• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

স্ত্রীর হাত বেঁধে শরীরে গরম পানি ঢেলে দিলেন স্বামী

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

জামালপুরে স্ত্রীর হাত বেঁধে শরীরে গরম পানি ঢেলে দেওয়ার ঘটনার মামলায় শ্বশুর আশেক আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জামালপুর থানায় একটি মামলা করেন ওই গৃহবধূর বড় বোন। এর আগে, গত সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শহরের গেইটপাড় এলাকার এক ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত আল আমিন শাহবাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের মুল্লিকপুর গ্রামের আশেক আলীর ছেলে। জানা যায়, ভুক্তভোগী গৃহবধূ জেলার মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা। আহত গৃহবধূ বর্তমানে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং তিনি শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। ওই গৃহবধূকে নির্যাতন করে শরীরে গরম পানি ঢেলে ঝলসানোর পর সাতদিন আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ জানান, ১০ মাস আগে পারিবারিকভাবে তার সঙ্গে আল আমিনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ ৫ লাখ টাকা, একটি মোটরসাইকেল, আসবাবপত্র ও মোবাইলসহ স্বর্ণালংকার যৌতুক দেন দেওয়া হয়। গত তিন মাস আগে বাবার বাড়ি থেকে শহরের গেইটপাড় এলাকার ভাড়া বাসায় নিয়মিত থাকতে শুরু করেন তারা। সেখানে শুধু তিনি ও আল আমিন বসবাস করতেন। বিয়ের ৪-৫ মাস পর আল আমিন ফের ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এজন্য মাঝে মধ্যেই তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। জামালপুর শহরের ভাড়া বাসায় আসার পর থেকে মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন আল আমিন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতনের পর চা তৈরির জন্য রাখা গরম পানি তার শরীরে ঢেলে দেন আল আমিন। এতে তার পিঠের পেছনের অংশসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। এরপর চিৎকার করলে তার মুখে ওড়না গুঁজে দেন আল আমিন। টানা সাতদিন হাত পা-বেঁধে তাকে বাড়িতে তালা দিয়ে রেখে কর্মস্থলে যান আল আমিন। প্রতিদিন ফিরে এসে সামান্য ওষুধ শরীরে লাগিয়ে দেন। এরপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহরের শেখেরভিটা এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান আল আমিন। পরে সেখানে অপরিচিত একজনের মোবাইল ফোন নিয়ে তার বড় বোনকে ফোন দেন ওই গৃহবধূ। মামলার বাদী ও গৃহবধূর বড় বোন বলেন, ছোট বোনের ফোন পেয়ে আমি তাকে উদ্ধার করি এবং অবস্থা বেগতিক দেখে সেখান থেকে পালিয়ে যায় আল আমিন। পরে সোমবার সকালে বোনকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি এবং মঙ্গলবার রাতে থানায় একটি মামলা করি। জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. মাহফুজুর রহমান সোহান বলেন, ওই গৃহবধূর শরীরের ২০ শতাংশ পুড়ে গেছে। হাসপাতালে অনেক দেরিতে আসায় শরীরে আরো বেশি ক্ষতি হয়েছে। তবুও আমরা আমাদের সাধ্যমতো চিকিৎসা দিয়েছি। তিনি এখন শঙ্কামুক্ত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুর থানার ওসি মুহাম্মদ মহব্বত কবির। তিনি বলেন, এই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে জামালপুর থানায় একটি মামলা করেছেন গৃহবধূর বড় বোন। মামলায় সহকারী শিক্ষক আল আমিনসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে জামালপুর শহরের গেইটপাড় এলাকা থেকে আল আমিনের বাবা আশেক আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর