• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক জামালপুর

মামা-ভাগিনার ব্ল্যাংক চেকের ফাঁদ, কোটি টাকা হাতানোর অভিযোগ

দৈনিক জামালপুর

প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২৪  

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী মামা-ভাগিনার ব্ল্যাংক চেকের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন উপজেলার ১০টি পরিবারের প্রায় ১৫ জন। তাদের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। প্রতিকার পেতে থানায় অভিযোগ এবং আদালতে চেক জালিয়াতি মামলা করে অভিযুক্তদের লিগ্যাল নোটিশে পাঠানো হয়েছে। পুলিশে অভিযোগ, ভুক্তভোগী পরিবার ও লিগ্যাল নোটিশ থেকে জানা যায়, মুক্তাগাছা উপজেলার মানকোন ইউনিয়নের বোর্ডঘর বাজার এলাকায় স্থানীয় চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের চাচাতো ভাই সাইদুল ইসলাম ও তার ভাগিনা ওহেদিদুজ্জামান মামুন (২৮) ওরফে হৃদয় মিলে ইলেকট্রনিক্সের ব্যবসা করেন। এছাড়া তাদের বিভিন্ন মোবাইল এজেন্টের ব্যবসাও রয়েছে। ব্যবসা পরিচালনার নামে ভাগিনা মামুন ব্ল্যাংক চেক ও বিকাশ লেনদেনের ফাঁদে ফেলে স্থানীয় ১০টি পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখন পাওনা টাকা ফেরত চাইতে গেলে নানা টালবাহানা শুরু করেছেন তারা। জানা যায়, উপজেলার রূদ্রপুর এলাকায় জিয়াউর রহমান রানার থেকে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তানভীর রহমানের ৮ লাখ ১০ হাজার, রাকিবুল হাসানের ১৪ লাখ ৭৮ হাজার ও মিজানুর রহমানের ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা, শিবপুরের শফিকুল ইসলামের ৮ লাখ ৩৫ হাজার, চর আধপাখিয়ার ইমন খানের ৩ লাখ ১২ হাজার, জুয়েলারি ব্যবসায়ী রমজান আলীর ৬ লাখ ৫০ হাজার, মফিজুল ইসলামের ২ লাখ এবং বিকাশ এজেন্ট মোকলেছুর রহমানের ৯ লাখ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন মামুন। বিষয়টি জানাজানি হলে পাওনাদাররা একসঙ্গে টাকা ফেরত পেতে মামা-ভাগিনার ইলেকট্রনিক্স প্রতিষ্ঠান সারা ইলেকট্রিক ও প্লাস্টিকে যান। সমাধান না পেয়ে প্রতিষ্ঠানে তালা মারেন। পরবর্তীতে সমাধানে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম উভয়পক্ষের নিয়ে সালিশে বসেন। এতে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে ভাগিনা মামুন; যার ভিডিও চিত্র যুগান্তরের হাতে রয়েছে। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও পাওনাদারদের টাকা ফেরত না দিয়ে হঠাৎ এলাকা ছাড়া হন ওহেদিদুজ্জামান মামুন। এতে বিপদে পড়েন ভুক্তভোগীরা। তাদের অভিযোগ চেয়ারম্যানের আত্মীয় ও এলাকায় অনেক শক্তিশালী হওয়ায় টাকা ফেরত দিতে টালবাহানা করছে। এই জালিয়াতি চক্রের ন্যায্য বিচার দাবিও করেন তারা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এছাড়া তানভীর রহমান লিমন ময়মনসিংহ জজকোর্টের মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। ভুক্তভোগী রমজান আলী ও তানভীর রহমান লিমন বলেন, প্রায় টাকা দেওয়া-নেওয়া করতেন। অফারে ইলেকট্রনিক্স পণ্য কেনার কথা বলে আমাদের পরিবারের ৩ জনের থেকে ১৭ লাখ টাকা এবং এলাকার ১৫ জনের থেকে প্রায় কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে মামুন। তার মামা সব কিছুই জানেন কিন্তু অস্বীকার করছেন। বিষয়টি জানতে প্রতারক ওহেদিদুজ্জামান মামুনের মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। সারা ইলেকট্রিক অ্যান্ড প্লাস্টিকের প্রোপাইটার সাইদুল ইসলামকে মোবাইলে কল দেওয়া হলে তিনি কলটি কেটে দেন। ইউপি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম জানান, ছোটবেলা থেকে ভাগিনা মামুন সাইদুলের কাছে থেকে লেখাপড়া ও দোকান চালাতেন কথা সত্য। সালিশ দরবারে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে ভাগিনা মামুন। স্থানীয়ভাবে সমাধান করতে না পেরে তাদেরকে আইনের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে এবং তাদের যেকোনো সহযোগিতা করা হবে। এ প্রসঙ্গে মুক্তাগাছা থানার ওসি ফারুক আহমেদ জানান, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দৈনিক জামালপুর
দৈনিক জামালপুর