• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

জামালপুর ১ ‍আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন নূর মোহম্মদ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০২৩  

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে লড়তে জামালপুর-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন নূর মোহম্মদ।

রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে প্রার্থী হিসেবে জামালপুর-১ আসনে নূর মোহম্মদের নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নূর মোহাম্মদ ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে সক্রিয় ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেন। ছাত্রজীবন শেষ হলে তিনি ছাত্রলীগ থেকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে রাজপথে সাহসী ভূমিকা পালন করে নুর মোহাম্মদ ।

১৯৯১ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের সময়ে বকশীগঞ্জ দেওয়ানগঞ্জের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা হয়। সে সময় তিনি প্রতিটি নেতাকর্মীর পাশে দাঁড়ান। আদালতে গিয়ে তাদের জামিন করানোসহ দলীয় সকল নেতাকর্মীর বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতা করেন-নুর মোহাম্মদ।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জের আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়। সেই সময়ও সকল নেতাকর্মীর পাশে দাঁড়ান নুর মোহাম্মদ। তাইতো দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে নুর মোহমাম্মদ আস্থা ও ভরসার প্রতীক।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৩ সালে বিপুল সমর্থনে বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব সফল ভাবে পালন করেন ।

( তিন ) যুগেরও বেশি সময় ধরে নুর মোহাম্মদ এলাকায় বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ করে আসছেন। অ-সচ্ছল মানুষকে আর্থিক সহায়তা প্রদান, গরিব-মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, গাছের চারা বিতরণ, কৃষকদের মাঝে সার-বীজ ও নগদ অর্থ বিতরণ, অ-সুস্থদের নিজ অর্থে চিকিৎসার ব্যবস্থা, স্যানেটারি ল্যাট্রিন, টিউবয়েল, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে অ-সহায় মানুষের মাঝে চাল, ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ করেন তিনি।

এছাড়াও প্রতি মাসে বিভিন্ন কলেজ-ভার্সিটি পড়ুয়া ৫ শতাধিক দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীর পড়াশোনার খরচ বহন করেন সাদামনের এই মানুষটি। তার দেয়া অর্থে কমপক্ষে এক সহস্রাধিক এতিম অসহায় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তিনি।

জানা যায়, ঢাকায় ব্যবসা বাণিজ্য করলেও নিয়মিত খোজ খবর রাখেন জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) উপজেলার মানুষের। সময় পেলেই চলে আসেন এলাকার মানুষের মাঝে। সকলের খোজঁ খবর নেন এবং কার কি সমস্যা তা জেনে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন। কোন সমস্যায় পড়ে তার কাছে গিয়ে খালি হাতে ফেরত এসেছে মানুষ এমন নজির নেই। তিনি এলাকায় আসলেই নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ঢল নামে।

২০০৩ সালে দেশে মাত্র ৩৩ শতাংশ মানুষ স্যানিটেশনের আওতায় ছিলো। সে সময় দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের মানুষ বাড়ির আশপাশে,পুকুর পাড় এমনকি খোলা আকাশের নিচে মলত্যাগ করতো। এমনি একটি প্রত্যান্ত এলাকা ছিল ভারতীয় সীমান্তবর্তী জামালপুরের বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা। যেখানে ১৫ ভাগ বাড়িতেও ছিল না স্যানিটারি-ব্যবস্থা, ছিল না বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য টিউবওয়েল। বিষয়টি নজড়ে আসে সমাজ সেবক নুর মোহাম্মদের। তার উদ্যোগে এলাকার যেসব বাড়িতে স্যানিটেশনের ব্যবস্থা নেই এমন ৩৬ হাজার বাড়ি চিহ্নিত করা হয়।

পরবর্তীতে নিজস্ব অর্থায়নে ২০০৫ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ৪ বছরে স্যানিটেশন বিপ্লব গড়ে তোলেন তিনি। বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডে নিজের টাকায় ৩৬ হাজার স্যানেটারি ল্যাট্রিন ও ১৪ হাজার টিউবওয়েল বিতরণ করেন তিনি। ৩৬ হাজার পরিবারের মাঝে স্যানিটারি ল্যাট্রিন ও ১৪ হাজার টিওবয়েল বিতরণ করায় তার এই কর্মকান্ড দারুন প্রশংসিত হয়।

২০০৬ সালে তিনি উপজেলার প্রায় দেড় লাখ পরিবারের মধ্যে বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের চারা বিতরণ করেন এবং গাছ পরিচর্যার জন্য নগদ অর্থ দেন। নিজের কর্মী বাহিনী দিয়ে প্রতিটি বাড়িতে গাছের চারা রোপন করে দেন তিনি। বকশীগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি বাড়িতেই নুর মোহাম্মদের দেয়া গাছ রয়েছে। তার দেওয়া একটি গাছ কমপক্ষে ৩০/৪০ হাজার টাকা মূল্যের হয়েছে। অনেকেই নুর মোহাম্মদের দেওয়া গাছ কেটে ঘরের আসবাবপত্র বানিয়েছেন।

কেউ বা তার দেওয়া গাছ বিক্রি করে সংসারে লাগিয়েছেন। এমন কোন পরিবার নেই যে বাড়িতে নুর মোহাম্মদের কোন না কোন অনুদান নেই। তাইতো নুর মোহাম্মদের প্রতি মানুষের ভালোবাসার কমতি নেই। বৈশ্বিক করোনা মহামারীতে সবাই যখন ঘরবন্ধী ছিল তখন নূর মোহাম্মদ নিজস্ব অর্থায়নে ৭৫ লক্ষ টাকার খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন ।

অসচ্ছল প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়াশোনার ব্যয়ভার বহন করেন তিনি। মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দিরসহ এমন কোন্ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে নুর মোহাম্মদের অনুদান নেই। গত বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে ৫০ লাখ টাকার সার বীজ দিয়েছেন সমাজসেবক নুর মোহাম্মদ।

শীতের সময় হাজার হাজার পরিবারের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন তিনি। এছাড়া তিনি বিভিন্ন স্কুল মাদরাসার জন্য জমি দান নিজের অর্থে রাস্তাঘাট তৈরী করে বকশীগঞ্জ-দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার মানুষের কাছে নুর মোহাম্মদ এক মানবতার নাম।

নূর মোহাম্মদ বেশ কয়েকবার জামালপুর-১ (বকশীগঞ্জ-দেওয়ানগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর -১ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে আবুল কালাম আজাদ ও নূর মোহাম্মদকে যৌথভাবে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়। নূর মোহাম্মদের নাম দুই নম্বরে ছিলো। আবুল কালাম আজাদ নির্বাচন করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নূর মোহাম্মদ তার বিশাল কর্মী বাহিনী ও দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নৌকার জয় নিশ্চিত করতে মাঠে কাজ করেন।

জানা যায়,বকশীগঞ্জ উপজেলার নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের বাশঁকান্দা গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন নূর মোহাম্মদ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম হলেও তার চিন্তা-চেতনা ছিল সুদূরপ্রসারী। স্বপ্ন দেখতেন সমাজের নিপীড়িত অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর। কিন্তু সেই সাধ্য তার ছিল না। কিন্তু তিনি হাল ছাড়তে নারাজ। স্বপ্ন পূরণের জন্য তাকে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে। স্বপ্ন পূরনের আশায় শূন্যহাতে তিনি ঢাকায় চলে যান। সততা, পরিশ্রম আর মেধা দিয়ে সামনের দিকে এগোতে থাকেন তিনি।

এক সময় ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করেন। দিন দিন তার ব্যবসা প্রসারিত হতে থাকে। সততা, পরিশ্রম আর মেধা থাকলে স্বপ্ন যে হাতের মুঠোয় এসে ধরা দেয়, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জননেতা নূর মোহাম্মদ শূন্য থেকে তিনি আজ সমাজের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। একজন কর্মীবান্ধব পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ। তার রয়েছে বিশাল কর্মীবাহিনী।

জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) আসনে তার জনপ্রিয়তাও আকাশচুম্বী। এলাকায় তিনি বিশিষ্ট দানবীর হিসেবে পরিচিত। মানুষ কথায় কথায় বলে- ধন থাকলে নাকি মন থাকে না, আবার মন থাকলে নাকি ধন ধাকে না। তবে সমাজসেবক নূর মোহাম্মদ ধন এবং মন দুটোই দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা। তিনি তার উপার্জিত অর্থ জনকল্যাণে দুই হাতে বিলিয়ে দেয় ।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর