• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

শ্রম অধিকার নিয়ে নিষেধাজ্ঞার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর ২০২৩  

যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমনীতি ইস্যুতে বাংলাদেশের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এমন মন্তব্য করে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দ্বিবার্ষিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের শ্রম আইনে থাকা শ্রম অধিকারের বেশ কিছু পরিপালন করা হয়েছে। তবে তারা আরো অগ্রগতি চায়। গতকাল সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বিশেষ আন্ত মন্ত্রণালয় সভা শেষে তপন কান্তি ঘোষ গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা বলেন। সভায় শ্রমসংক্রান্ত জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে বাণিজ্যসচিব ছাড়াও শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এহছানে এলাহী এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারদের সংগঠন (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান, বাংলাদেশ নিট পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ও বেজার (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ) প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বাণিজ্যসচিব বলেন, ‘শ্রম অধিকারের ইস্যুতে বাংলাদেশের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে নতুন শ্রমনীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী শ্রম পরিবেশের আরো উন্নতি হোক। বাংলাদেশ এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে শ্রম আইনের সংশোধন ও বেজা আইনের মাধ্যমে শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে, শিগগির যুক্তরাষ্ট্রকে এ অগ্রগতির চিত্র জানানো হবে।’ তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘কারো দয়ায় নয়, পণ্যের গুণগত মান, আন্তর্জাতিক চাহিদা ও শ্রমিক অধিকার রক্ষা করেই তৈরি পোশাক রপ্তানি করছে বাংলাদেশ।’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায় ২০০টি দেশে পণ্য রপ্তানি করি। এর মধ্যে কয়েকটি দেশে খুব বেশি রপ্তানি করি। সুতরাং আমাদের লক্ষ্য থাকবে, কিভাবে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে কমপ্লায়েন্স অর্জন করে এবং ক্রেতার রিকোয়ারমেন্ট পূরণ করে রপ্তানি করতে হয়। বাণিজ্যসচিব বলেন, শ্রম আইন নিয়ে ইইউ, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু দেশের কিছু শর্ত ছিল। বেজা আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে চাওয়া ছিল, তা অনেকটাই পূরণ করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে তিনবার শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছে। ’ এ ছাড়া ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বেপজা (বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ) আইনটাও সংশোধন করা হবে। তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমরা যে ২৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করি, সেটা শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায়। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করি, কিন্তু সেখানে কোনো শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায় না। বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশকে অনেক বেশি শুল্ক দিয়ে পণ্য রপ্তানি করতে হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শ্রম অধিকার সংক্রান্ত সমঝোতায় যেসব ইস্যু ছিল, সেগুলো নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিকী মূল্যায়ন প্রতিবেদন, সেটা কিন্তু সবার সঙ্গে আলোচনা করেই করা হয়েছে। সব শেষ ১২-১৬ নভেম্বর একটা উচ্চ পর্যায়ের দল ঢাকায় এসে সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘ইইউতে বাংলাদেশ যেহেতু শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়, সেহেতু তাদের চাওয়া আমরা বেশি গুরুত্ব দিই। আমাদের ৬০ শতাংশ রপ্তানি যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নে যায়। মোট রপ্তানির ৬০ শতাংশ। এটা একটা বিশাল বাজার, আমাদের এটা রক্ষা করতে হবে। আমরা তাদের সঙ্গে মিলে কাজ করে যাচ্ছি।’ বেপজার শ্রমিক কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশনকে ট্রেড ইউনিয়ন করতে হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি। এসব সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করা হবে কি না, জানতে চাইলে সচিব বলেন, তাদের চাওয়াগুলো যে পূরণ হয়েছে, যেমন বেপজা আইনে সংস্কার করা হয়েছে, শ্রম আইনটিই বেপজার মতো প্রযোজ্য হবে, বাংলাদেশের শ্রম আইনে সংশোধন আনা হয়েছে, এই অগ্রগতি যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হবে। এ জন্য কয়েক দিন সময় লাগবে, প্রস্তুতি নিতে হবে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর