• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দান উৎসব

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০২৩  

রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে দুই দিনব্যাপী বৌদ্ধ ধর্মাবলন্বীদের ৪৮তম দানোত্তম কঠিন চীবর দান শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বেইন ঘর এবং চরকায় সুতা কেটে উদ্বোধন করেন নারী উদ্যোক্তা মঞ্জুলিকা চাকমা। এ সময় রাঙ্গামাটির রাজবন বিহার পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান, অমীয় কান্তি খীসাসহ পরিষদের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বেইন ঘরে পঞ্চশীল প্রদান করেন রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। এ সময় পূণ্যার্থীদের সাধু সাধু ধ্বনিতে মুখরিত হয় পুরো রাজবন বিহার প্রাঙ্গণ। শুক্রবার সকালে ভিক্ষু সংঘের কাছে এই চীবর দান করা হবে। এ উৎসবকে ঘিরে বসেছে গ্রামীণ মেলা। জানা গেছে, রাজবন বিহারের বিশাল এলাকা জুড়ে প্রায় ১৯৯ টি বেইন স্থাপন করা হয়েছে। এতে শতাধিক নারী-পুরুষ এই চীবর প্রস্তুত কাজে অংশ গ্রহণ করে। উৎসবকে ঘিরে যথাযথ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় গেরুয়া কাপড়কে বলা হয় চীবর। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে চরকায় সুতা কেটে, সুতা রং করে আগুনে শুকিয়ে সেই সুতায় তাঁতে কাপড় বুনে চীবর তৈরি করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয় বলে এর নাম কঠিন চীবর দান। পার্বত্য এলাকার বৌদ্ধরা এ উৎসব পালিত হয় প্রাচীন নিয়মে। প্রাচীন নিয়ম মতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীবর তৈরি করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের উৎসর্গ করা হয়। বৌদ্ধ শাস্ত্র মতে, দীর্ঘ আড়াই হাজার বছর পূর্বে গৌতম বুদ্ধের অনুসারীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীবর তৈরির প্রচলন করেছিলেন। প্রতি বছর আষাড়ী পূর্ণিমা থেকে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাবাস শেষে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের চীবর দান করতে হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সাল থেকে বুদ্ধের অনুসারীদের প্রবর্তিত নিয়মে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে ৪৮ বছর ধরে কঠিন চীবর দান উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মতে, জগতে যত প্রকার দান রয়েছে তার মধ্যে এ চীবর দানই হচ্ছে সর্বোত্তম দান। ২৪ ঘণ্টার পরিশ্রমে তৈরি করা এ চীবর চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় পার্বত্য ধর্মীয় গুরু বনভান্তের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শুক্রবার ভিক্ষু সংঘের কাছে এ চীবর উৎসর্গ করবেন। রাতে রাজবন বিহারে ফানুষ উড়িয়ে শেষ হবে এ কঠিন চীবর দান উৎসব।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর