• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

কেঁচো সারে ঝুঁকছেন চাষিরা, স্বাবলম্বী নারীরা

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ৪ জানুয়ারি ২০২৩  

রাসায়নিক সার ছেড়ে কেঁচো সারে ঝুঁকছেন নওগাঁর রাণীনগরের চাষিরা। কৃষি অফিসের সহায়তায় বাণিজ্যিকভাবে এ সার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা। তবে কেঁচো সার উৎপাদন করছে উপজেলার কুজাইল মহিলা সিআইজি (সবজি) সমবায় সমিতি।
কুজাইল মহিলা সিআইজি (সবজি) সমবায় সমিতির সভাপতি সানজিদা বেগম বলেন, এক সময় আমার সংসারে অভাব ছিল। ২০১৮ সালে উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় আশপাশের কয়েকজন নারীদের নিয়ে সমবায় সমিতি গঠন করি। প্রথমে তিনটি রিংয়ে থাই কেঁচো দিয়ে উৎপাদন শুরু করি ভার্মি কম্পোস্ট সার। উৎপাদিত সার দিয়ে পরিত্যক্ত জমিতে সবজি চাষ করি আমি ও আশপাশের নারীরা। বিষমুক্ত সবজি নিজেদের চাহিদা পূরণের পর বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হই।

তিনি বলেন, এ মুহূর্তে কৃষি অফিসের সহায়তায় ২০টি রিংয়ে বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো সার উৎপাদন করছি। বর্তমানে আমাদের উৎপাদিত ভার্মি কম্পোস্টের সুনাম আশপাশের এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। নিজেদের চাহিদা পূরণ করে প্রতি মাসে এ সার বিক্রি করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হচ্ছে। এছাড়া কেঁচো সার ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছেন দূরদূরান্তের কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে রাসায়নিক সার আর কীটনাশকের যত্রতত্র ব্যবহারে মাটির জীবনবায়ু প্রায় ওষ্ঠাগত। এতে আমাদের চাষাবাদে জৈব সার, কম্পোস্ট সারের বিকল্প নেই। বিভিন্ন ধরনের জৈব বস্তুতে (উদ্ভিদ ও প্রাণিজ) বিশেষ প্রজাতির কেঁচোর পাচন ক্রিয়ার ফলে জমিতে প্রয়োগের উপযোগী যে জৈব সার পাওয়া যায় তাই ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার।

তিনি বলেন, উপযুক্ত পরিবেশে ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে প্রায় ৪০ দিন সময় লাগে। ভার্মি কম্পোস্ট মাটির নিরাপদ স্বাস্থ্যে ভীষণ জরুরি। কেঁচো কম্পোস্টে অন্যান্য কম্পোস্টের চেয়ে প্রায় সাত থেকে ১০ ভাগ পুষ্টিমান বেশি থাকে। প্রথমদিকে কম্পোস্ট তৈরি হতে সময় বেশি লাগে (৬০-৭০ দিন), পরবর্তীতে মাত্র ৪০ দিনেই কম্পোস্ট তৈরি হয়।

কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, ধান, গম, পাটসহ বিভিন্ন শাক-সবজি, ফলবাগানে এ সার ব্যবহার করে ভালো ফলন পাওয়া যায়। এর ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ে, মাটিতে বায়ু চলাচল বাড়ে। পানির ধারণক্ষমতা বাড়ে ও বিষাক্ততা দূরীভূত হয়। এছাড়া মাছ চাষের ক্ষেত্রে কেঁচো সার প্রয়োগ করে কম খরচে অতি দ্রুত সুস্বাদু মাছ উৎপাদন করে অধিক মুনাফা অর্জন সম্ভব হয়।

তিনি বলেন, ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনে সানজিদা ও তার দল এক অনন্য দৃষ্টান্তর স্থাপন করেছে। দীর্ঘস্থায়ীভাবে জমির উর্বরতা শক্তি বাড়াতে ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কম্পোস্ট সারের কোনো বিকল্প নেই। তাই আমরা কৃষকদের এ সার উৎপাদন ও ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছি।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর