নারী বিশ্বকাপ ফুটবলের পর্দা উঠছে আজ

অবশেষে দোয়ারে উপস্থিত কাঙ্খিত ক্ষণ। আজ থেকে নিউজল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় যৌথভাবে শুরু হচ্ছে নারী বিশ্বকাপ ফুটবল। এবারের নবম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ে। অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় আজ দুপুর ১টায়। ‘বি’ গ্রুপের আরেক ম্যাচে বিকেল ৪টায় সিডনির স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়াতে মুখোমুখি হবে আরেক আয়োজক অস্ট্রেলিয়া ও আয়ারল্যান্ড। এবারই প্রথমবারের মতো পুরুষ বিশ্বকাপের মতো ৩২টি দল নিয়ে আয়োজিত হচ্ছে নারী ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর। অবশ্য পুরুষ বিশ্বকাপের পরবর্তী আসর হবে ৪৮টি দল নিয়ে। নারী ফুটবলকে এগিয়ে নেয়াই এবারের বিশ্বকাপে সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে।

অন্যান্য আসরের মতো এবারও বিশ্বকাপের হট ফেভারিট যুক্তরাষ্ট্র। তাদের সামনে প্রথমবারের মতো টানা তিনবার অর্থাৎ হ্যাটট্রিক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার হাতছানি। এক্ষেত্রে মার্কিন মেয়েদের বাধা হতে পারে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপিয়ান কয়েকটি দল। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের পাশাপাশি ফেভারিটের তালিকায় আরও আছে স্পেন, জার্মানি, সুইডেন ও গতবারের রানার্সআপ হল্যান্ড। কাতারে অনুষ্ঠিত ২০২২ পুরুষ বিশ্বকাপে প্রাইজমানি ছিল ৪৪০ মিলিয়ন ডলার। সেই তুলনায় নারীদের আসরের প্রাইজমানি এখনো অনেক কম। ১৯৯১ সাল থেকে শুরু হওয়া নারী বিশ্বকাপে এত দলের অংশগ্রহণ মেয়েদের ফুটবলে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এশিয়ার দেশ চীনে অনুষ্ঠিত প্রথম আসরে ১২টি দল অংশ নিয়েছিল। ২০১১ সালে মাত্র ১৬টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল।

চার বছর আগে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আসরে খেলেছিল ২৪টি দল। সেবার সবাইকে টপকে শিরোপা ঘরে তুলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এবার ৩২ দলের আসরেও হট ফেভারিট চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন মার্কিন মেয়েরা। চেলসির তারকা ফরোয়ার্ড স্যাম কারের নেতৃত্বে ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে অস্ট্রেলিয়াও এবার ফেভারিটের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। আগামী ২০ আগস্ট হবে সিডনিতে হবে ফাইনাল মহারণ। এবারের টুর্নামেন্টে ৩২টি দল আটটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। প্রতিটি দল গ্রুপ পর্বে তিনটি ম্যাচ খেলবে। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল নকআউট রাউন্ড অর্থাৎ শেষ ষোলোতে নাম লেখাবে। এরপর কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল পেরিয়ে হবে ফাইনাল মহারণ। 
প্রতি চার বছর পর পর আয়োজিত নারীদের এই বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্র সর্বোচ্চ চারবার ১৯৯১, ১৯৯৯, ২০১৫ ও ২০১৯ সালে শিরোপা জয় করেছে। এছাড়া জার্মানি দুইবার, নরওয়ে ও জাপান একবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০১৯ সালে সবশেষ আসরের ফাইনালে হল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে চীন (১৯৯১, ২০০৭) ও যুক্তরাষ্ট্রে (১৯৯৯, ২০০৩) দুইবার করে হয়েছে বিশ্বকাপ। এছাড়া সুইডেন (১৯৯৫), জার্মানি (২০০৭), কানাডা (২০১৫) ও ফ্রান্স (২০১৯) একবার করে নারী বিশ্বকাপের আয়োজক ছিল। এবারই বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুটি দেশে যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজিত হচ্ছে। দুই দেশের ৯টি শহরের ১০ ভেন্যুতে ম্যাচগুলো হবে। ভেন্যুগুলো হলো  অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, ব্রিসবেন, মেলবোর্ন, পার্থ ও এডিলেড এবং নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড, ওয়েলিংটন, ডানেডিন ও হ্যামিল্টন। 
শুধু অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সংখ্যার দিক থেকেই এবারের বিশ্বকাপ সর্ববৃহৎ নয়। এবারের প্রাইজমানিও অন্য সব আসরের তুলনায় কয়েকগুণ বাড়িয়েছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। সবশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপের তুলনায় এর পরিমান প্রায় তিনগুণ বেশি। সবমিলিয়ে ১১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অংশগ্রহণকারী ৩২টি দেশের মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে। ২০১৯ সালে এর পরিমাণ ছিল মাত্র ৩০ মিলিয়ন ডলার। প্রাইজমানির অংশ ব্যক্তিগত খেলোয়াড়  ও অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে প্রদান করা হবে।