• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

ধুনটে ওসির ভালবাসায় সিক্ত যমজ তিন ভাই

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০  

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় হতদরিদ্র শিক্ষার্থী সেই যমজ তিন ভাইয়ের লেখাপাড়ার দায়িত্ব নিলেন থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা। যমজ তিন ভাইয়ের নাম শাফিউল হাসান, মাফিউল হাসান ও রাফিউল হাসান। তিনজনই এইচএসসি প্রথম বর্ষে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে বগুড়া সরকারি শাহ সুলতান কলেজে বিজ্ঞান শাখায়।  

 

যমজ তিন ভাই এ বছর ধুনট সরকারি এনইউ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। কিন্তু তাদের কলেজে ভর্তির টাকা ছিল না। এ বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি পড়ে তিন ভাইকে ভর্তির জন্য ৭হাজার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন ওসি।

 

মঙ্গলবার সকালে ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বাল এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন,  যমজ তিন ভাইয়ের মতো অনেক মেধাবী আছে যেটা জানা নেই। সেটি জানার মাধ্যম হচ্ছে সংবাদপত্র। তিন ভাইকে নিয়ে নিউজ করায় তাদের সম্পর্কে জানতে পারি। তাদের এইচএসসি পযর্ন্ত পড়ালেখার দায়িত্ব নিয়েছি। যদি তারা এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায় তাহলে তাদের পরবর্তী লেখাপড়ার খরচ বহন করা হবে।#

 

জানা গেছে, উপজেলার বথুয়াবাড়ির গ্রামের সংগ্রামী নারী আরজিনা বেগম। ২০০৪ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি জন্ম দেন যমজ তিন পুত্রসন্তান। এর আগে তার গর্ভে জন্ম নেয় এক ছেলে আর এক মেয়ে। ২০০৯ সালের ১২ অক্টোবর স্বামী গোলাম মোস্তফা মৃত্যুবরণ করেন। তখন যমজ তিন সন্তান কেবল শিশুশ্রেণির শিক্ষার্থী। গৃহকর্তার অবর্তমানে পরিবারটি হারিয়ে ফেলে সচ্ছলতা।

 

কিন্তু অর্ধশিক্ষিত মা আরজিনা বেগম এক হাতে অভাবের সংসার, অন্য হাতে পাঁচ ছেলেমেয়ের দায়িত্ব তুলে নিলেন নিজের কাঁধে। পাঁচ সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে স্বামীর যা কিছু সম্পদ ছিল, সব বন্ধক রাখতে হয়েছে অন্যের কাছে। ইতিমধ্যে আরজিনার কেটে যায় স্বামীহারা জীবনের প্রায় ১১টি বছর। বড় ছেলে মাহমুদ হাসান এইচএসসি পাস করে লেখাপড়ায় ইতি টেনেছে এবং মেয়ে মৌসুমি এ বছর স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

 

আরজিনা বেগম বলেন, ছেলেদের কলেজে ভর্তির জন্য কোনো টাকা ছিল না। খবর পেয়ে ওসি ডেকে নিয়ে ভর্তির জন্য সাত হাজার টাকা দিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে তিনি আরও সহযোগিতা করার কথা বলেছেন।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর