• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

কোম্পানি আইন দ্রুত সংস্কারের তাগিদ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২৩  

কোম্পানি আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং তা বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি বলে জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার সমীর সাত্তার। শনিবার ঢাকা চেম্বার আয়োজিত ‘কোম্পানি আইন ১৯৯৪-এর সংস্কার’ বিষয়ক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। বক্তব্য দেন ইউনিলিভারের এমডি জাভেদ আক্তার, আইসিএবির সাবেক সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন, ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সের কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হলটম্যান, আইসিএমএবির চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান, আরজেএসসির রেজিস্ট্রার মো. আব্দুস সামাদ আল আজাদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, আমাদের ব্যবসায়ী সমাজের আস্থা বৃদ্ধি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদ্যমান কোম্পানি আইনের সংস্কার এবং দ্রুত বাস্তাবায়ন এখন সময়ের দাবি। দেশে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ উন্নয়নের পাশাপাশি করপোরেট খাতে জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে কোম্পানি আইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। দীর্ঘদিনের পুরোনো এ আইনটি বর্তমানে দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলা ও বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বাড়াতে যথেষ্ট নয়।

এ লক্ষ্যে তিনি তথ্যপ্রযুক্তির সর্বাত্মক ব্যবহারের মাধ্যমে অটোমেশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থার ব্যবহার বাড়ানো এবং মেধাস্বত্ব আইনের ব্যবহার বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। এছাড়া কোম্পানি আইনটি বৈশ্বিক আইনের সঙ্গে মিল রেখে ‘মার্জার’ এবং ‘একুইজেশন’ কে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানিয়ে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, কোম্পানি আইনের যথাযথ বাস্তবায়নে আরজেএসসির সক্ষমতা আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আইন মন্ত্রণালয় হতে খসড়া কোম্পানি আইনের ওপর বেশকিছু দিক-নির্দেশনা দিয়েছে, যা নিয়ে কাজ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং দ্রুত তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

কোম্পানি আইনে বেশি মাত্রায় ক্ষমতা আরোপ ও শাস্তি দেওয়া বিধান না থাকা প্রয়োজন, কারণ এতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভবনা থেকে যায়। তিনি বলেন, আরজেএসসির কার্যক্রমে আরও অটোমেশন আনায়নে বর্তমানে বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং আশা প্রকাশ করেন চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। এছাড়া অটোমেশন কার্যক্রম সম্পন্ন হলে সেবা প্রাপ্তির লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন করে আরজেএসসির শাখা অফিস স্থাপনের কোনো প্রয়োজন হবে না। প্রস্তাবিত কোম্পানি আইনে দেশের এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের কীভাবে আরও বেশি সহযোগিতা করা যায়, তা নিরূপণের ওপর জোরারোপ করেন বাণিজ্য সচিব।

অনুষ্ঠানের মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশনা ইমাম বলেন, কোম্পানি আইনে ‘মার্জার’ এবং ‘একুইজেশন’ কে অন্তর্ভুক্তির কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে কোন কোম্পানির অবলুপ্তির প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ ও ব্যয় সাপেক্ষ, তাই প্রস্তাবিত কোম্পানি আইনে বিষয়টি সহজীকরণে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা প্রয়োজন। এছাড়া তিনি খসড়া আইনে ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর)’ এবং ‘মধ্যস্থতা’ কে বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেন। একইসঙ্গে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি নয়, এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে আরও স্বচ্ছতা আনায়নের লক্ষ্যে ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ডিরেক্টর’ বাধ্যতামূলক করার দাবি জানান। সব কোম্পানির ক্ষেত্রে ‘কোম্পানি সচিব’ নিয়োগ, কাজের পরিধি নির্ণয়, স্বচ্ছতা ও জাবাদিহিতা একান্ত অপরিহার্য বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর