• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

সুরুতভানের ভাষ্য জীবনের শ্যাষ ভোট দিলাম মনে হয়

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৮ মে ২০২৪  

‘সকাল থেকে আকাশ কালো মেঘলা হয়া আছে। নাতনীর হাত ধরি সকাল সকাল ভোট দিতে আসলাম। ম্যালা বয়স হইছে বাপজান, আর একা চলবার পারি না। মনে হয় এবারে জীবনের শেষ ভোট দিলাম। আর ভোট দিবার আসপার পামু কিনা আল্লাহ জানে।’ 

রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা স্কুল এন্ড কলেজে নাতনির হাত ধরে ভোট দিতে এসে এভাবেই অনুভূতি ব্যক্ত করেন সুরুতভান বেওয়া (৭০)।

বুধবার (৮ মে) সকালে সুরতভান বেওয়া উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের হরিনধরা গ্রাম থেকে দাঁতভাঙ্গা স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন। প্রথম ধাপে উপজেলা নির্বাচন সকাল আটটায় শুরু হয়েছে। ভোটগ্রহন চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত।
এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, উপজেলার এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৬০১ জন। এরমধ্যে সকাল ১১ টা পর্যন্ত ২৯১টি ভোট কাস্ট হয়েছে। সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার সংখ্যা বাড়ে।
সরেজমিনে সকাল ১১ টায় ওই কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি কম। মাঠে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা অলস সময় পার করছেন। কেউ কেউ পাশাপাশি বসে খোশ গল্পে মজেছেন। এমন সময় সুরুতভান বেওয়া ভোট দিতে আসলে আনসার সদস্য আসাদুর রহমান এগিয়ে গিয়ে তাকে সহযোগিতা করেন। তিনি বয়সের ভারে নুয়ে পড়া সুরুতভান বেওয়ার হাত ধরে ভোটকক্ষে নিয়ে যান এবং তাকে ভোট দিতে সহযোগিতা করেন।
আনসার সদস্য আশাদুর রহমান জানান, সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতেছি। এখনো কেন্দ্রে সেরকম ভোটার আসা শুরু করেনি। বৃদ্ধ ওই মা কে দেখলাম ভোটকেন্দ্রে এসেছেন। তাকে ভোট দিতে সহযোগিতা করলাম।
ওই কে›েন্দ্রর পাশে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নে ছোট কাউনিয়ার চর সরকারি প্রথামিক বিদ্যালয়ে ভোটকেেেন্দ্র ভোট দিতে এসেছেন মাহমুদা খাতুন (১৯)। তিনি এবছর প্রথম ভোটার হয়েছেন। ভোট দিয়ে ফেরার সময় তিনি জানান, ‘জীবনের প্রথম ভোট দিলাম। শুরুতে ভয় ভয় লাগতেছিল। প্রার্থীর লোকজন ও ভোট গ্রহন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় গোপন কক্ষে গিয়ে ভোট দিলাম। নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিলাম। ভোট দিয়ে খুব খুশি লাগতেছে, পছন্দের প্রার্থী জিতলে খুশি দ্বিগুণ বেড়ে যাবে বলেও তিনি জানান।
উপজেলার রৌমারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিতে এসেছেন দুলালী পাল (৬৫)। তিনি জানান, সকালে নাওয়া খাওয়া করার আগেই প্রার্থীর লোক বাসায় ভ্যান পাঠিয়ে দিয়েছে। ওই ভ্যানে করে ভোট দিতে এসেছি। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি। সকাল সকাল কোন ভীড় ছাড়াই আরামে ভোট দিলাম।
পথম ধাপে আজ কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী, রাজিবপুর ও রৌমারী উপজেলায় ভোটগ্রহন করা হচ্ছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলমগীর জানান, জেলার তিনটি উপজেলায় প্রথম ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এরমধ্যে রৌমারী উপজেলায় ৬১টি কে›েন্দ্র ১ লাখ ৬৮ হাজার ৪১১ জন ভোটার, চিলমারী উপজেলায় ৪৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহন হচ্ছে সেখানে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৯ হাজার ৪৪৪ জন এবং রাজিবপুর উপজেলায় ২৭টি ভোটকেন্দ্র্রে মোট ভোটার ৬৪ হাজার ৮৭৩ জন। এখন পর্যন্ত কোন ভোটকেন্দ্রে অপ্রতিকর ঘটনা ঘটেনি। ভোটগ্রহন সুষ্টভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
 

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর