• মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

  • || ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

অফিস কক্ষেই সংসার পেতেছেন দুই কর্তা!

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১০ মে ২০২৪  

পরিত্যক্ত স্টোর রুমকে সরকারি বাজেটে বানিয়েছেন গেস্ট রুম। ফাঁকা রুমে খাট, সোফা, টিভি, এসি, ফ্রিজ, মাইক্রোওভেন, আলমিরা ও ড্রেসিং টেবিল থেকে শুরু করে একটি ছোট্ট পরিবারের জন্য যা দরকার তার সবই ব্যবস্থা করেছেন। সেই গেস্ট রুমেই বছর ধরে বসবাস করছেন রাজশাহী বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পরিচালক এনামুল হক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, এই দুই কর্তা রীতিমতো সংসার পেতে বসেছেন। বিনা ভাড়ায় যেমন থাকেন তেমন খাবারও খান বিনে পয়সায়। রান্না থেকে শুরু করে তার ব্যক্তিগত সব কাজ করতে বাধ্য হন অধীনস্ত কর্মচারীরাও। অথচ প্রতিবছরই পরিবার পরিকল্পনা দফতর থেকে বিভাগ ও জেলাসহ সকল পর্যায়ে অফিস সরঞ্জাম, জনবল ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার না করাসহ সরকারি সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতে চিঠি দিয়ে জানানো হয়। গত ৩ এপ্রিলও পরিবার পরিকল্পনা দফতরের পরিচালক (প্রশাসন) যুগ্মসচিব মো. আসিব আহসান স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সব নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অফিসেই সংসার পেতে বসেছেন এই কর্তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পরিচালক এনামুল হক এক বছরের বেশি সময় ধরে অফিসে গেস্ট রুম বানিয়ে থাকছেন। তারা স্ত্রী-সন্তান ঢাকায় থাকেন। এখানে তিনি একাই থাকেন। তার যাবতীয় কাজ করতে হয় অফিসের কর্মচারীদের। ভয়ে কেউ কোনো কথা বলতে পারেন না।

এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. শহিদুল ইসলামও প্রায় ১ বছর চার মাস ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ মা ও শিশু পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের গেস্ট রুমে থাকেন। তার বাড়ি বরিশাল। স্ত্রী-সন্তান বরিশালেই থাকেন। কর্ম এলাকায় অন্য বাসাবাড়ি ভাড়া না নিয়ে অফিসের রুম দখলে নিয়েই থাকছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মী জানান, উপ-পরিচালক প্রথম থেকেই এখানে আছেন। নিজের মনের মতো করে রুমও সাজিয়ে নিয়েছেন। কর্মচারীরাও বাধ্য তার কাজ করে দিতে। রান্না থেকে শুরু করে পরিবারের যা কাজ, এখানেও তা করতে হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি বাড়ি ভাড়া পেলেই চলে যাবো। এখন নিউজটা করিয়েন না। আর আমার বাড়ি বরিশাল। এখানে একা থাকতে হয়। কোথায় থাকবো না থাকবো, এ কারণে এখানকার একটা পরিত্যক্ত রুমে থাকছি।

রাজশাহী বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পরিচালক মো. এনামুল হক বলেন, আমার পরিবার ঢাকায় থাকে। আমি রাজশাহীতে একা থাকি। গেস্ট হাউজটা ফাঁকা থাকে। তাই এখানেই থাকি।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু ও স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এবং পরিচালক (প্রশাসন) যুগ্ম সচিব মো. আসিব আহসানের সরকারি টেলিফোন নম্বরে কল করা হলে তাদের ব্যক্তিগত সহকারী ফোন রিসিভ করে জানান, তারা মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ে আছেন। বিষয়টি তাদের জানিয়ে দেবেন।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর