দেশে আশা দেখাচ্ছে ৮০০ কোটি টাকার মাশরুমের বাজার
দৈনিক জামালপুর
প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০২২
‘১৫ বছর আগে যখন শুরু করেছিলাম তখন মানুষকে বুঝিয়ে, নামমাত্র দামে দিনে দু-তিন কেজি মাশরুম বিক্রি করতে পেরেছি। এখন ২০ থেকে ২৫ কেজি প্রতিদিন বিক্রি করছি। ছোট বারান্দার উৎপাদন নিয়ে এসেছি বড় খামারে। দিনে ২০০ কেজি উৎপাদনের জন্য শেড করছি।’
দেশে মাশরুমের চাহিদা ও বাজারচিত্র তুলে ধরতে গিয়ে কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর খিলগাঁওয়ের শফিউল আজম খান। গ্রামের বাড়ি আখাউড়াতে তাঁর খাদেম মাশরুম সেন্টার।
গত ১০-১৫ বছরে শফিউলের মতো এমন অনেক উদ্যোক্তা মাশরুমের চাষ করে সফল হয়েছেন। বাজার ও সরবরাহ চেইন তৈরি করেছেন। মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের হিসাবে ১০ বছরে দেশে মাশরুমের বাজার চার গুণ বড় হয়েছে। উদ্যোক্তা ও চাষিরা মিলে গড়ে তুলেছেন বছরে ৮০০ কোটি টাকার মাশরুম বাজার।
মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০০৯-১০ সালে দেশে মাশরুম উৎপাদন হয়েছিল ১০ হাজার মেট্রিক টন। ২০১৯-২০ সালের হিসাব বলছে, চার গুণ উৎপাদন বেড়েছে। এ সময় ৪০ হাজার টন মাশরুম উৎপাদন হয়েছে। ২০১৮-১৯ সালে মাশরুমের উৎপাদন ছিল ৪২ হাজার টন। ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে এখন মাশরুমের বাজার ৮০০ কোটি টাকার।
ইনস্টিটিউটের হিসাবে বর্তমানে দেশব্যাপী বড় খামারি রয়েছেন এক হাজারের ওপরে। বড় খামারি বলতে কমপক্ষে দৈনিক ১০ থেকে ১৫ কেজি মাশরুম উৎপাদন করেন এমন ব্যক্তিকেই ধরে তারা। ছোট অনেক উদ্যোক্তা রয়েছেন দেশের আনাচে-কানাচে।
দেশে যে পরিমাণ মাশরুম উৎপাদন হয় তার পুরোটাই দেশের চাহিদা মেটাতে লাগে। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় রপ্তানির আগ্রহও উদ্যোক্তাদের মধ্যে কম। তবে দেশের বাইরেও মাশরুমের বেশ চাহিদা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জার্মানি, জাপান, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, নেদারল্যান্ডস ও ভারত এই ১০টি দেশে মাশরুমের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশের মাশরুম উৎপাদকরা বলছেন, দেশে মাশরুমের বাজার বড় হচ্ছে। এ খাতে তরুণ উদ্যোক্তাদের আগ্রহ বাড়ছে। সেই সঙ্গে ভোক্তাদের অনেকে খাদ্য তালিকায় মাশরুম যোগ করছেন। আর ওষধি গুণের কারণে ডায়াবেটিকসহ নানা রোগের পথ্য হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে মাশরুম।
খিলগাঁওয়ের শফিউল আজম খান বললেন, ডায়াবেটিক রোগীর আটা তৈরির অনুমোদন পাওয়া একটি প্রতিষ্ঠান তাঁর কাছে থেকে শুকনো মাশরুম কিনতে যোগাযোগ করেছে। যতটুকু তিনি তৈরি করতে পারবেন তার সবটুকুই নিয়ে যাবে প্রতিষ্ঠানটি।
বগুড়া মাশরুম কটেজের উদ্যোক্তা (স্নাতক শিক্ষার্থী) আবুল হাসনাত বলেন, ছয় বছর আগে বগুড়া হর্টিকালচার সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যখন চাষ শুরু করেন তখন চার থেকে পাঁচ কেজি মাশরুম উৎপাদন ও বিক্রি হতো। এখন প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ কেজি মাশরুম বিক্রি হয়। চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে তাঁর মাশরুমের বাজার তৈরি হয়েছে।
আবুল হাসনাত জানালেন বীজসংকটের কথা। তিনি বলেন, ‘এ জন্য আমি বীজ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। নিজের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা বিক্রি করে দেব।’
রাজধানীর খুচরা বাজারগুলো ঘুরে সাত প্রজাতির মাশরুম দেখা গেছে। সবচেয়ে সহজলভ্য ওয়েস্টার, শীতাক ও ঋষি। ওয়েস্টার গরম ও শীত সব মৌসুমেই উৎপাদন হয়। তাই বছরব্যাপী এটি বাজারে পাওয়া যায়। শীতাক শুধু শীত মৌসুমে বাজারে আসে। ওষধি গুণ বেশি হওয়ায় ঋষি হারবাল পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে কিনে নেয়। অবশ্য এই জাতের মাশরুম চাষের জন্য দেশের আবহাওয়া অনুকূল নয়। শীতপ্রধান দেশে এই মাশরুমের চাষ ভালো হয়।
বাজারে সাধারণত পলিব্যাগে ২৫০ গ্রাম থেকে এক কেজি পর্যন্ত মাশরুমের প্যাকেট পাওয়া যায়। চাষিরাই পলিব্যাগে ভরে সরবরাহ করেন। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মতিঝিল, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন বাজার ও এলাকায় ওয়েস্টার মাশরুমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। দাম বেশি হওয়ায় এখনো এই সবজিটি অভিজাত শ্রেণির খাদ্য হিসেবেই রয়ে গেছে বলে বিক্রেতারা জানান। আবার ঢাকার বাইরে দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় অনেক মধ্যবিত্তের খাবার তালিকায় ওয়েস্টার মাশরুম জায়গা করে নিয়েছে।
খোলাবাজারের সবজি বিক্রেতাদের কাছে মাশরুম এখনো সহজলভ্য নয়। কিন্তু বিভিন্ন সুপার শপে সহজে পাওয়া যায়। তবে সব সুপার শপে কাঁচা মাশরুম বিক্রি নিয়মিত নয়। কিন্তু শুকনা মাশরুম পাওয়া যায়।
কারওয়ান বাজারে মাশরুম কিনতে আসা আলমগীর নামের এক ক্রেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু বিক্রেতা ছাড়া মাশরুম পাওয়া যায় না। তাই অনেক সময় আমদানি করা মাশরুমের ক্যান কিনতে হয়। তাতে টাকা অনুযায়ী মাশরুমের পরিমাণ কম থাকে।
সাভার, আখাউড়া, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উৎপাদন পর্যায়ে ওয়েস্টার মাশরুম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজিদরে। এক কেজি মাশরুম উৎপাদনে খামারির খরচ হয় ৬০ থেকে ৮০ টাকা। এর মধ্যে মূল খরচ বীজ ও খড়ে। বীজ প্রতি কেজি ৪০ টাকা করে কিনতে হয়। প্রতিটি বীজ থেকে তিন থেকে চার মাস ফলন আসে। এ ছাড়া শ্রমিক খরচ রয়েছে কিছুটা।
বাজারে সবচেয়ে দামি ঋষি মাশরুম। দেশে এই জাতের মাশরুম উৎপাদন কম হয়। এগুলো প্রতি কেজি খুচরায় দাম চার থেকে ছয় হাজার টাকা। চাষি বা খামারি পর্যায়ে এ জাতের কাঁচা মাশরুম বিক্রি হয় সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা কেজিদরে। বাজারে আমদানি করা মাশরুমের চার থেকে পাঁচটি ব্র্যান্ডের ক্যান পাওয়া যায়। যার বেশির ভাগই চীন থেকে আমদানি করা। ওয়েস্টার ও ঋষি দুই প্রকার মাশরুমই ক্যান হিসেবে বিক্রি হয়। ওয়েস্টার ৪০০ গ্রামের ক্যান প্রায় সব বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়।
সাভারের মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের সাবেক উপপরিচালক নিরদ চন্দ্র সরকার বলেন, মাশরুম একটি পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও ওষধি গুণসম্পন্ন খাবার। চাষ করার জন্য কোনো আবাদি জমির প্রয়োজন হয় না। অনুৎপাদনশীল ফেলনা স্বল্প জমিতে বিপুল পরিমাণ মাশরুম উৎপাদন করা যায়।
মাশরুমে বিনিয়োগ
মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রথম ১৯৮০ সালে সাভারের সোবহানবাগ হর্টিকালচার সেন্টারে মাশরুম চাষ শুরু হয়। তার বছর দশেক পর ১৯৮৯-৯০ সালে জাপানের সহায়তায় মাশরুম উন্নয়নে এক কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। গত ৩২ বছরে মাত্র ৯০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয় মাশরুম উন্নয়নে। এখন পর্যন্ত ওয়েস্টার, ঋষি, মিলকি ও শীতাক প্রজাতির মাশরুমের ৯টি জাতের বীজ অবমুক্ত করা হয়েছে। আরো পাঁচ-সাতটি গবেষণা পর্যায়ে রয়েছে।
কিছু সমস্যার কথা জানালেন মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক মো. ফেরদৌস আহমেদ। তিনি বলেন, ‘মাশরুমের বাজার সম্প্রসারণে বড় চ্যালেঞ্জ হলো মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা। এর দায়িত্ব আমাদের কিছু রয়েছে, আবার কৃষি বিপণনের কিছু রয়েছে। বেসরকারি খাতেরও কিছু রয়েছে। তবে আমাদের কাছে চলমান কোনো প্রকল্প না থাকায় বেশি প্রচারণায় যেতে পারছি না।’
- আবহাওয়া বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে
- বেনজীর ও তার পরিবারের সম্পদের তথ্য চেয়ে দুদকের চিঠি
- মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন
- আগামী মাসে বাংলাদেশ-চীন সামরিক মহড়া, নজর রাখবে ভারত
- আগামী ৬ জুন নতুন সরকারের প্রথম বাজেট
- গ্যাসের সিস্টেম লস শূন্যে নামানো হবে : নসরুল হামিদ
- পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
- বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্র্যাঞ্চে জব করার সুযোগ
- বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে ৫ সমঝোতা ও চুক্তি স্বাক্ষর
- স্মরণ সভা: ডা.আলাউদ্দিন সিরাজি
- মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার প্রতিবেদন ঢাকার প্রত্যাখ্যান
- থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ
- আগ্রাসন, যুদ্ধকে না বলুন
- কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ব্রাজিল থেকে গরু আনার চিন্তা
- উপজেলা নির্বাচনে ব্যর্থ হলে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ন হবে
- যুদ্ধ বন্ধ করতে বিশ্বনেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
- ‘বাংলাদেশের দিকে তাকালে লজ্জিত হই’
- রিজার্ভ বেড়ে ২০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি
- কারিগরি শিক্ষায় বিনিয়োগের সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশ
- ১২০০ মেগাওয়াট বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসছে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র
- আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের তীব্র দাবদাহের খবর
- ৪ পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান, মিলেছে ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ
- স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত: প্রধানমন্ত্রী
- জামালপুরে ১৭টি মোবাইল সেট উদ্ধার
- নীলুফা ইসলামের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
- জিআই পণ্যের গুণগত মান ও টেকসই সংরক্ষণের দিকে নজর দিতে হবে
- মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাঙালিদের অবদান ছিল অনন্য
- পার্বত্য চট্টগ্রামেও সমানতালে উন্নয়নের গতিধারা এগিয়ে চলছে
- বিএনপি ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে : ওবায়দুল কাদের
- শুধু চাকরির পেছনে ছুটবে না, উদ্যোক্তা হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- ইসলামপুরে গোপনে মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটি গঠন
- ফেনী সার্কিট হাউজে উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন
- বকশীগঞ্জে এসএসসি ব্যাচ-২০০২ ফ্রেন্ডস অর্গানাইজেশন এর ইফতার মাহফিল
- ইনফিনিক্স নোট ৪০ সিরিজ: দেশের বাজারে নতুন মাত্রা
- বাড়ির সেফটি ট্যাংকে মিলল শিক্ষার্থীর লাশ
- দেওয়ানগঞ্জে ব্লাড ফাইটার ফর হিউম্যানিটির কমিটি গঠন
- দূর্গম যমুনার চরাঞ্চলে রাজকীয় বাহন ঘোড়ার গাড়ি
- মাদারগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভা
- হতশ্রী ব্যাটিং নিয়ে যা বললেন জাকির
- মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় শিক্ষক ছেলে গ্রেফতার
- ক্রীড়া সংগঠক ইউসুফ আর নেই
- সোনার এত দাম অতীতে কোনোদিন হয়নি
- গোলরক্ষক ইয়ারজানকে পঞ্চগড়ে সংবর্ধনা
- জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র সাংস্কৃতিক সংস্থার ইফতার অনুষ্ঠিত
- সরিষাবাড়ি স্কুল ছাত্র হত্যা: কিশোর গ্যাং আটক-২
- ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল ভটভটি চালকের
- দর্শনার্থীদের টানছে মিয়াবাড়ি মসজিদের নান্দনিক সৌন্দর্য
- বাবা-মাকে ভরণপোষণ না দেওয়ায় ছেলে কারাগারে
- জামালপুরে অবৈধভাবে সম্পত্তি দখলের চেষ্টা, গ্রেফতার ৩
- দেশজুড়ে পাওয়া যাচ্ছে ইনফিনিক্স নোট ৪০ সিরিজ