১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জবাসীর ভুমিকা
দৈনিক জামালপুর
প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
![](https://www.dainikjamalpur.com/media/imgAll/2024February/11-2402220402.jpg)
বিলাইসসা পাগলা। নোংরা তামাটে শরীর। মুখে অগোছালো দাড়ি। ফেব্রুয়ারির হাল্কা শীতের দিনেও তার উর্ধাঙ্গে কোনো কাপড় নেই। তার পেশি বহুল সুঠাম দেহ সহজেই নজর কাড়ে। বোগলে একটি কম্বল। হাতের তেল দেয়া বাঁশের লাঠি হঠাৎ সে দারুন কৌশলে মাথার উপরে ঘুরিয়ে এনে জিন্নাহ সড়কের (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সড়ক) কালো পিচের উপরে বসে পড়লো। সাদা খড়ি দিয়ে এখনকার দিনের কম্পিউটারে লেখা ‘সুতন্বী’ ফ্রন্টের মতো এক মাপের বিশাল বিশাল অক্ষরে রাজপথে লিখলো ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। তাকে ঘিরে তখন অনেক মানুষ। এরপর কি যেনো মনে হলো বিলাইস্সা পাগলার। ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ এর নিচে সে লিখলো ‘ পুলিশ জুলুম বন্ধ করো’। বাংলার প্রতি অসীম মমত্ব বোধ আর উর্দুর প্রতি তীব্র ঘৃনা ফুটিয়ে তুললো বিলাইস্সা পাগলা দুইটি লাইনে। দ্বিতীয় লাইনটি লিখে সে সমবেত মানুষের দিকে তাকিয়ে ভেক ভেক করে কুৎসিত দাঁত বের করে হাসতে লাগলো। তার হাসি ছড়িয়ে গেলো জনতার মধ্যে। তারাও হাসতে লাগলো। জনতার মধ্যে থাকা এক স্কুলছাত্র হাসির মাঝে হঠাৎ স্লোগান দিয়ে উঠলো ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। স্লোগান মূহূর্তেই ছড়িয়ে গেলো মুখে মুখে। কোত্থেকে ¯্রােতের মতো মানুষ এসে জড়ো হতে লাগলো বিলাইস্সার রাজপথের লেখা স্লোগান ঘিরে। কিছুক্ষণের মধ্যে বাঁশি বাজিয়ে জনতাকে ছত্রঙ্গ করার জন্য এলো পুলিশ। রাজপথ থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলো। লাভ হলো না। মিছিল বের হলো রাস্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে। পুলিশ এসে খুঁজতে লাগলো বিলাইস্সা পাগলাকে। কিন্তু ততক্ষনে সে হাওয়া। সে হঠাৎ আসে। স্লোগান লিখে হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। কোত্থেকে আসে কোথায় যায় কেউ জানেনা। নারায়ণগঞ্জের প্রবীন লেখক শাহেদ শাহেদ আলী মজনুর বয়স এই ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখে বিরাশি পূর্ণ হবে। ১৯৫২ সালে তিনি ছিলেন বারো বছরের কিশোর। বিলাইস্সা পাগলার উপরে উল্লেখিত বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ বিলাইস্সা পাগলাকে আমরা প্রায়ই রাজপথে স্লোগান লিখতে দেখতাম। নারায়ণগঞ্জের ভাষা আন্দোলনে রাজপথে স্লোগান লিখে আলোড়ন তুলেছিলেন বিলাইস্সা পাগলা। নামের সাথে পাগলা থাকলেও তিনি উন্মাদ ছিলেন না। ভাষার প্রতি ভালোবাসা থেকে তিনি যেসব ঝুঁকি নিতেন সে কারনে ভালোবেসে তার নামের সাথে নারায়ণগঞ্জের মানুষ পাগলা শব্দটি জুড়ে দিয়েছিলো। তিনি শ্রমজীবী শ্রেণীর মানুষ ছিলো বলে আন্দাজ করে সবাই। পুলিশ যখন তাকে গ্রেফতার করতে তৎপর হলো তখন তিনি রাতে স্লোগান লেখা শুরু করলেন। তখন থেকে তিনি প্রকাশ্যে কম আসতেন। তবে সবাই বিলাইস্সার হাতের লেখা চিনতো। বুঝতো কে লিখেছে এই লেখা।’ ১৯৪৭ সাল থেকেই নারায়ণগঞ্জে ভাষা আন্দোলন শুরু বলা যায়। বরিশালের ভাষা সৈনিক মোশারফ হোসেন নান্নু ‘ধ্রুবতারা’ পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘১৯৪৭ এর ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জের বিজলী প্রেস থেকে স্ফুলিঙ্গ নামের একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটিতে ড. এনামুল হকের একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। যার শিরোনাম ছিলো, ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা কেন?’ লেখাটির প্রথম কিস্তি প্রকাশিত হয়েছিলো। এবং পরবর্তী দুই সংখ্যায় এটি শেষ হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু পাকিস্তান সরকার ওই সংখ্যাটি বাজেয়াপ্ত করে। এবং পরে বিজলী প্রেসটিকেও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়। ভাষার জন্য বিজলী প্রেসের মালিক, শ্রমিক কর্মচারিদের জন্য তখন নিশ্চই ভয়াবহ বিপদের দিন ছিলো। তারা আইনী হয়রানীর শিকার হয়েছিলেন কিনা তা জানা যায়না। ১৯৪৮ সালের ২ মার্চ ঢাকায় সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। সংগ্রাম পরিষদ ১১ মার্চ সারা পূর্ব বাংলায় ধর্মঘট আহ্বান করে। ১১ মার্চ নারায়ণগঞ্জে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হয়। বিভিন্ন স্কুল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল শিল্পাঞ্চলের লক্ষ্মী নারায়ণ কটন মিল ও ঢাকেশ্বরী কটন মিলেও সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হয়। সেখানে ছাত্র ও শ্রমিকদের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। ১৫ মার্চ দৈনিক ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ ‘বাংলা ভাষার দাবিতে নানা স্থানে হরতাল’ শিরোনামের সংবাদে উল্লেখ করে ‘নারায়ণগঞ্জের লক্ষ্মী নারায়ণ মিলের শ্রমিকগণ ও ঢাকেশ্বরী মিল হাইস্কুলের ছাত্ররা হরতাল পালন করে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ইতিহাস গ্রন্থে এম এ বার্নিক বলেছেন, ‘অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদের একটি দল ভাষা আন্দোলনের পক্ষে জনমত গঠনের জন্য নারায়ণগঞ্জ সফর করেন। এতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। নারায়ণগঞ্জের মিল শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ভাষা আন্দোলনের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার জন্য সফররত নেতৃবৃন্দের সাথে ঐক্যমত্য পোষণ করেন। এবং যেকোনো মুল্যে হরতাল কর্মসূচি সফল করার জন্য শপথ গ্রহণ করেন।’ ১৯৫২ সালের জানুয়ারির শুরুতেই নারায়ণগঞ্জে মফিজ উদ্দিন আহমেদ ও আজগর হোসেন ভ্ইূয়াকে যথাক্রমে আহ্বায়ক ও যুগ্ম-আহ্বায়ক করে সর্বদলীয় ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ’৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট শেষে বিকেলে রহমত উল্লাহ মুসলিম ইনস্টিটিউটের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ চলাকালীন সময়েই আবুল হাশেমের কাছ থেকে নারায়ণগঞ্জবাসী জানতে পারে ঢাকায় ছাত্র মিছিলে গুলি হয়েছে। এবং কয়েকজন ছাত্র মারা গেছে। মূহূর্তেই নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ছাত্রীদের বিশাল মিছিল বের হয় প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ বেগমের নেতৃত্বে। ছাত্রদের উপর গুলিবর্ষনের প্রতিবাদে বাস ও ট্যাক্সি ড্রাইভার-হেলপাররা ধর্মঘট শুরু করলে বাস, ট্যাক্সি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ২১ ফেব্রুয়ারি রাতেই রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারনের জন্য জিন্নাহ সড়কের (বর্তমান বঙ্গবন্ধু সড়ক) চাষাড়ার পাক-বে ভবনের (নারায়ণগঞ্জে এটি পাক ভাই বিল্ডিং হিসেবে পরিচিত, বর্তমানে যে ভবনে নারায়ণগঞ্জ কিন্ডারগার্টেন অবস্থিত) পেছনের পুকুর পারে পূর্ব পাকিস্থান লেবার ফেডারেশনের কার্যালয়ে একটি গোপন সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় শফি হোসেন খান, ডা. মজিবুর রহমান, শামসুজ্জোহা, বজলুর রহমান, মশিউর রহমান, নাজির মোক্তার, বাদশা মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় ২৩ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জে একটি বড় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়। সে রাতেই শ্রমিক জামায়াতের জন্য শফি হোসেন খান ও কাজী মজিবর শ্রমিক জামায়াতের জন্য শ্রমিক এলাকায় চলে যান। ভাষা আন্দেলন গবেষক রতন লাল চক্রবর্তী বলেন, ঢাকার গুলিবর্ষণের খবর নারায়ণগঞ্জে পৌঁছলে ২২ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জে শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রা ও সমাবেশ ঘটে। নারায়ণগঞ্জের ভাষা আন্দোলনে শ্রমিক শ্রেণী ও সর্বসাধারনের অংশগ্রহণ ছিলো উল্লেখযোগ্য। ২৩ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জে হরতাল পালিত হয়। এবং পূর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী বিকেলে চাষাড়ায় তোলারাম কলেজের মাঠে সমাবেশে ছাত্রদের সাথে গোদনাইল শিল্পাঞ্চল থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক যোগ দেয়। ‘আন্দবাজার পত্রিকা’ এর দুইদিন পরে ‘নারায়ণগঞ্জে পূর্ন হরতাল, ঢাকায় গুলি চালানোর প্রতিবাদ’ শীর্ষক নিউজে লেখে ‘নারায়ণগঞ্জে ঢাকায় গুলি চালানোর প্রতিবাদে সম্পূর্ণ হরতাল পালিত হয়। এ হরতালে শহরতলীর ঢাকেশ্বরী ১ নং, ২ নং, চিত্তরঞ্জন, লক্ষী নারায়ণ, আদর্শ কটন মিলস, আদমজী জুট মিল, নারায়ণগঞ্জ জুট কোম্পানীসহ সাতটি কারখানার প্রায় পনের হাজার শ্রমিক জড়ো হইয়া পড়ে। অপরাহ্নে শ্রমিক নেতা জনাব ফয়েজ আহাম্মদের সভাপতিত্বে নারায়ণগঞ্জে এক সভা হয়। এবং উহাতে প্রায় বিশ হাজার লোক হয়। এই সভার বৈশিষ্ট এই যে, সভায় বা উহার আশে পাশে কোনো পুলিশ দেখা যায় নাই। বহু বক্তা বর্তমান সরকারের ও পরিষদ সদস্যদের তীব্র সমালোচনা করিয়া তাহাদের পদত্যাগ দবি করেন। ’ ২৫ ফেব্রুয়ারিও ঘটনার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে ধর্মঘট পালিত হয়। দৈনিক আজাদের ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সংখ্যায় এ সম্পর্কে লেখা হয়েছে,‘২৫ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের শিল্প এলাকায় শ্রমিকরা পূর্ণ ধর্মঘট পালন করে। শহরে যানবাহন দোকানপাটসহ সবকিছু বন্ধ থাকে। সকাল থেকেই জনসাধারণ ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করতে থাকেন। এসব বিক্ষোভে মহিলারাও যোগদান করেন।’ ভাষা আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জের নারীদের সংগঠিত করা মমতাজ বেগম ছাত্রীদের-নারীদের পাশাপাশি শ্রমিকদেরও সংগঠিত করেন। তিনি আদমজী জুট মিলের সে সময়ের শ্রমিক নেতা আবুল হাশেম মোল্লার আহ্বানে শ্রমিকদের সাথে কয়েক দফা বৈঠক করেন। শ্রমিকদের বোঝাতে সক্ষম হন যে, এ আন্দোলন সফল না হলে শুধু ভাষা নয়, আমাদের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে যাবে। তার এ তৎপরতার ফলে আদমজী ও গোদনাইলের বিভিন্ন মিলের হাজার হাজার শ্রমিক ভাষা আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। ১৯৫২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন দিন। দিনটি ছিলো শুক্রবার। নারায়ণগঞ্জের ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক মমতাজ বেগমকে নারায়ণগঞ্জ মহকুমা (বর্তমান নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহকুমা ছিলো) প্রশাসকের নির্দেশে একই দিন সকালে মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করে গ্রেফতার করে সকাল ১০টায় জেলা জজ আদালতে (কালির বাজারে তখন কোর্ট ভবন ছিলো) হাজির করা হয়। তার গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজার-হাজার ছাত্রছাত্রী-শ্রমিক-জনতা রাজপথে নেমে আসে। জেলা জজ আদালত ঘেরাও করে ফেলে। নবীগঞ্জের আলাউদ্দিন মিয়া নগদ ১০ হাজার টাকা জমা দিয়ে জামিনের আবেদন করলেও জামিন নাকচ করে দেয়া হয়। জামিন নাকচ করে দিয়ে মহকুমা হাকিম ইমতিয়াজি উল্টো বাইরে বের হয়ে মাইকে ঘোষণা করেন, মমতাজ বেগমকে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের কারনে নয় মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তহবিল তসরুফের কারনে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ কথা শুনে জনতা আরো উত্তেজিত হয়ে ওঠে। জনতার উত্তেজনার কারনে মমতাজ বেগমকে আদালত থেকে নামিয়ে কোর্ট হাজতে পাঠানো যাচ্ছিলো না। আদালত চত্ত্বর লোকে লোকারণ্য ছিলো। দো’তলায় আদালত থেকে একতলায় আদালত ভবনের পশ্চিম পাশে কোর্ট হাজতে মমতাজ বেগমকে নিয়ে আসতে গেলে জনতা মমতাজ বেগমকে ছিনিয়ে নিতে পারে- এ আশঙ্কায় ছিলেন মহকুমা প্রশাসক। বিপুল সংখ্যক ছাত্র-শ্রমিক-জনতার তুলনায় পুলিশের সংখ্যা ছিলো খুব কম। একদিকে বিপুল জনতা অন্যদিকে ঢাকা থেকে বারবার নির্দেশ আসছিলো মমতাজ বেগমকে ঢাকায় পাঠানোর। নারায়ণগঞ্জের মহকুমা প্রশাসক পরিস্থিতি সামাল দিতে ইপিআর (বর্তমানে বিজিবি’র মতো বাহিনী) ও সেনাবাহিনী চাইলে বিক্ষোভ দমনে ইপিআর ও পরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পাঞ্জাব রেজিমেন্টকে নারায়ণগঞ্জে পাঠানো হয়। এ খবর শুনে ছাত্র-জনতা আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ঢাকার দোহার পুল থেকে বর্তমানে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের পঞ্চবটি পর্যন্ত আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দারা (যারা বেশিরভাগ ছিলেন বিভিন্ন শিল্প কারখানার শ্রমিক ও কৃষক) রাস্তায় বড়-বড় গাছ কেটে ফেলে ও দু’পাশের ইট ভাটা থেকে ইট এনে রাস্তার উপর জড়ো করে ব্যারিকেড তৈরী করেন। এ ব্যারিকেড সরিয়ে বিকেলে পাঞ্জাবী সৈন্যরা শহরে এসে মমতাজ বেগমকে গাড়িতে তুললে এবার পুলিশের পাশাপাশি ইপিআর ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে জনতার সংঘর্ষ শুরু হয়। দফা দফায় গুলি, লাঠিচার্জ করে গাড়ি এগুতে থাকে। তখনকার কিশোর শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার মমতাজ বেগমকে বহন করা পুলিশ ভ্যানটির টায়ারে ছুরি মেরে একটি টায়ার ছিদ্র করে দেন। তাকে বহনকারি গাড়িটি চাষাড়ায় পৌছলে ইপিআর, সেনাবাহিনীর সাথে জনতার অসম যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। ছাত্র-শ্রমিকের বৃষ্টির মতো ঢিল এর বিপরীতে ইপিআর, সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস, গুলি। শত-শত নারী, শিশু, কিশোর, ছাত্র, শ্রমিক আহত হয়। ভাষা সৈনিক আহমদ রফিক লিখেছেন, ‘নারায়ণগঞ্জে ছাত্র জনতা ও শ্রমজীবী মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণে ভাষা আন্দোলনের যে অধ্যায় রচিত হয় তা ছিলো নারায়ণগঞ্জ শহরবাসী মানুষের জন্য গর্ব ও অহংকারের। ভাষা আন্দোলনের আগুন শুধু নারায়ণগঞ্জ শহরে সীমাবদ্ধ ছিলোনা , শহরতলীসহ আশেপাশের এলাকা পর্যন্ত ছিলো এর বিস্তার। ’ সারাদেশের ভাষা আন্দোলনের সাথে নারায়ণগঞ্জের আন্দোলনের বিশেষত্ত্ব ছিলো এখানে ভাষা আন্দোলনে ছাত্রদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক শ্রমিক ও নারীরা অংশগ্রহণ করেন। (সূত্র: ভাষা আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জ নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে)
![দৈনিক জামালপুর দৈনিক জামালপুর](https://www.dainikjamalpur.com/media/PhotoGallery/2024July/WhatsApp-Image-2024-07-05-at-045101_cbdf93ae-2407060401.jpg)
- স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ
- ওদের খুঁজে বের করুন উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে
- বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি
- সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আজ
- ‘বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা রাষ্ট্রকে অকার্যকর করতে চেয়েছিল ’
- কারফিউ তুলে নেয়া হবে কবে, জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসা ও রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার
- দূরপাল্লার বাস চলছে
- প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু
- রুম ছিল খালি, বাথরুমে গিয়ে মা পেলেন মিমের মরদেহ
- ৯১ সাংবাদিককে ধরে নিয়ে গেছে ইসরায়েলি বাহিনী
- অতীতের সব রেকর্ড ভাঙলো হাওরের মাছ উৎপাদন
- সালমান খানকে হত্যাচেষ্টা: যেভাবে শুটারদের গাইড করেন লরেন্সের ভাই
- শেষ ওভারের নাটকীয়তায় হারলো পাকিস্তান, ফাইনালে শ্রীলংকা
- চাকরির সুযোগ দিচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ
- বিপদ-মসিবত থেকে রাস্তাঘাটে নিরাপদ থাকার দোয়া
- বাস-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিথর রাশেদ
- স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের ভিডিও ধারণ, প্রবাসীসহ গ্রেফতার ৩
- কামড় দেওয়ার অভিযোগে কারাগারে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান
- সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান
- আহতদের চিকিৎসার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
- মেট্রোরেল স্টেশনে হামলার ঘটনায় ৬ জন ৫ দিনের রিমান্ডে
- মুক্তিযুদ্ধের মর্মমূলে আঘাতের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ঐক্যের আহ্বান
- বিজিবি`র নিরাপত্তায় সারাদেশে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চলাচল শুরু
- বিএনপি-জামায়াতের তান্ডবে আহতদের দেখতে হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী
- সহিংসতায় হতাহতদের স্মরণে রাজধানীসহ সারাদেশে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত
- দুর্বৃত্তরা ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি গাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে
- কক্সবাজার উপকূলে নিখোঁজ দু’জনের মরদেহ উদ্ধার
- কোটা আন্দোলনকালে ধ্বংসলীলার তদন্ত ও বিচার দাবি অর্থনীতি সমিতির
- সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আগামীকাল
- কলকাতার ৪৭ সিনেমা হলে ‘তুফান’
- ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তি: ভারত হয়ে ভুটান যাবে বাংলাদেশের ট্রেন
- ঝালকাঠিতে জেলা আইন শৃঙ্খলা উন্নয়ন বিষয়ক সভা
- ভারত-বাংলাদেশ ট্রানজিটের সুবিধা-অসুবিধা
- রেল-ট্রানজিটে খুলবে নেপাল ভুটানের পথ
- টাঙ্গাইলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ
- বিমানবন্দর গোলচত্বরে হচ্ছে বৃহত্তম আন্ডারপাস
- সরিষাবাড়ীতে অদম্য মেধাবী সিয়াম পেল খবরের কাগজ শিক্ষাবৃত্তি
- মেলান্দহে রথযাত্রা
- প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ধূসর স্মৃতি: শাহ্ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান
- ‘বনখেকো’ মোশাররফ গড়েছেন ১১২ কোটির সম্পদ
- প্রয়োজন কোটা সংস্কার
- যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন: জামালপুরে আনন্দ মিছিল
- মোতায়েনরত সেনাসদস্যদের কার্যক্রম পরিদর্শন সেনাপ্রধানের
- বিদেশ থেকে মানুষ চিকিৎসা নিতে বাংলাদেশে আসবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- প্রশ্নফাঁস চক্রের ১৭ জনের নাম-ছবি প্রকাশ্যে
- কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের সদস্য হলো বাংলাদেশ
- সাজেকে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ, বাঘাইছড়িতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
- ‘জনসেবায়’ বাংলাদেশ হতে পারে পাশ্চাত্যের অনুকরণীয়
- ‘টাকার কুমির’ এডিসি কামরুল স্ত্রীকে কিনে দেন ৫ জাহাজ
![দৈনিক জামালপুর দৈনিক জামালপুর](https://www.dainikjamalpur.com/media/PhotoGallery/2024July/3-2407091212.jpg)