চেরাগ থাকলেও নেই পাহাড়, নাম তার ‘চেরাগী পাহাড়’
দৈনিক জামালপুর
প্রকাশিত: ১০ মার্চ ২০২৩
![](https://www.dainikjamalpur.com/media/imgAll/2021July/11-2303102342.jpg)
চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক স্থানগুলোর একটি চেরাগী পাহাড়। পাহাড়টির ওপর প্রথম চেরাগ জ্বালান বদর শাহ নামে এক পীর। চেরাগ জ্বালিয়ে তিনি দৈত্যদানব ভরা এ শহর থেকে দূর করেন অশুভ আত্মা। এরপর থেকে এ পাহাড়ের নাম হয় চেরাগী পাহাড়।
নামে চেরাগী পাহাড় হলেও বর্তমানে এখানে পাহাড়ের কোনো ছিটেফোঁটা নেই। আছে কৃত্রিমভাবে বানানো একটি চেরাগ। আর চারপাশে গড়ে উঠেছে সারি সারি দালান। শুধু চেরাগী পাহাড়ই নয়, চট্টগ্রামের আরো এমন অনেক স্থানের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে পাহাড় শব্দটি।
চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে চেরাগী পাহাড়ের প্রাচীন ইতিহাস। যা এখন অনেকটা হারানোর পথে। সাংবাদিক ও চিকিৎসকপাড়া হিসেবে পরিচিত এ চেরাগী পাহাড়ের গৌরবগাঁথা সেই ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এর রূপ পর্যালোচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকে।
কথিত আছে, অতীতে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে আরব দেশ থেকে ভাসমান একখণ্ড পাথরের ওপর আরোহণ করে পূর্ব দেশে রওনা হন সুফি সাধক বদর শাহ। সেই পাথরখণ্ডটি নিয়ে একদিন তিনি কর্ণফুলী নদীতে প্রবেশ করেন। প্রবেশের পর যে স্থানে তিনি পাথরটি থেকে নামেন, সেই স্থানটির নামকরণ হয় ‘পাথরঘাটা’। তখন পুরো চট্টগ্রাম শহর ছিল জনমানবহীন গভীর অরণ্যে আবৃত। ছিল জিন-পরীর আবাসস্থল। পাথরখণ্ড থেকে নেমে তীরে উঠে আসেন বদর শাহ। মাটির চেরাগ হাতে নিয়ে গভীর বন-জঙ্গলের মধ্য দিয়ে একটি পাহাড়ের ওপর উঠতে যাচ্ছিলেন তিনি। সে সময় তাকে বাধা দেয় জিন-পরীরা।
পথ আটকে তারা তাকে বলে, কে আপনি আমাদের মুল্লুকে অনধিকার ঢুকেছেন? এখানে কোনো মানুষের স্থান হবে না। বদর শাহ তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি একজন সংসারবিরাগী বৃদ্ধ। আল্লাহর এবাদত-বন্দেগী করার মানসে এখানে এসেছি। আমাকে এখানে থাকার স্থান দাও। কিন্তু জিন-পরীরা কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না। এভাবে কথা কাটাকাটি চলতে চলতে দিন গড়িয়ে রাত নেমে আসে।
রাতের অন্ধকারে চেরাগটি রেখে জ্বালানোর স্থানটুকু চান বদর শাহ। এতে জিন-পরীরা রাজি হয়। এরপর চেরাগটি পাহাড়ের ওপর রেখে নিজের পকেট থেকে দুটি চকমকি পাথর বের করেন বদর শাহ। পাথর দুটির ঘর্ষণে আগুন বের করে চেরাগটি জ্বালিয়ে দেন।
দেখতে দেখতে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হচ্ছিল চেরাগের আলো। সে আলো এমন তীব্র তেজ বিকিরণ করতে থাকে যে, সব জিন-পরীরা জ্বালা-যন্ত্রণায় ছটফট করতে শুরু করে। কিন্তু তারা এর কোনো প্রতিবাদ বা প্রতিকার করতে পারল না। কারণ তারাই বদর শাহকে চেরাগ রাখার স্থান দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত চেরাগের সেই অলৌকিক আলো সহ্য করতে না পেরে চট্টগ্রাম ছেড়ে চলে যায় জিন-পরীরা। এরপর আবাদ হয় চট্টগ্রাম। বদর শাহর চেরাগ রাখা সেই পাহাড়ের নাম হয় ‘চেরাগী পাহাড়’।
ঐতিহাসিক যুগের প্রারম্ভকাল থেকে প্রায় হাজার বছর কাল আরাকান অধিকারভুক্ত ছিল চট্টগ্রাম। ফলে চট্টগ্রামের ইতিহাস, সমাজ ও সংস্কৃতিতে আরাকানি প্রভাব বেশ পরিলক্ষিত হয়।
রেডিও বাংলাদেশ চট্টগ্রামের পাহাড়িকা অনুষ্ঠানের তৎকালীন সহকারী উপ-প্রযোজক আরাকানি ভাষী উ-চ-নু ও মং উসাংয়ের মতে, চেরাগী পাহাড় নামটি আরাকানি নামের অপভ্রংশ। আরাকানি ভাষায় এর নাম ‘চারেগ্রীটং’। ‘চারেগ্রী’ ও ‘টং’ দুটি শব্দ যুক্ত হয়ে ‘চারেগ্রীটং’ নামের উৎপত্তি। এখানে ‘চারেগ্রী’ শব্দের অর্থ প্রধান হিসাবরক্ষক ও ‘টং’ অর্থ পাহাড়। দুটি মিলে হয় প্রধান হিসাবরক্ষকের পাহাড়।
আরাকানি শাসনামলে সম্ভবত চট্টগ্রামের এ পাহাড়েই ছিল তাদের প্রধান হিসাবরক্ষক কিংবা দেওয়ানের চারেগ্রীর বাসস্থান। ফলে পাহাড়টিকে চারেগ্রী পাহাড় নামে খ্যাত করে চট্টগ্রামের অধিবাসীরা। কালক্রমে নামটি অপভ্রংশ হয়ে চেরাগ্রী পাহাড় ও পরে চেরাগী পাহাড় হিসেবে খ্যাত হয়।
চট্টগ্রামে মুসলমানদের বিজয়ের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৩৪০ খ্রিস্টাব্দে সোনারগাঁর সুলতান ফকরউদ্দিন মুবারক শাহর আমলে আরাকানিদের বিতাড়িত করে সোনারগাঁর মুসলমান রাজ্যভুক্ত হয় চট্টগ্রাম।
১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দে মরক্কোর পরিব্রাজক ইবনে বতুতা চট্টগ্রামে আসেন। তিনি তার ভ্রমণকাহিনিতে সুলতান অধিকৃত চট্টগ্রামের শাসনকর্তা শায়েদা সুলতানের ছেলেকে হত্যার ঘটনা লিপিবদ্ধ করলেও বদর শাহর অলৌকিক আলোতে জিন-পরী বিতাড়িত করে চট্টগ্রাম বিজয়ের কথা লিখেননি।
১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দে কবি মোহাম্মদ খাঁ বিরচিত মক্তুল হোসেন কাব্যেও আত্মকথার পিতৃকুল পরিচিতিতে বর্ণনা করেছেন, মগদের বিতাড়িত করে চট্টগ্রাম জয় করেন সেনাপতি কদল খান গাজী। এতে কদল খান গাজীকে সহায়তা করেন বদর শাহ। কিন্তু বদর শাহর অলৌকিক আলোতে জিন-পরী বিতাড়িত করার কথা তিনিও লিখেননি। ফলে অনেকের মতে, বদর শাহর অলৌকিক চেরাগ ও জিন-পরী বিতাড়িত করার ঘটনা একটি আষাঢ়ে গল্প।
![দৈনিক জামালপুর দৈনিক জামালপুর](https://www.dainikjamalpur.com/media/PhotoGallery/2024July/WhatsApp-Image-2024-07-05-at-045101_cbdf93ae-2407060401.jpg)
- স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ
- ওদের খুঁজে বের করুন উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে
- বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি
- সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আজ
- ‘বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা রাষ্ট্রকে অকার্যকর করতে চেয়েছিল ’
- কারফিউ তুলে নেয়া হবে কবে, জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসা ও রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার
- দূরপাল্লার বাস চলছে
- প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু
- রুম ছিল খালি, বাথরুমে গিয়ে মা পেলেন মিমের মরদেহ
- ৯১ সাংবাদিককে ধরে নিয়ে গেছে ইসরায়েলি বাহিনী
- অতীতের সব রেকর্ড ভাঙলো হাওরের মাছ উৎপাদন
- সালমান খানকে হত্যাচেষ্টা: যেভাবে শুটারদের গাইড করেন লরেন্সের ভাই
- শেষ ওভারের নাটকীয়তায় হারলো পাকিস্তান, ফাইনালে শ্রীলংকা
- চাকরির সুযোগ দিচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ
- বিপদ-মসিবত থেকে রাস্তাঘাটে নিরাপদ থাকার দোয়া
- বাস-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিথর রাশেদ
- স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের ভিডিও ধারণ, প্রবাসীসহ গ্রেফতার ৩
- কামড় দেওয়ার অভিযোগে কারাগারে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান
- সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান
- আহতদের চিকিৎসার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
- মেট্রোরেল স্টেশনে হামলার ঘটনায় ৬ জন ৫ দিনের রিমান্ডে
- মুক্তিযুদ্ধের মর্মমূলে আঘাতের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ঐক্যের আহ্বান
- বিজিবি`র নিরাপত্তায় সারাদেশে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চলাচল শুরু
- বিএনপি-জামায়াতের তান্ডবে আহতদের দেখতে হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী
- সহিংসতায় হতাহতদের স্মরণে রাজধানীসহ সারাদেশে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত
- দুর্বৃত্তরা ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি গাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে
- কক্সবাজার উপকূলে নিখোঁজ দু’জনের মরদেহ উদ্ধার
- কোটা আন্দোলনকালে ধ্বংসলীলার তদন্ত ও বিচার দাবি অর্থনীতি সমিতির
- সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আগামীকাল
- কলকাতার ৪৭ সিনেমা হলে ‘তুফান’
- ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তি: ভারত হয়ে ভুটান যাবে বাংলাদেশের ট্রেন
- ঝালকাঠিতে জেলা আইন শৃঙ্খলা উন্নয়ন বিষয়ক সভা
- ভারত-বাংলাদেশ ট্রানজিটের সুবিধা-অসুবিধা
- রেল-ট্রানজিটে খুলবে নেপাল ভুটানের পথ
- টাঙ্গাইলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ
- বিমানবন্দর গোলচত্বরে হচ্ছে বৃহত্তম আন্ডারপাস
- সরিষাবাড়ীতে অদম্য মেধাবী সিয়াম পেল খবরের কাগজ শিক্ষাবৃত্তি
- মেলান্দহে রথযাত্রা
- প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ধূসর স্মৃতি: শাহ্ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান
- ‘বনখেকো’ মোশাররফ গড়েছেন ১১২ কোটির সম্পদ
- প্রয়োজন কোটা সংস্কার
- যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন: জামালপুরে আনন্দ মিছিল
- মোতায়েনরত সেনাসদস্যদের কার্যক্রম পরিদর্শন সেনাপ্রধানের
- বিদেশ থেকে মানুষ চিকিৎসা নিতে বাংলাদেশে আসবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- প্রশ্নফাঁস চক্রের ১৭ জনের নাম-ছবি প্রকাশ্যে
- কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের সদস্য হলো বাংলাদেশ
- সাজেকে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ, বাঘাইছড়িতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
- ‘জনসেবায়’ বাংলাদেশ হতে পারে পাশ্চাত্যের অনুকরণীয়
- ‘টাকার কুমির’ এডিসি কামরুল স্ত্রীকে কিনে দেন ৫ জাহাজ
![দৈনিক জামালপুর দৈনিক জামালপুর](https://www.dainikjamalpur.com/media/PhotoGallery/2024July/3-2407091212.jpg)