• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

ইসলাম ধর্মে কন্যা সন্তানের অধিকার ও মর্যাদা

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০২০  

ইসলাম শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম। এখানে সবাইকে তার জায়গা থেকে অধিকার ও মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে। তেমনি মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা কন্যা সন্তানকেও অনেক মর্যাদা ও অধিকার দিয়েছেন।

কিন্তু ইসলাম পূর্ব জাহেলী যুগে কন্যা সন্তানদের সীমাহীন অবহেলা করা হতো। তাদেরকে বাঁকা চোখে দেখা হতো। অনেক সময় জীবন্ত কবর দেয়া হতো। 

 

 

 

তখন মানবতা বলে কিছু ছিল না। সমাজের ভয়ে রাতের অন্ধকারে বাবা নিজেই হত্যা করতো তার কন্যাকে। এই অবস্থায় আবির্ভাব হলো মানবতার ধর্ম ইসলামের। রাসূল (সা.) কন্যা সন্তানকে হত্যা করা হারাম ঘোষণা করলেন। তিনি কন্যা তথা নারীদের সম্মান,মর্যাদা ও গুরুত্ব তুলে ধরলেন সমাজের কাছে। হাদিসে এসেছে,

 

নাবীত ইবনু শুরাইত (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, যখন কোনো ব্যক্তির কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে, সেখানে আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদের পাঠান। তারা গিয়ে বলে তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, হে ঘরবাসী! তারা কন্যাটিকে তাদের ডানার ছায়ায় আবৃত করে নেয়, তার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় এবং বলে একটি অবলা জীবন থেকে আরেকটি অবলা জীবন ভূমিষ্ঠ হয়েছে এবং তত্ত্বাবধানকারী কেয়ামত পর্যন্ত মহান আল্লাহর  সাহায্যপ্রাপ্ত হবে। (মুজামুস সগীর- হা  ৭০)।

 

পবিত্র আল কোরআনে পুত্রের পুর্বে কন্যার কথ উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়িালা ইরশাদ করেন,

 

لِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَخْلُقُ مَا يَشَاء يَهَبُ لِمَنْ يَشَاء إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَن يَشَاء الذُّكُورَ

 

নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তা'আলারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। (সূরা আশ্ শূরা, আয়াত ৪৯)।

 

এখানে পুত্রের পূর্বে কন্যাকে উল্লেখ করার কারণ সম্পর্কে আল্লামা আলূসী তার তাফেসিরে এ ব্যাপারে কতিপয় মত উল্লেখ করেন। তন্মধ্যে নিম্নে দু‘টি উল্লেখ করা হলো-

 

 

 

(১) সেখানে বলা হয় নারীদের দুর্বলতার ভিক্তিতে তাদের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য প্রকাশের জন্য এখানে তাদেরকে পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, আর বিশেষ করে তারা এক সময় জীবন্ত কবরস্থ হওয়ার নিকটতম যুগে ছিল।

 

(২) আরো বলা হয় তাদের পিতাদেরকে সান্তনা প্রদর্শনের নিমিক্তে, কেননা তাদেরকে শুরুতে উল্লেখ করা তাদের সম্মান ও মর্যাদার বহিঃপ্রকাশ। তারা সম্মানের উপযুক্ত হওয়ার কারণ হলো-

 

‘নিশ্চয়ই তারা মহান আল্লাহর মাখলূক (বান্দা) বৃদ্ধির মাধ্যম। (আল্লামা আলূসী, তাফসীরে রুহুল মাআনী-২৫৫৪)।

 

ইমাম ইবনুল কাইয়্যুম এ ব্যাপারে দু‘টি মত উল্লেখ করার পর লিখেন- আমার নিকট আরো একটি কারণ ফুটে উঠে, তা হলো আল্লাহ ওই সত্তাকে পূর্বে উল্লেখ করেন, যে সত্তাকে (নারীদেরকে) জাহেলী যুগের  লোকেরা পশ্চাতে রাখত, যেন এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো এমন বর্ণনা দেয়া যে, তোমাদের নিকট পরিত্যক্ত সেই তুচ্ছ সত্তা আমার নিকট বর্ণনার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত। (ইবনুল কাইয়্যুম, তুহফাতুল মাওলুদ-২৭ পৃঃ)।

 

জাহেলী যুগে কারো কন্যা সন্তান জন্ম নিলে কাফিরা অপমানজনক মনে করত। যেমন- আল্লাহ তায়ালা মুশরিক ও কাফিরদের এ নিন্দনীয় অভ্যাস বর্ণনা করে বলেন,

 

وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُمْ بِالأُنثَى ظَلَّ وَجْهُهُ مُسْوَدًّا وَهُوَ كَظِيمٌ

 

يَتَوَارَى مِنَ الْقَوْمِ مِن سُوءِ مَا بُشِّرَ بِهِ أَيُمْسِكُهُ عَلَى هُونٍ أَمْ يَدُسُّهُ فِي التُّرَابِ أَلاَ سَاء مَا يَحْكُمُونَ

 

 

 

‘তাদের কাউকে যখন কন্যা সন্তানের  সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন তার মুখ কালো হয়ে যায়, আর সে অন্তর্জ্বালায় পুড়তে থাকে। লজ্জায় সে মানুষ থেকে মুখ লুকায় খারাপ সংবাদ পাওয়ার কারণে।  সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে থাকতে দেবে, না তাকে মাটির নীচে পুতে ফেলবে। শুনে রাখ, তাদের ফয়সালা খুবই নিকৃষ্ট।’ (সূরা আন্ নাহল, আয়াত ৫৮-৫৯)।

 

এ বিষয়ে রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা কোরআনুল কারিমে আরো বলেন,

 

আরবি

 

وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُم بِمَا ضَرَبَ لِلرَّحْمَنِ مَثَلًا ظَلَّ وَجْهُهُ مُسْوَدًّا وَهُوَ كَظِيمٌ

 

‘তাদের কাউকে যখন সংবাদ দেয়া হয় সেই সন্তানের যা তারা দয়াময় আল্লাহর প্রতি আরোপ করে, তখন তার মুখমণ্ডলে কালিমা ছেয়ে যায়, আর মন দুঃখ-বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়ে যায় ‘ (সূরা আয্ যুখরুফ, আয়াত ১৭)।

 

ইমাম ইবনুল কাইয়্যুম বলেন- কন্যার (জন্মের) কারণে অসন্তুষ্ট হওয়া জাহেলী স্বাভাবের অন্তর্ভুক্ত।

 

কন্যার প্রতি দয়ালু  পিতার জন্য কন্যা জাহান্নামের প্রতিবন্ধক হবে হাদিসে এসেছে, ইমাম আহমাদ, বুখারী ও ইবনু মাজাহ্ ‘উক্ববাহ্  (রা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি,

 

‘যে ব্যক্তির তিন কন্যা হবে, আর সে তাতে ধৈর্য ধারণ করবে, তাদেরকে স্বীয় সামর্থ্য মোতাবেক পানাহার ও পরিধান করাবে, তবে তারা জাহান্নামের আগুন ও তার মধ্যে পর্দা হয়ে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি হয়ে যাবে।

 

ইমাম বুখারী ও মুসলিম আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমার নিকট একটি নারী তার দু‘কন্যাসহ আসলো। সে আমার নিকট প্রার্থনা করল, কিন্তু সে আমার নিকট থেকে একটি খেজুর ব্যতীত আর কিছু পেল না। আমি তাকে তাই দিয়ে দিলাম। সে তা গ্রহণ করে তার উভয় কন্যার মাঝে ভাগ করে দিলো,নিজে তা হতে কিছুই খেলো না। তারপর সে উঠে তার দুই মেয়ের সঙ্গে চলে গেল।

 

নবী (সা.) আমার নিকট আসলেন, তখন আমি তাঁকে উক্ত ঘটনা শুনালাম।

 

নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তিকে কন্যাদের মধ্য হতে কোনো ব্যাপারে পরীক্ষা করা হবে, আর সে এমতাবস্থায় তাদের সঙ্গে ইহসান করে, তবে তার জন্য (জাহান্নামের) আগুনের মাঝে তারা প্রতিবন্ধক হবে ‘ (সহিহ বুখারী- হা৫৫৯৫)।

 

যে পিতা তার কন্যা সন্তানের ইহসান করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। ইমাম বুখারী ও ইবনু মাজাহ ইবনু‘আব্বাস (রা.) হতে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

 

যে ব্যক্তি দু’কন্যা লাভ করল, অতঃপর সে তাদের উভয়ের প্রতি ইহসান করল, তার উভয়ে যতদিন তার নিকট থাকল বা সে যতদিন তাদের নিকট থাকল, তবে তারা উভয়ে তাকে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করাবে। (আল আদব আল মুফরাদ-হা ৭৭)।

 

 

 

যদি কারো একটিও কন্যা হয়, আর সে তার প্রতি ইহসান করতে থাকে তবে সেও  ইন্শা-আল্লাহ-তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। যেমন- ইমাম আহমাদ, ত্ববারানী ও হাকিম আবূ হুরাইরাহ্ (রা.) এর উদ্ধতিতে নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

 

‘যে ব্যক্তির তিন কন্যা হয়, আর সে তাদের সংকট, দুঃখ ও সুখের ক্ষেত্রে ধৈর্যধারণ করে, তবে আল্লাহ তায়ালা তার সে কন্যাদের প্রতি করুণার কারণে তাকে তাঁর জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। (সহিহ বুখারী- হা ১২৪৮)। 

 

এক ব্যক্তি আরজ করল, ‘হে রাসূলুল্লাহ (সা.)! দু’কন্যা (যদি তিনের পরিবর্তে দু’কন্যা হয়)। (সুনান আবূ দাউদ- হা ৪৭২৩)।

 

তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন- অথবা দুই। অর্থাৎ-যদি দু’কন্যাও হয়, তবে সে দু’জনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর মাধ্যম হবে।

 

এক ব্যক্তি আরজ করল অথবা এক কন্যা ইয়া রাসূলুল্লাহ তিনি (সা.) (উত্তরে) বলেন, অথবা একজন। (মুসনাদ আহমাদ-হা৮৪২৫)।

 

নিজের চেয়ে কন্যাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়ার ফজিলত অনেক,ইমাম মুসলিম ‘আয়িশাহ (রা.) হতে বর্ণনা করেন, এক দারিদ্র্য নারী তার দু’কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হলো। আমি তাকে খাওয়ার জন্য তিনটি খেজুর দিলাম, সে তার মধ্য হতে প্রত্যেক কন্যাকে একটি করে দিয়েছিল। অবশিষ্ট খেজুরটি সে খাওয়ার জন্য মুখে যখন উঠাল, উভয় কন্যা তার নিকট তা চেয়ে বসল। তখন যে খেজুর সে নিজে খাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছিল সেটিও তাদের উভয়ের মধ্যে বন্টন করে দিলো। নারীটির কর্মকাণ্ড আমাকে হতবাক করে ফেলল। আমি তার সে কর্মকাণ্ড রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বর্ণনা দিলে তিনি (সা.) বলেন,

 

‘অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা তার এই আমলের কারণে তাকে (জাহান্নামের) আগুন হতে মুক্তি দেবেন।’ (সহিহ মুসলিম- হা ১৪৮২৬৩০)।

 

অন্যান্য ধর্মের তুলনায় ইসলাম কন্যা সন্তানকে অনেক মর্যাদা দিয়েছে যেমন উত্তরাদিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদে কন্যার অংশ নির্ধারণ করে দিয়েছে ইসলাম। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 

‘আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তান-সন্ততির (অংশ) সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন, পুরুষ দুই নারীর অংশের সমান পাবে, তবে সন্তান-সন্ততি যদি শুধু দু‘জন নারীর অধিক হয় তাহলে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তির তিন ভাগের দু‘ভাগ পাবে। আর কেবল একটি কন্যা থাকলে সে অর্ধেক পাবে এবং তার পিতা-মাতা উভয়ের প্রত্যেকে রেখে যাওয়া সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে যদি তার সন্তান থাকে, আর যদি তার সন্তান না থাকে এবং তার ওয়ারিশ মাতা-পিতাই হয়, সে অবস্থায় তার মাতার জন্য এক-তৃতীয়াংশ, কিন্তু তার ভাই-বোন থাকলে, তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ,(ওইসব বন্টন হবে) তার কৃত ওয়াসীয়াত অথবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমরা জানো না তোমাদের পিতা এবং সন্তানের মধ্যে কে তোমাদের পক্ষে উপকারের দিক দিয়ে অধিকতর নিকটবর্তী। (এ বন্টন) আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাশীল। (সূরা আন নিসা, আয়াত ১১)।

 

ইমাম আহমাদ, আবূ দাউদ, আত তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, ও হাকিম (রা.) জাবির ইবনু‘আবদুল্লাহ (রা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন,

 

 

 

সা‘দ ইবনু রাবী’র স্ত্রী সা‘দ এর পক্ষ হতে স্বীয় দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নিকট উপস্থিত হযে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! এরা সা‘দ ইবনু রাবী‘র দুই মেয়ে, তাদের পিতা উহুদের যুদ্ধে আপনার সঙ্গে (উপস্থিতিতে) শাহাদাতবরণ করেন। অতঃপর তাদের চাচা তাদের মাল-সম্পদ নিয়ে নেয়, তাদের দু‘জনের জন্য কোনো মাল অবশিষ্ট রাখেনি, অথচ মাল-ধন ব্যতীত তো উভয়ের  বিয়ে দেয়া সম্ভব নয়।

 

নবী (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা এ ব্যাপারে ফয়সালা করবেন। (মুসনাদ আহমাদ- হা ১৪৭৯৮, সুনান আত তিরমিযী- হা ২০৯২, হাসান, সুনান আবূ দাউদ- হা ২৮৯১)।

 

এক্ষেত্রে মীরাসের আয়াত অবতীর্ণ হয়। রাসূল (সা.) তার চাচাকে খবর পাঠালেন,

 

‘সা‘দ এর দুই মেয়েকে দুই তৃতয়িাংশ, উভয়ের মাকে অষ্টমাংশ প্রদান করো, আর যা অবশিষ্ট থাকে তা তোমার। (সুনান আবূ দাউদ- হা ২৮৮৮, সুনান আত তিরমিযী- হা ২০৯২, হাসান)।

 

ইমাম তিরমিযী উক্ত বিষয়ে নিন্মের শিরোনাম আরোপ করেন,

 

মেয়েদের মীরাস সম্পর্কিত যা কিছু বর্ণনা হয়েছে সে বিষয়ের অধ্যায়। (জামে আত তিরমিযী-৬২২৩,মাশা, ৪৪১৪)।

 

ইমাম বুখারী ও মুসলিম সা‘দ ইবনু আবি ওয়াক্কাস (রা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি মক্কায় এমন কঠিন  অসুস্থতায় পতিত হই যে, মৃত্যু অতি নিকটে, নবী (সা.) আমাকে দেখার জন্য আগমন করেন, তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! নিশ্চয়ই আমার নিকট পর্যাপ্ত ধন রয়েছে, তবে আমার এক কন্যা ব্যতীত আর কেউ ওয়ারীস নেই। অতএব, আমি কি আমার দনের দুই তৃতীয়াংশ সাদাক্বাহ করে দেবো নবী (সা.) বললেন না।

 

তিনি (সা.) বলেন, আমি বললাম, তবে অর্ধাংশ নবী (সা.) বলেন, না।

 

আমি বললাম, এক তৃতীয়াংশ

 

নবী (সা.) বলেন, এক-তৃতীয়াংশও অনেক। নিশ্চয়ই তুমি স্বীয় সন্তানকে অর্থশীল রেখে যাবে, তা তার চেয়ে উত্তম যে, তুমি তাদেরকে এমন রিক্ত হস্ত রেখে যাবে যে তারা লোকেদের নিকট হাত পেতে ফিরবে.....(সহিহ বুখারী- হা ৬৭৩৩)।

 

উক্ত হাদিস দ্বারা এ কথা স্পষ্ট হয় যে, নবী (সা.) মীরাসের ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশের হেফাজতের উদ্দেশ্যে সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রা)-কে এক তৃতীয়াংশের অধিক মাল সাদাক্বাহ  করার ওয়াসীয়াতের অনুমতি দেননি। বরং এক-তৃতীয়াংশের অনুমতি দেয়া সঙ্গে সঙ্গে তাই অধিক বলে অভিহিত করেন।

 

এ হাদিস নবী (সা.) যে রহস্যটিকে বর্ণনা করেন, তা হলো মেয়েকে মীরাসের অংশ প্রদান করে এমন অভাব মুক্ত করে দাও যেন সে লোকদের সামনে হাত না পাতে। আর তা মাল সাদাক্বাহ করার চেয়েও উত্তম।

 

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর