• বুধবার ০৮ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

  • || ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি, প্রতিধ্বনি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৬ আগস্ট ২০২৩  

শোনো, একটি মুজিবরের থেকে/ লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি,/ আকাশে বাতাসে উঠে রণী...। বাংলার আকাশে বাতাসে আজ একটিই নাম, একজনেরই অস্তিত্ব- তিনি শেখ মুজিব। চির প্রস্থানের দিনে আরও বেশি জোরালো, আরও বেশি উদ্ভাসিত বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। ইতিহাস তাঁর জন্য যে আসন নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেখানেই অধিষ্ঠিত তিনি। অথচ কিছুকাল আগে এই নাম মুছে দেওয়ার কত চেষ্টাই না আমরা দেখেছি। মূল আঘাত এসেছিল ১৯৭৫ সালে। ওই বছরের ১৫ আগস্ট নির্মম নিষ্ঠুর হত্যাকা- চালানো হয়েছিল ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে। সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল জাতির পিতাকে।

তার পর রেডিও-টেলিভিশন দখলে নিয়ে খুনি চক্রের আস্ফালন। মুজিব খতম। মুজিবকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ওই নাম আর নেওয়া যাবে না। আরও কত চোটপাট। হুঁশিয়ারি। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যেন প্রতিবিপ্লবীদের মামাবাড়িতে পরিণত হয়েছিল। ভীতু বর্ণচোরা রাজনীতিক, নপুংশক সেনাপতি, দুর্বল আমলা সকাল বিকেল জিহ্বা দিয়ে খুনিদের বুট চেটে দিয়েছেন। ভাড়ায় খাটা বুদ্ধিজীবীরা লিখেছেন ভুল ইতিহাস। এভাবে দীর্ঘ ২১ বছর। হ্যাঁ, অনেকেরই ধারণা ছিল মুজিব ও তাঁর আদর্শ ব্যর্থ হয়েছে। আর তারপর আজকের বাংলাদেশ। সার্কাসের বানরেরা আর দৃশ্যপটে নেই। বিদেশে পালিয়েও অনেকে বাঁচতে পারেনি।

বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে। ঝুলতে হয়েছে ফাঁসির দড়িতে। বলার অপেক্ষা রাখে না, নিকৃষ্টতম মৃত্যু। বাকি নেকড়েগুলো জনগণের ‘ধুর ধুর’ ‘ছিঃ ছিঃ’ নিয়ে পালিয়ে বেঁচে আছে। আছে বটে, ফাঁসির দড়ি থেকে খুব বেশি দূরে নয়। যখন তখন গ্রেপ্তার ও রায় কার্যকর হতে পারে। অন্যদিকে, যা শুরুতে বলা হলো, স্বমহিমায় উদ্ভাসিত হয়েছেন শেখ মুজিব। ’৬৯ বা ’৭০-এর উত্তাল দিনগুলোর মতোই ছড়িয়ে পড়েছেন। কবি তাই লিখছেন: তার ছায়া দীর্ঘ হ’তে-হ’তে/মানচিত্র ঢেকে দ্যায় সস্নেহে, আদরে...। আদরে স্নেহে সোনার বাংলাকে যেন জড়িয়ে রেখেছেন জাতির পিতা। বাঙালিও মহান নেতার প্রতি অনুগত। কবির ভাষায়: আমার বুকের গভীর ভালোবাসায়/ উন্নতশির তোমার ছবি আঁকি...।
প্রতিবারের মতো এবারও ১৫ আগস্ট গোটা দেশের প্রতি প্রান্তে দৃশ্যমান হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। বিলবোর্ড ব্যানার ফেস্টুন প্ল্যাকার্ড সর্বত্রই প্রিয় পিতার মুখ। কালো রঙে শোকের বিস্তার। সারাদিন কথায় কবিতায় শ্রদ্ধা জানানো হয় শেখ মুজিবকে। গদ্য গানে স্মরণ করা হয়। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যথারীতি ঢল নেমেছিল মানুষের। এভাবে শতরূপে অযুত মহিমায় যেন ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধু। হারানোর দিনে এর চেয়ে ভালো ফিরে পাওয়া আর কী হতে পারে!

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর