। এছাড়াও গ্রাম পর্যায়ে প্রাথমিকের অনেক শিক্ষার্থী রোজা রাখে। এ সময় তাদের ক্লাস করতে কষ্ট হয়ে যাবে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর