• সোমবার ০৩ জুন ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১৯ ১৪৩১

  • || ২৫ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর
সর্বশেষ:
শেখ হাসিনার নেতৃত্বের জন্যই বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল গোয়াইনঘাটে বন্যার্তদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ সহায়তা বিতরণ বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনে এশিয়ার রোল মডেল হবে বাংলাদেশ : আইইবি সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে গরু প্রবেশের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ-সমন্বিত প্রচেষ্টায় এসডিজি অর্জন সম্ভব সরকারকে টেনে ধরতে রাষ্ট্র বিরোধী চক্র ষড়যন্ত্র করছে: খালিদ মাহমুদ ডেঙ্গু মোকাবেলার প্রস্তুতি রয়েছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঈদে বিশেষ স্টিমার সার্ভিস ১৩, ১৬ ও ২০ জুন বেনজীর আহমেদ দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস : টুঙ্গিপাড়ায় স্কুলের ২০০ শিশুকে খাওয়ানো হলো দুধ

১ এপ্রিল থেকে সুন্দরবনে মধু আহরণ শুরু

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৩১ মার্চ ২০২৪  

এপ্রিলের শুরুতেই সুন্দরবনে মধু সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। ১ এপ্রিল থেকে সুন্দরবনে মধু আহরণ শুরু। সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগে দুই মাসব্যাপী শুরু হচ্ছে মধু আহরণ মৌসুম। সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই মধু আহরণ মৌসুম চলবে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত। তবে জুন মাস থেকে সুন্দরবনের সব ধরনের জলজ ও বনজ সম্পদ আহরণে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় গেওয়ার মধু সংগ্রহ সম্ভব হয় না। এবার বৃষ্টির কারণে সুন্দরবনের গাছে পর্যাপ্ত ফুল ফোটায় চলতি আহরণ মৌসুমে মধু সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা সুন্দরবন বিভাগের। এবছর সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার কুইন্টাল। আর মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০০ কুইন্টাল। এর মধ্যে শরণখোলা রেঞ্জে ৬০০ কুইন্টাল মধু, ২০০ কুইন্টাল মোম ও চাঁদপাই রেঞ্জে ৪০০ কুইন্টাল মধু, ১০০ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে মধু আহরিত হয় ৮৬৩ কুইন্টাল ও মোম আহরিত হয় ২৫৮.৯৬ কুইন্টাল। শরণখোলা ও চাঁপই থেকে থেকে এবার তিন হাজারের অধিক মৌয়াল সুন্দরবনে মধু সংগ্রহে যাবেন বলে ধারণা কররা হচ্ছে। সুন্দরবনে গরান ও খলিশা ফুলের মধু ছাড়াও কেঁওড়া ও ছইলা ফুলসহ বিভিন্ন গাছের ফুলের মধু মৌচাক থেকে পর্যায়ক্রমে মধু সংগ্রহ করবেন মৌয়ালরা। এরপর জুন মাসে শুরু হয় গেওয়া ফুলের মধু আহরণ। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ থেকে পাস-পারমিট নিয়ে নৌকায় করে দল বেঁধে মধু আহরণ করতে ম্যানগ্রোভ এই বনে যাচ্ছে মৌয়ালরা। সুন্দরবন বন বিভাগ ও মৌয়ালরা জানায়, গোটা সুন্দরবনে মধু আহরণের জন্য ১৫ মার্চ থেকে বন বিভাগ পারমিট (অনুমোতি) দেওয়া হলেও সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের মূলত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে গরান ও খলিশা পর্যাপ্ত ফুল না ফোটায় গত কয়েক বছর ধরে মৌয়ালরা মধু আহরণে ১৫ দিন পিছিয়ে বন বিভাগ থেকে পাস-পারমিট নিচ্ছেন। সুন্দরবনের মৌয়াল নুরুল ইসলাম ও উয়াল খান বলেন, পাস সংগ্রহ, সরকারি রাজস্ব এবং খাওয়া খরচ মিলিয়ে মৌসুমে তাদের প্রতিজনের খরচ হয় ১২ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা। গত বছর আমাদের দলের প্রত্যেক সদস্য দুই মণ করে মধু পেয়েছিলেন। আর দুই মণ মধু বিক্রি করে একেকজন পেয়েছিলেন ৬০ হাজার টাকা। এ বছরও আগাম বৃষ্টি হওয়ায় আশানুরূপ মধু পাবেন বলে আশা করছেন তারা। মধু আহরণ মৌসুমের শুরুতে নৌকা মেরামত, মহাজনের কাছ থেকে দাদন নেয়াসহ সকল প্রস্তুতি এরইমধ্যেই সম্পন্ন করে বনে মধু আহরণের জন্যে রওনা হবেন মৌয়ালরা। আমাদের প্রতি দলে ১০ থেকে ১২ জন করে মৌয়াল রয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ ১৫ বছর কেউ ২০ বছর ধরে মধু আহরণ করছেন। শরখোলার মধু ব্যবসায়ী জালাল মোল্লা বলেন, গত বছর তিন লাখ টাকা বিনিয়োগ করে প্রায় ১৪ মণ মধু বিক্রি করেছি। প্রতি কেজি মধু খুচরা বিক্রি হয়েছে প্রকার ভেদে ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত। এবছরও গত বছরের সমপরিমাণ বিনিয়োগ করবো বলে আশা করছি। সুন্দরবনের সবচেয়ে উৎকৃষ্টমানের যে মধু সেটা আসে খলিসা এবং গরান ফুল থেকে। পশ্চিম সুন্দরবন অঞ্চলের খলিসা এবং গরান গাছে আগাম ফুল চলে আসে। কিন্তু আমাদের পূর্ব সুন্দরবনে এই সময় খলিসা ও গরান গাছে ফুল আসে না। পুরো এপ্রিল মাস খলিসা ও গরান ফুলের মধু সংগ্রহ হয়। মে মাসজুড়ে থাকে কেঁওড়া ও ছইলা ফুল। এরপর জুন মাসে শুরু হয় গেওয়া ফুলের মধু আহরণ। তবে, জুন মাস থেকে সুন্দরবনের সব ধরনের জলজ ও বনজ সম্পদ আহরণে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় গেওয়ার মধু সংগ্রহ সম্ভব হয় না। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহম্মদ নূরুল করিম বলেন, প্রতিজন মৌয়ালকে ১৪ দিনের জন্য পাস দেওয়া হয়। বনে প্রবেশ করার পর মুধ আহরণের জন্য ৯টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মৌয়ালদের। নির্দেশনাগুলো হচ্ছে-কোনো মৌয়াল মধু সংগ্রহের সময় মৌমাছি তাড়াতে অগ্নিকুণ্ড, মশাল বা অনুরূপ কোনো দাহ্য পদার্থ এবং রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার করতে পারবেন না। এই নির্দেশনা অমান্য করেল তার বিরুদ্ধে বন আইনে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর