• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

মায়ের পর ছেলের ইন্তেকাল

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০২০  

ভারতের সিনেমা ইন্ডাষ্ট্রির বলিউডের জনপ্রিয় তারকা ইরফান খান (৫৪) মারা গেছেন।

আজ ২৯ এপ্রিল বুধবার সকালে তিনি মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধিরুবাই আম্বানি হাসপাতালে মারা যান। সেখানেই কোলন ইনফেকশন সমস্যা নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন তিনি। হিন্দুস্তান টাইমসের খবর

 

তার মৃত্যুর সময় হাসপাতালে ইরফান খানের সঙ্গে তার স্ত্রী সুতপা ও দুই সন্তান ছিলেন।

 

এর আগে ২০১৮ সালে ইরফান খান নিউরোনডকট্রিন টিউমারে আক্রান্ত হন। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ভারতের জয়পুরে নিজের বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ইরফান খানের মা সাইদা বেগম। লকডাউনের কারণে মায়ের শেষবিদায়ে অংশগ্রহণ করা হয়নি তার।

 

জানা যায়, লকডাউনের মধ্যে মঙ্গলবার আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন ইরফান খান। সঙ্গে সঙ্গে তাকে মুম্বাইয়ের ধীরুভাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউতে চলছিল তার চিকিৎসা। তবে চিকিৎসার মাঝেই ছড়িয়ে পড়ে পিকু অভিনেতার মৃত্যুর গুঞ্জন। যদিও গুঞ্জনকে নস্যাত করে দেন বলিউড অভিনেতার মুখপাত্র। 

 

তিনি স্পষ্ট জানান, কোলন ইনফেকশন নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ইরফানকে। তার শরীরের দিকে নজর রাখছেন চিকিৎসকরা। অসুস্থতার মধ্যেও অসম্ভব মনের জোর ছিলো অভিনেতার। ফলে শিগগিরই তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আশা প্রকাশ করেন অভিনেতার মুখপাত্র। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লড়াই থেমে যায়। প্রয়াত হন বলিউডের এই বর্ষীয়ান অভিনেতা।

 

ইরফান খান ২০১২ সালে মার্কিন চলচ্চিত্র ‘অ্যামেজিং স্পাইডার ম্যান‘ ছবিতে অভিনয় করে প্রশংসা অর্জন করেন। এছাড়া তিনি হলিউডের সিনেমা ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড এ অভিনয় করেন’। তিনি বলিউড, ব্রিটিশ ভারতীয়, হলিউড এবং তেলেগু ছবিতেও অভিনয় করেছেন।

 

ইরফান খান ১৯৬৭ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতের জয়পুরে একটি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৪ সালে নয়া দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা (এনএসডি) থেকে স্কলারশিপের অর্জন করেন বর্ষীয়ান এ অভিনেতা। 

 

নিজের অভিনয়ের গুণে ২০১১ সালে তিনি পদ্মশ্রী পুরস্কার পান। এছাড়া ২০১২ সালে ‘পান সিং তমর’ এর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। এছাড়া রয়েছে লাইফ ইন এ মেট্রো, হাসিল, ‘পিকু’, ‘দ্য লাইফ অব পাই’ সহ আরো অনেক সিনেমা।

 

২০১৮ সালে প্রথমবার ধরা পড়ে ইরফান খানের নিউরোঅন্ডোক্রাইন টিউমার। অসুস্থতা ধরা পড়ার পরই তাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চলছিল তার চিকিৎসা। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি এবং পরে সেপ্টেম্বরে লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন ইরফান। এরপরই মুক্তি পায় তার ছবি ‘আংরেজি মিডিয়াম’। 

 

তবে আংরেজি মিডিয়াম মুক্তির পর আর স্থায়ী হল না তার বলিউডের দৌড়। লকডাউনের মধ্যেই চলে গেলেন বলিউডের এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। থেমে গেলো জীবনের সব লড়াই। 

 

শেষ ইচ্ছে পূরণ হলো না ইরফান খানের

বলিউডের শক্তিমান এই অভিনেতার শেষ সময়ের ইচ্ছে ছিল- মায়ের মায়াবিণী মুখের হাসি অন্তত একটি বার দেখার। কিন্তু না, সেই ইচ্ছে পূরণ হলো না।

 

বুধবার সকালে তিনি মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধিরুবাই আম্বানি হাসপাতালে মারা যান। সেখানেই কোলন ইনফেকশন সমস্যা নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন তিনি। এর আগেই মারা যান তার মা সাইদা বেগম (৯৫)। শনিবার সকালে জয়পুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

 

জানা গেছে, অসুস্থতার জন্যই মায়ের শেষকৃত্যে যেতে পারেননি অভিনেতা। ব্রেনে টিউমার নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে লড়াই করেছেন তিনি। সুস্থ হয়ে ‘আংরেজি মিডিয়াম’ সিনেমার মধ্যে দিয়ে কামব্যাকও করেছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি হন কোলন ইনফেকশন নিয়ে। মাকে না দেখার আক্ষেপ হাসপাতালের বেডে শুয়েও করেছেন ইরফান।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর