• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

জনগণের কাছ থেকে আমাকে দূরে সরানো যাবে না

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১০ মে ২০২৪  

একটি মহল সরকারের উন্নয়নকাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে জনগণের কাছ থেকে তাঁকে দূরে সরানো যাবে না।

বৃহস্পতিবার রাতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি। যে কাজগুলো আমরা করেছি, তার শুভ ফল দেশবাসী পাচ্ছে, সেটাকে স্বীকার করেন। কিন্তু প্রতিটি কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হলেও জনগণের কাছ থেকে তো আমাকে দূরে সরাতে পারবেন না।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার একটা শক্তি হচ্ছে জনগণ। তাদের শক্তি নিয়েই আমি চলি। সেখানে একটা আস্থা সৃষ্টি হয়েছে জনগণের মাঝে যে আমি তাদের জন্য কাজ করি। কাজেই ওই আস্থা-বিশ্বাসটাই হচ্ছে আমার একমাত্র সম্বল। আর এই সম্বল নিয়েই আমি চলি, এ জন্য আমি কাউকে পরোয়া করি না। যতক্ষণ দেশবাসী আমার পাশে আছে, আমি কাউকে পরোয়া করি না।’

বঙ্গবন্ধুর সময়কার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি জানি, আমার বাবার সঙ্গেও একই জিনিস হয়েছে। যত কাজ তিনি করে গেছেন মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে; সংবিধান দেওয়া থেকে শুরু করে এমন কোনো সেক্টর নাই, যার ভিত্তি তিনি তৈরি করে দেন নাই। তারপরও তাঁর সমালোচনা, তাঁর বিরুদ্ধে নানা কথা লেখা, অনেক কিছু করে তাঁকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। যখন পারেনি, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।’

সংসদ নেতা বলেন, ‘আমাকে হত্যার জন্য বারবার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমি বেঁচেই গেছি, সেটাও জনগণ এবং দলের লোকেরা সব সময় আমাকে ঘিরে রেখেছে। নিজেরা জীবন দিয়ে আমার জীবন বাঁচিয়েছে। আমি এখন জনগণের জন্য কাজ করে যেতে চাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি তাঁর জীবনের ওপর এ ধরনের হামলা উপেক্ষা করে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর আগে বক্তব্য দেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

‘কুইক রেন্টালে কাউকে দায়মুক্তি দিইনি’

কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ আইন নিয়ে সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিশেষ আইনে কাউকে কিন্তু দায়মুক্তি দেওয়া হয়নি। বরং বেসরকারি খাতে প্রথম বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে সামিট। খুলনায় তারা ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পন্ন করতে দেরি করেছিল, যে ক’দিন দেরি করেছিল, প্রতিদিন ১০ হাজার ডলার করে তাদের জরিমানা দিতে হয়েছে। আর সেই জরিমানা আমি আদায় করেছি। দায়মুক্তি আমরা দিই না, এটা মাথায় রাখতে হবে।

তিনি বলেন, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ আইনে দায়মুক্তির কোনো ধারাও নেই, কিছুই নেই। দায়মুক্তি কি কেউ যেন মামলা করতে না পারে, বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিতে না পারে, আমার কাজ বন্ধ করতে না পারে। কারণ, একটা দেশে উন্নয়ন করতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বিদ্যুৎ দেওয়া। আমি যদি বিদ্যুৎ দিতে পারি, সেখানে কর্মসংস্থান এমনিতেই তৈরি হয়।
কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, পৃথিবীর এমন কোনো দেশ আছে, যেখানে ক্যাপাসিটি চার্জ ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর হয়, একটা দেশ দেখান। অথচ এই ক্যাপাসিটি চার্জ বলে বলে সব চিৎকার।

কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রশ্ন তোলেন বিশেষ আইন কেন করলাম? বিশেষ আইন এজন্য করেছি, আমি তো ব্যক্তি খাতে সব উন্মুক্ত করে দিয়েছি। আর ব্যক্তি খাতে উন্মুক্ত করে দিলে পরে সেখানে তো নতুন আইন করেই করতে হবে। আমি যদি দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে যাই, শুধু সরকার দিয়ে করলে তো হবে না। আমাকে ব্যক্তি খাতে দিতেই হবে। আর ব্যক্তি খাতে না দিলে তো কর্মসংস্থানও বাড়ে না।

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আগে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ছিল। আজকে তো ১৬ হাজার মেগাওয়াটের ওপরে আমরা উৎপাদন করতে পারি।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর