• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

ঝিনাইদহে বালু ব্যবসায়ীদের দখলে মহাসড়ক

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২৪  

ঝিনাইদহে বালু ব্যবসায়ীদের দখলে মহাসড়ক। উড়ন্ত বালু আবাসিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। বালুর কণা ঢুকে পড়ে চোখেমুখে। চরম ঝুঁকিতে শিশু ও বৃদ্ধরা। রাস্তার দুপাশে গড়ে উঠেছে ভাঙাড়ির দোকান। বাসাবাড়িতে বাড়ছে চুরি। অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন নগরবাসী। এদিকে নজর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। জেলা শহরের বাইপাস (হামদহ-আরাপপুর) সড়ক ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বালু ও ভাঙাড়ি ব্যবসার সারি সারি আড়ত। প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় দিনরাত চলে কেনাবেচা। ব্যস্ততম এ সড়কে বালুভর্তি ট্রাক সকাল-সন্ধ্যায় রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। এতে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এছাড়া মহাসড়কের খানিক অংশ জুড়ে গড়ে ওঠা শতাধিক ভাঙাড়ির দোকানে লোহালক্কড়, পলিথিন, পুরাতন হাঁড়ি-পাতিলসহ নানা জিনিস কেনাবেচা হয়। ঢাকা বা চট্টগ্রামে মহাজনের আড়তে এসব মাল পাঠানোর সময় ট্রাকে লোড করা হয়। এসময় তৈরি হয় যানজট। দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও পথচারীরা। ভুক্তভোগীরা জানান, হামদহ-আরাপপুর বাইপাস সড়কের দুপাশে রয়েছে অসংখ্য বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফায়ার সার্ভিস ও মাইক্রোওয়েভ স্টেশন। আরও রয়েছে সদর হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট, পুলিশ লাইনস, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাসহ নানা শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে মানুষ আতঙ্কে থাকেন। কারণ প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তারা। ইতোমধ্যে প্রাণ গেছে অনেকের। পঙ্গু হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। ভাঙাড়ি লোহা ছুরি কিংবা নষ্ট পেরেকের আঘাতে জখম হয়েছেন পথচারীরা। এছাড়া রাত একটু গভীর হলে সড়কের আরাপপুর এলাকায় সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে উত্তরবঙ্গগামী মালামাল ভর্তি ট্রাক। রাস্তার ধারে গড়ে ওঠা খুপরি দোকানগুলোতে চালক, হেল্পারসহ অন্যদের চলে খাওয়াদাওয়া। ওই সময় জরুরি সেবার যানবাহন সহজে চলাচল করতে পারে না। অপরদিকে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার পাকা সড়কগুলোতে বাড়ি নির্মাণের সামগ্রী ফেলে রাখা হয়েছে। শহরের জিরো পয়েন্ট পায়রা চত্বর হয়ে ঝিনাইদহ-মুজিবনগর সড়কের স্থানীয় চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়ক বিভাগের পাকা রাস্তার আংশিক ফুটপাত, ড্রেন, পুরাতন শ্যালো ইঞ্জিন বিক্রেতা এবং লেদ মালিকদের দখলে। পৌরসভার পাকা ড্রেন দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল অট্টালিকা। অন্যান্য সড়কের খালি জায়গা জেলা পরিষদের কিছু অসাধু ব্যক্তির মদদে দখলবাজদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটি এবং সিটিজেন ফোরামের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের দফায় দফায় তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতঃপূর্বে কয়েক দফায় অভিযান পরিচালনা করা হলেও পৌরসভা এবং সড়ক বিভাগের নীরবতায় দখলবাজরা সরেনি। জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ জানান, পৌরসভার নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা যাচ্ছে না। তবে একাধিকবার মাইকিং করা হয়েছে। বালু ব্যবসায়ীদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে যেন দ্রুত তারা রাস্তার পাশ থেকে মালামাল সরিয়ে নেন। জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা জানান, নজরে আসা মাত্রই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নজরদারিতে রয়েছে। সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার পারভেজকে একাধিকবার মোবাইল ফোন করে পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রথীন্দ্রনাথ রায় জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়েও কাজ হচ্ছে না। এ বিষয়ে সড়ক বিভাগের এগিয়ে আসা দরকার। পাশাপাশি নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর