• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

রোজা থাকাবস্থায় ইনজেকশন নেয়ার বিধান সম্পর্কে জানুন

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২০  

রোজার বিধান নাজিলের আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা অক্ষম বা সমস্যার সম্মুখীন মানুষের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। 

 

এ বিধানে রয়েছে সহজের ঘোষণা। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা কোরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন-

شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلاَ يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُواْ الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ اللّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ

‘রমজান মাসই হলো সে মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ এবং ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোজা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তায়ালার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।’ (সূরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৫)।

 

আল্লাহ বান্দার জন্য তার বিধান পালনে কঠোর নন বলে এ আয়াতে ঘোষণা দিয়েছেন। রোজা যেহেতু ফরজ বিধান তাই এই রোজা সঠিকভাবে পালন করতে হলে জানতে হবে কোন অবস্থায় রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়, আবার কোন অবস্থায় রোজা ভঙ্গ হয় না।

 

রমজান আসলে প্রায়ই একটা সমস্যা সামনে এসে যায়। যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য করণীয় কী? তারা কি ইনসুলিন নিতে পারবে? কিংবা যাদের ইনজেকশন স্যালাইন, টিকা নেয়া জরুরি, তারা রমজানের রোজা রেখে এসব চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবে কি? এ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

 

নিয়মিত রোগের কারণে ইনসুলিন, ইনজেকশন, টিকা কিংবা স্যালাইন গ্রহণে ইসলামি আইন শাস্ত্রের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত হলো- যেকোনো ধরনের ইনজেকশন বা টিকা নিয়ে রোজা নষ্ট হবে না। চাই তা শিরায় দেয়া হোক কিংবা চামড়া, মাংসে, বা পেটে নেয়া হোক।

 

যেমন কুকুরে কামড়ালে পেটে ইনজেকশন নিতে হয়। এসব অবস্থায় অধিকাংশ আলেমদের মতে এটা সুস্পষ্ট যে, এতে তাদের রোজা ভাঙ্গবে না। ইনসুলিন ও স্যালাইন গ্রহণেরও একই বিধান।

 

বিশ্ববিখ্যাত ইসলামিক স্কলারদের গবেষণায় ফতোয়া, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণার সম্বন্বয়ে এটা প্রমাণিত যে, ইনসুলিন, ইনজেকশন, টিকা কিংবা অসুস্থতায় স্যালাইন গ্রহণে ভাঙ্গবে না রোজা।

 

কারণ ইনজেকশন দ্বারা যেসব ওষুধ শরীরে প্রবেশ করনো হয়, তা রোজা ভেঙ্গে যাওয়ার জন্য যে শর্ত রয়েছে তার মধ্যে পড়ে না। রোজা ভেঙ্গে যাওয়ার জন্য যে গ্রহণযোগ্য রাস্তা তথা খাদ্যনালী বা মস্তিষ্কের রাস্তা পথ রয়েছে তা দিয়ে ইনজেকশন, ইনসুলিন, স্যালাইন কিংবা টিকা ইত্যাদি প্রবেশ করানো হয় না।

 

এ ওষুধগুলো শরীরের ভেতরে প্রবেশ করে তা খাদ্যনালী দিয়ে পেটে যায় না। যদিও পেটে যায় তা আবার সেটা খাদ্যনালী দিয়ে পেটে যায় না, বরং অন্য রগ দিয়ে তা ঢুকে থাকে। তাই ইনজেকশন জাতীয় চিকিৎসাগ্রহণের দ্বারা রোজা ভাঙ্গবে না।

 

তবে যারা রোজার কষ্ট লাগবের উদ্দেশ্যে স্যালাইন গ্রহণ করবে তাদের রোজা মাকরূহ হয়ে যাবে। সুতরাং এ মানসিকতা থেকে বিরত থাকতে হবে।

 

সুতরাং ডায়াবেটিস কিংবা ইনজেকশন নিতে হয় বলে রোজা রাখা যাবে না এ অজুহাতে রোজা থেকে বিরত থাকার কোনো সুযোগ নেই।

 

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে রোজার যথাযথ হক আদায় করে তা পালনের তাওফিক দান করুন।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর