• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

যে দুই বাংলাদেশি বিল গেটসের অনুপ্রেরণা!

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০২০  

বিশ্বের সেরা ধনী বিল গেটসকে কে না চেনেন না? এই নামটাই তো একটা ব্র্যান্ড। তার জীবন কেটেছে নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ না করেই মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করা, বিশ্বের সেরা ধনী ব্যক্তির আসনে ওঠা এবং দানশীল হিসেবে খ্যাতিমান হয়েছেন তিনি। বিশ্বের বহু মানুষের নায়ক তিনি, অনুপ্রেরণার উৎসও বটে। আবার বিল গেটসের কাছে নায়ক এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছেন বিশ্বের নানা প্রান্তে। তেমন দুই বাংলাদেশি সমীর সাহা ও তার মেয়ে সেঁজুতি সাহা।

 

বিল গেটসের ব্যক্তিগত ব্লগ ‘গেটসনোটস’-এ গত মঙ্গলবার সমীর সাহা ও মেয়ে সেঁজুতি সাহাকে নিয়ে লিখেছেন তিনি। মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা লেখেন, বর্তমান বিশ্বে স্বাস্থ্য খাতের প্রভাবশালী দুই ব্যক্তি এ দুজন। শিশুমৃত্যু বেশি বিশ্বের এমন স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পদশালী দেশগুলোর স্বাস্থ্যসেবার ব্যবধান কমাতে কাজ করছেন বাবা-মেয়ে। এ ক্ষেত্রে তারা উপাত্ত, রোগ নির্ণয়ের সর্বাধুনিক পদ্ধতি এবং সংক্রামক ব্যাধির বিরুদ্ধে টিকাদানকে কাজে লাগাচ্ছেন। তাদের গবেষণা শুধু বাংলাদেশেই ব্যবহৃত হচ্ছে না, বরং একই রকম স্বাস্থ্যগত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও কাজে লাগানো হচ্ছে।

 

বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর অন্যতম কারণ নিউমোনিয়া। অপরদিকে মস্তিষ্কঝিল্লির প্রদাহজনিত রোগ হলো মেনিনজাইটিস। নিউমোনিয়া ও মেনিনজাইটিস রোগের জীবাণু হলো ‘নিউমোকক্কাস'। ঠিক কোন ধরনের নিউমোকক্কাস দ্বারা নিউমোনিয়া ও মেনিনজাইটিস হয়, দল গঠন করে ২০ বছরে তা খুঁজে বের করেন সমীর সাহা।

 

That is the inspiration of two Bangladeshi Bill Gates!

‘গেটসনোটস’-এ গত মঙ্গলবার সমীর সাহা ও মেয়ে সেঁজুতি সাহাকে নিয়ে লিখেছেন বিল গেটস

 

এসব ভ্যাকসিন যাতে বিনামূল্যে বাংলাদেশের শিশুরা পেতে পারে সে জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্টেও বক্তব্য দেন সমীর সাহা। একপর্যায়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ‘সর্বদলীয় নিউমোকক্কাস কমিটি’ হয়। এই সংস্থার কিছু সদস্য বাংলাদেশেও আসেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে এ দেশে নিউমোকক্কাস ভ্যাকসিনের যাত্রা শুরু হয়। তারই স্বীকৃতি ইউনেস্কোর কার্লোস জে. ফিনলে পুরস্কার।

 

বিল গেটস তার ব্লগে লেখেন, দরিদ্র দেশগুলোতে অনেক রহস্যজনক রোগে আক্রান্ত হয় নবজাতক ও শিশুরা। এসব রোগ শনাক্তের সহজ উপায় খুঁজে বের করার ওপর জোর দিয়েছেন সেঁজুতি। নিজেদের গবেষণার মাধ্যমে বাবা–মেয়ে যেসব তথ্য সংগ্রহ করেছেন, তা বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

তিনি লেখেন, বাংলাদেশ যদি রোগ প্রতিরোধে আরো বেশি কিছু করতে পারে, তবে প্রতিরোধ করা যায় এমন সব অসুস্থতার দিকে আরো মনোযোগ দেয়ার জন্য তার সম্পদ কাজে লাগাতে পারবে। সমীর ও সেঁজুতির কাজের কল্যাণে বাংলাদেশ এমন এক ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে, যেখানে সংক্রামক ব্যাধি কমে আসবে। আর চিকিৎসার জন্য খালি থাকবে হাসপাতালের শয্যা।

 

১৯৫৫ সালে নোয়াখালীতে জন্ম সমীর সাহার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৩ সালে মাইক্রোবায়োলজিতে স্নাতকোত্তর করেন তিনি। ১৯৮৩ সালে যোগ দেন ঢাকা শিশু হাসপাতালে। এরপরই ১৯৮৯ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন ভারতের বেনারসে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স থেকে। ড. সমীর বর্তমানে রাজধানীর ঢাকা শিশু হাসপাতালের অণুজীব বিভাগের প্রধান। তার মেয়ে সেঁজুতি সাহা টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মলিকুলার বায়োলজিতে পিএইচডি করেছেন।

 

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর