• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

সুস্বাদু খাদ্য কুমড়ো বড়ি তৈরির ধুম

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২৩  

শীতের উপাদেয় খাবার কুমড়ো বড়ি। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় কুমড়ো বড়ি তৈরির ধুম পড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কুমড়োর বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত গৃহিণীরা। শীতকালীন রসনা বিলাসের অন্যতম সুস্বাদু খাদ্য কুমড়োর বড়ি। শুধু গ্রাম অঞ্চলেই নয়, শহরে ও তৈরি কুমড়োর বড়ির চাহিদা বেশি। মাসকলাই ও কুমড়োর বড়ি তৈরিতে নারীদের ব্যস্ততা দেখা মেলে শীতের সময়ে।
এই কুমড়ো বড়ির চাহিদা থাকায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবেও বড়ি তৈরি হচ্ছে। দেশব্যাপী কুমড়ো বড়ির চাহিদা থাকায় ভেড়ামারায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুমড়োর আবাদ হয়ে থাকে। এ কুমড়ো দিয়েই তৈরি করা হয় বড়ি।

প্রায় ২ যুগ ধরে এ বড়ি তৈরি করে ভেড়ামারায় ২ শতাধিক পরিবার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সারাবছর ছাড়াও শীত মৌসুমে চাহিদা বেশি থাকায় কুমড়ো বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে ভেড়ামারার কুমড়ো বড়ি পল্লীর মানুষরা।

শীতকালীন সব ধরনের তরকারিতে বাড়তি স্বাদ আনয়নের জন্য কুমড়ো বড়ির কদর এখন গ্রাম ছাড়িয়ে শহরেও সমাদৃত হয়ে সমভাবে। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষেরই নিত্যদিনের খাবারে তরকারীর অতি প্রিয় অনুষঙ্গ এ কুমড়া বড়ি।

ভেড়ামারা উপজেলার ফকিরাবাদ গ্রামের আলেয়া খাতুন বলেন, পাকা ও পরিণত চাল কুড়ো কুঁরে তার সঙ্গে মাস কালাই কিংবা কালাই বেটে পাঁচফোড়ন ও কালোজিরা মশলা দিয়ে বিশেষ কায়দায় তৈরি করা হয় এই কুমড়ো বড়ি।

কুমড়ো বড়ি তৈরিতে বেশ পরিশ্রম ও ঝক্কি ঝামেলাও পোহাতে হয় বাড়ির বৌ-ঝিদের। আবার বড়ি তৈরির পর যদি তীব্র রোদ কিংবা তাপ না থাকে তাহলে হাড়ভাঙা খাটুনি আর দীর্ঘ সময়ের পরিশ্রম সবই বৃথা যায়। কেননা বড়ি বানানোর পর যত দ্রুত তা রোদের তাপে শুকানো যায় ততই সুস্বাদু হয় এই কুমড়ো বড়ি।

একই এলাকার আয়েশা খাতুন জানান, বছরে একবার এই কুমড়া বড়ি তৈরি করে থাকি। নিজেদের খাওয়া এবং মেয়ে জামাইর বাড়িতে পাঠাতে হয়। এবারও বাড়ির আঙ্গিনায় লাগানো চালকুমড়া সংগ্রহ করে মাসকলাই মিশিয়ে এ কুমড়ো বড়ি তৈরি করেছি। অতি যত্নের সঙ্গে গ্রামের নারীরা কুমড়ো বড়ি তৈরি করে।

বড়ি তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে ভেড়ামারা উপজেলার নারীরা জানান, বড়ি তৈরির আগের দিন ডাল ভিজিয়ে রাখতে হয়। এরপর চালকুমড়া ছিলে ভেতরের নরম অংশ ফেলে মিহিকুচি করে রাখতে হবে। তারপর কুমড়ো খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। ধোয়া হলে পরিষ্কার পাতলা কাপড়ে বেঁধে সারা রাত ঝুলিয়ে রাখতে হবে। পরে ডালের পানি ছেঁকে শিলপাটায় বেটে নিতে হবে। এবার ডালের সঙ্গে কুমড়া মেশাতে হবে। খুব ভালো করে হাত দিয়ে মেশাতে হবে যতক্ষণ না ডাল-কুমড়োর মিশ্রণ হালকা হয়। তারপর কড়া রোদে চাটি বা কাপড় বিছিয়ে বড়ির আকার দিয়ে একটু ফাঁকা ফাঁকা করে বসিয়ে শুকাতে হবে।

এই বড়ি তিন থেকে চার দিন এভাবে রোদে শুকানোর পর তা অনেকদিন ঘরে সংরক্ষণ করে ধীরে ধীরে খাওয়া যায়। 

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর